The News Nest: মুক্তি পেয়েছে অনুষ্কা শর্মার প্রযোজিত ছবি ‘বুলবুল’। তাঁর এই ছবির প্রযোজনার সঙ্গী এবার নায়িকার ভাই কারনেশ শর্মাও। ছবি মুক্তির পর থেকেই বেশ ভালো সাড়া পড়েছে দর্শকমহলে।
অনুষ্কার নিজস্ব প্রযোজনার কাজ নিয়ে বরাবরই বেশ আগ্রহী তাঁর স্বামী ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এবারেও ছবি মুক্তির পর পরই নিজের মনের কথা শেয়ার করেছেন বিরাট। লকডাউনের বাজারে এমনিতেই এখন মাঠে নামার ব্যাপার নেই। তাই বাড়ি বসে ছবি মুক্তির পরেই তা দেখে ফেলেছেন বিরাট। ছবি দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্যুইট করেছেন নিজের কেমন লেগেছে সেকথা।
ট্যুইটারে বিরাট লিখেছেন, ‘গল্প বলার কায়দাটা দারুণ লেগেছে। ভাই বোন একেবারে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। প্লিজ কেউ মিস করবেন না।’ এরই সঙ্গে দিয়েছেন লাল হৃদয়ের ইমোজি। এর আগেও অনুষ্কার প্রযোজনার পাতাললোক দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর অভিজ্ঞতা জানিয়েছিলেন বিরাট। এবারেও দেরি করেননি। তার আগেও অনুষ্কার প্রযোজনার এনএইচ টেন, পরী সব ছবিই বিরাট দেখেছেন এবং নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন দর্শকের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: ‘সুশান্ত ছিলেন বলেই অভিনয় শিখতে পেরেছি’, অকপট সারা আলি খান
কেমন ছবি ‘বুলবুল’?
১৮৮১-এর বাংলাকে প্রেক্ষাপট তৈরি করে বাল্যবিবাহ, জমিদার প্রথা ও রাজবাড়ির অন্দরমহলের গল্পকে সামনে নিয়ে আসলেন ছবির পরিচালক অনভিতা দত্ত ৷ সহজ কথায় ‘পুরুষতান্ত্রিক’ সমাজের গল্প৷ সেই সমাজে যে গল্প তৈরি হত জমিদার বাড়ির অন্দরে ও সেখানেই শেষ হয়ে যেত ৷ আর পুরনো বাড়ির দেওয়ালে ছাপ পড়ে থাকত বহু আতর্নাদ ও অত্যাচারের ৷ পরিচালক সেই সব কটা বিষয়কেই এক সুতোতে বাঁধলেন ৷ আর সেই সুতোর ওঠা-নামার দায়িত্ব দিলেন ‘ডাইনি’র হাতে৷ যে ডাইনি রাত হলেই মানুষের ঘাড়ে কামড় দিয়ে রক্ত চুষে নেয় ৷ আর পড়ে থাকে ‘অত্যাচারী’র নিথর দেহ ! অর্থাৎ পড়ে থাকে রক্তহীন পুরুষতান্ত্রিক এক সমাজ !
ছবি শুরু হয়, ছোট্ট বুলবুলের বিয়ে থেকেই ৷ যে বুলবুল (তৃপ্তি দিমরি) বোঝার আগেই হয়ে যায় এক জমিদার বাড়ির বড় গিন্নি ৷ যে জমিদার বাড়িতে রয়েছেন তাঁর স্বামী বড় ঠাকুর (রাহুল বসু), তথাকতিত ‘পাগল’ মেজো ঠাকুর মহেন্দ্র (দ্বৈত চরিত্রে রাহুল বসু), মহেন্দ্রের স্ত্রী বিনোদিনী (পাওলি দাম) ও বুলবুলের দেওর সত্য (অবিনাশ তিওয়ারি) ৷ স্বামী, দেওর, ভাসুর এবং জা বিনোদিনীকেই নিয়ে গল্প এগিয়ে চলে বুলবুলের ৷ যার মধ্যে ঢুকে পড়ে দেওর সত্য-র প্রতি প্রেম, বিনোদিনীর অর্থ-যৌন লিপ্সা ৷ আর সঙ্গে ছোট্টবেলায় শোনা এক ডাইনির গল্প, যে কিনা ঘাড় কামড়ে রক্ত চুষে নিত !
দেওরের সঙ্গে ‘প্রেম’ মেনে নিতে পারে না বুলবুলের স্বামী ৷ বিনোদিনীর কান ভাঙানোয় বুলবুলকে ক্ষত-বিক্ষত হতে হয় ‘জমিদার স্বামী’র হাতে ৷ সুযোগ পেয়ে পাগল ভাসুর ‘ধর্ষণ’ও করে বুলবুলকে ৷ অন্যদিকে গ্রামের ডাক্তারের (পরমব্রত) সঙ্গে বন্ধুত্বকেও ‘খারাপ’ চোখে দেখতে শুরু করে বুলবুলের প্রেম ‘সত্য’ ৷ সব ‘পুরুষ’কেই যেন একই সীমারেখায় দেখতে পায় বুলবুল ৷ অত্যাচারের রাতে তার ভিতরই জেগে ওঠে ‘ডাইনি’ ! ব্যস, এখান থেকেই শুরু বদলার গল্প ৷ প্রতিবাদের গল্প ৷ ছোটবেলার শোনা ডাইনি-র গল্পকে সঙ্গে নিয়ে একের পর এক ‘বদলা’ নিতে শুরু করে বুলবুল ৷
বুলবুল এমনই এক ছবি যেখানে প্রথম ফ্রেম থেকে শুরু করে, শেষ ফ্রেম পর্যন্ত আপনার চোখের পলক পড়তে দেবে না ৷ প্রত্যেক দৃশ্যেই দারুণ বুনোট৷ যা ধরে ধরে এগোতে থাকে ‘বুলবুল’ ৷ আর শেষ পর্যায়ে গিয়ে ভয়ের গল্প হঠাৎ করে বদলে যায় এক নারীর প্রতিবাদের গল্পে ৷
অভিনয়ের দিক থেকে এই ছবির প্রত্যেকেই অসাধারণ ৷ ‘লয়লা-মজনু’র তৃপ্তি দিমরি এই ছবিতে পরিণত ৷ তাঁর প্রত্যেকটি অভিব্যক্তিতেই গল্প আরও ভালো রূপ পয়েছে ৷ অবিনাশও তাই ৷ রাহুল বসুও নিজের জায়গায় একেবারে পারফেক্ট ৷ খলনায়িকার চরিত্রে পাওলি দাম নজর কেড়েছেন আলাদা করে ৷ অল্প সংলাপে শুধু চাউনি দিয়েও যে অভিনয় করা যায় তা তিনি দেখিয়েছেন ৷ পরমব্রতও বেশ স্ট্রং ৷ আসলে, প্রত্যেককেই এই ছবির চিত্রনাট্যকে আঁকড়ে ধরেছিলেন ৷ আর তাই হয়তো ছবি একবারের জন্যও পিছলে যায়নি ৷ বরং দর্শককে ধরে রাখার জন্য সব রসদই ঠিকঠাক রেখেছেন পরিচালক অনভিতা৷
আরও পড়ুন: কর্মফলেই আপনার স্বামীর মাথায় চুল নেই! সোনমকে বেনজির আক্রমণ পায়েলের