ওয়েব ডেস্ক: বাড়িতে শুরু হয়ে গিয়েছিল বিয়ের প্রস্তুতি। লাদাখ থেকে ফিরেই বিয়ে করার কথা ছিল জওয়ান রাজেশ ওরাওয়ের। কিন্তু আচমকাই দুঃসংবাদ। চিন-ভারতের যুদ্ধে সীমান্তে শহিদ হয়েছেন রাজেশ। মুহূর্তে বিয়ে বাড়ির জৌলুস ফিকে। গোটা বাড়িতে শোকের আবহ। ছেলের শোকে মূর্ছা যাচ্ছেন মা। চোখে জল স্থানীয়দেরও।
বীরভূমের বেলগড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রাজেও ওরাওঁ। ছোট থেকেই বেশ সাহসী সে। শেওড়াকুড়ি বংশীধর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। সে প্রায় বছর তিনেক আগের ঘটনা। গ্রামের ছেলে সেনাবাহিনীতে যাওয়ায় গর্বে বুক ভরে উঠেছিল মানুষের। তার উপর রাজেশ ছিলেন গ্রামের প্রথম যুবক যিনি সেনায় যোগ দিয়েছিলেন। ফলে গর্ব ছিল অনেকগুণ বেশি।
আরও পড়ুন : লাফ দিয়ে ৫ গুণ দৈনিক বাড়ল করোনা মৃত্যু, একদিনে মৃত ২,০০৩ জন
বাবা সুভাষ ওরাওঁ পেশায় দিনমজুর। মা মমতা গৃহবধূ। রাজেশের সংসারে বাবা ও মা ছাড়াও রয়েছেন দুই বোন। রাজেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর সংসারে হাল ফেরে। তিন বছরে অনেকটাই স্বচ্ছ্বলতা ফেরে। তাই এ বছর ছেলের বিয়ে দিবেন বলে স্থির করেন বাবা-মা।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজেশ ওরাওঁ-র মৃত্যুর খবর সেনার তরফে ফোন করে জানানো হয় । ২০১৫ সালে ভারতীয় সৈন্য বিভাগে কাজে যোগদান করেছিল রাজেশ । তারপর থেকে লাদাখে ভারত- চিন সীমান্তেই কর্তব্যরত ছিলেন ৷ গতকাল তার পরিবারের কাছে তার মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছয় । দেশের জন্য প্রান দিয়েছে ছেলে , গর্বিত গোটা।
বুধবার সকাল থেকেই রাজেশের বাড়ির সামনে ভিড় জমিয়েছেন গ্রামবাসীরা । গ্রামের বাসিন্দারা বিশ্বাসই করতে পারছেন না রাজেশ আর নেই। সরস্বতী পুজোর সময় বাড়িতে ফিরেছিলেন । বিয়ের সম্বন্ধ দেখা চলছিল । রাজেশ এসে ফাইনাল করলেই সেই বিয়ের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হত । কিন্তু গতকাল হঠাৎ করে আর্মি অফিস থেকে আসা ফোনে সব শেষ । রাজেশ শর্মা , মমতা ওরাং ও তাঁর বোন শকুক্তলা ওরাংয়ের প্রতিক্রিয়া , “দাদার-সহ অন্যান্য জওয়ানদের মৃত্যুর যোগ্য জবাব দিক ভারত ।”
আরও পড়ুন : পড়শিদের সঙ্গে সম্পর্কে চিড়, অর্থনীতি বেহাল, ‘অল ইজ ওয়েল’ মন্ত্র জপতে বলছে মোদী সরকার!