কলকাতা: লকডাউন চলাকালীন ঘরে ফিরতে মরিয়া শ্রমিকদের অনেকেরই ভরসা হয়েছে সাইকেল। দু’চাকার বাহন আর মনের, শরীরের জোরকে সম্বল করে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে চলে গিয়েছেন অজস্র মানুষ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বীরভূমের বাসিন্দাও। আশপাশের রাজ্য বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে একাধিক শ্রমিক সাইকেলে ফিরেছেন নিজের জেলায়। অনেকে যেটুকু সম্বল ছিল, তা বেচে সাইকেল কিনে পাড়ি দিয়েছেন একশো কিলোমিটারেরও বেশি পথ।
দেশজুড়ে এখন ধীরে ধীরে লকডাউন তোলার কথা ভাবা হচ্ছে। সেই মতো পদক্ষেপ করছে রাজ্য, কেন্দ্র দুই সরকারই। ধীরে ধীরে খোলা হচ্ছে অফিস-কাছারি। ভিড় বাড়ছে রাস্তায়। করোনাভাইরাসের কোনও প্রতিষেধক অবশ্য এখনও বেরোয়নি। অথচ অনন্তকাল এই বন্দিদশা চলতেও পারে না অর্থনীতির স্বার্থেই। রোজকার কাজে রাস্তায় বেরোলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বারবার বলা হচ্ছে সরকারের তরফে। বলছেন চিকিৎসকেরাও। কিন্তু গণপরিবহণ যেখানে প্রয়োজনের তুলনায় এমনিতেই অপ্রতুল সেখানে এই দূরত্ব বজায় রাখা আদৌ সম্ভব কি না সেই প্রশ্ন উঠছে। আর অফিস খুললেও গণপরিবহণ স্বাভাবিক হয়নি এখনও। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে বাইরে যাতায়াত করা সম্ভব তা নিয়ে উদ্বেগ একটা আছেই।
আরও পড়ুন: বড় বিপদ বাইরে! ফেস মাস্ক আর ফেস শিল্ড – দুটোর মধ্যে কোনটা বেশি কাজের?
এই পরিস্থিতিতেই সাইকেলের গুরুত্ব অনুভূত হচ্ছে বারবার। অল্প দূরত্ব, যা এমনিতে কেউ বাসে বা অন্য কোনও ভাবে গেলেও সাইকেলে তা একটু সময় নিয়ে যাওয়া সম্ভব, সেই সব ক্ষেত্রে মুশকিল আসান হয়ে উঠতে পারে সাইকেল। একা যাওয়া যায় বলে এখানে স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা সহজ। আর সাইকেল চালালে উপরি পাওনা শরীরচর্চা হয়ে যাওয়া, সুস্থ থাকতে যার কথা বারবার বলছেন চিকিৎসকেরা।
নিজস্ব পরিবহন ব্যবহারের তাগিদে সাইকেলই সবচেয়ে সুবিধাজনক পরিবহণ হিসেবে মনে ধরেছে বেশ কিছু অফিসযাত্রীর। তাঁদের মতে, সাইকেল ব্যবহার করলে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি ও দূষণ এড়ানোর পাশাপাশি লকডাউনের বাজারে বেশ সাশ্রয়কারী যান হিসেবেও কাজে দিচ্ছে।
শহরের সাইকেল বিক্রেতারা জানিয়েছেন, লকডাউনের পঞ্চম দফায় আচমকা সাইকেল বিক্রির হার উল্লেখযোগ্য বেড়েছে। গণপরিবহণে ভিড়ের চাপে সংক্রমণ আশঙ্কা থেকে দূরে থাকতেই সাইকেলের প্রতি এই আকর্ষণ বেড়েছে বলে তাঁদের দাবি।
আরও পড়ুন: মাত্র ৫০ টাকায় ডায়ালিসিস! গরিবদের সুস্থ হয়ে ওঠার ভরসা দিচ্ছেন ফুয়াদ ডাক্তার