নিউজ কর্নার ওয়েব ডেস্ক: যে কোনও উত্সবকে ঐতিহ্যগতভাবে উদযাপন করা আমাদের সংস্কৃতিরই অংশ। দোলের ঐতিহ্যগত খাবারের স্বাদ মানে ভাং, পুরী-ক্ষীর, ঠান্ডাই এবং গুজিয়া সবেরই শরীরের উপর প্রভাব আছেই। তাই সবই খেতে হয় নিজের শরীরের মাপ বুঝেই।রঙের উৎসব দোলের রঙ ছাড়া অন্যতম অপরিহার্য অংশ হল গুজিয়া! সাধারণর গুজিয়া। ছাঁকা ঘিয়ে ভাজা, আর চিনির রসে ডোবানো এই মিষ্টির স্বাদ যে কতখানি স্বর্গীয় তা যারা খেতে ভালোবাসেন কারোরই অজানা নয়। বছরের এই সময়ে প্রায় সমস্ত বাড়িতেই ছোট বড় নানান আকারে গুজিয়া কিনে নিয়ে আসা হয়।
তবে স্বাস্থ্যের কচকচানিতে যাওয়ার আগে আর একবার চোখ বুলিয়ে নিন গুজিয়ার রেসিপিতে।
উপকরণ :
ঘি ৫ চা চামচ, ময়দা ২, নুন ১/২ চা চামচ, সুজি ১/২ কাপ, খোয়া বা মেওয়া ২০০ গ্রাম, কাজু বাদাম কুচি ১/২ কাপ, কাঠ বাদাম কুচি ১/২ কাপ, কিশমিশ ১৫-১৮, চিনির গুঁড়ো ৩/৪ কাপ, এলাচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ, তেল গুজিয়া ভাজার জন্য।
আরও পড়ুন: দোলের দিন প্রয়োজন নেশা ধরানো ঠান্ডাই, জেনে নিন রেসিপি
প্রণালী :
- বড় একটি পাত্রে ময়দা এবং তিন টেবিল চামচ ঘি নিন। এই দুটি উপকরণ ভাল করে মিশিয়ে ১/৪ কাপ জল একটু একটু করে মিশিয়ে ভাল করে মেখে একটি শক্ত মণ্ড তৈরি করুন। এবার এর মধ্যে আরও ২-৩ বিন্দু ঘি দিয়ে ভাল করে মাখাতে হবে। মাখা হয়ে গেলে একটি ভিজে কাপড় দিয়ে মণ্ডটি ঢেকে ৩০ মিনিট রেখে দিন। এবার একটি গরম করা প্যানে সুজি দিতে হবে এবং মাঝারি আঁচে হালকা খয়েরি রং না আসা অবধি ভাজতে হবে। এরপর আলাদা করে সরিয়ে রেখে ঠাণ্ডা করতে হবে।
- এবার একটি গরম পাত্রে খোয়া বা মেওয়া দিন। এর মধ্যে অর্ধেক চা চামচ ঘি দিয়ে ভালো করে নাড়তে থাকুন, যাতে খোয়া পুড়ে গিয়ে পাত্রের গায়ে লেগে না যায়। এইভাবে কিছুক্ষণ নাড়ানোর পর দেখবেন খোয়া পাত্রের থেকে সহজেই আলগা হয়ে আসছে। গ্যাস নিভিয়ে সম্পূর্ণ ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত রেখে দিন। গরম প্যানে অর্ধেক চা চামচ ঘি দিয়ে এর মধ্যে কাজু বাদাম, কাঠ বাদাম এবং কিশমিশ মেশান। ভাল করে ভেজে নিন।
- একটি পাত্রে ঠাণ্ডা করা খোয়া নিয়ে তাঁর মধ্যে সুজি দিতে হবে। এবার ভেজে রাখা শুকনো ফল এবং এলাচ গুঁড়ো দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, সমস্ত উপকরণ যেন পুরোপুরি ঠাণ্ডা থাকে। তাহলেই একমাত্র চিনি যোগ করা যাবে। এবার গুঁড়ো করা চিনি এর মধ্যে দিয়ে ভালো করে মেশাতে হবে।
- পরের ধাপে হাতে ভাল করে তেল মেখে ওই মণ্ড থেকে ছোট আকারের লেচি কেটে নিয়ে হাতের সাহায্যে গোলাকার পেরার আকার বানাতে হবে। তারপর সেগুলিকে গোলাকার লুচির আকারে বেলে নিতে হবে।
- এরই মধ্যে গুজিয়া বানানোর ছাঁচটির মধ্যে তেল মাখিয়ে নিতে হবে। এবার এর মধ্যে বেলে রাখা লুচি রাখতে হবে। এর মধ্যে খোয়া দিয়ে তৈরি পুর দিয়ে দিতে হবে এবং আঙুলের ডগায় জল নিয়ে ভালো করে লুচির চারিদিকে লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর গুজিয়ার ছাঁচটিকে দুপাশ থেকে ভালো করে চেপে বন্ধ করুন। তৈরি করা গুজিয়া একটি কাপড় দ্বারা ঢেকে রাখুন।
- একটি প্যানে বেশ অনেকটা তেল নিয়ে মাঝারি আঁচে গরম করে গুজিয়া তেলের মধ্যে দিয়ে মাঝারি আঁচে ভাজতে হবে। সোনালি রং না হওয়া অবধি গুজিয়া গুলি ভাজুন। ব্যস তৈরী গুজিয়া।
- তবে বেশি ঘি স্বাস্থ্যের পক্ষে একদমই ভালো নয়।ময়দার বদলে সুজি বা গোটা গমের মতো স্বাস্থ্যকর আটা দিয়ে গুজিয়া বানান।
- খোয়া মূলত দুধের শুকনো বা সংশ্লেষিত রূপ; এটি বেশ ভারী এবং স্যাচুরেটেড চর্বি থাকে এতে এবং এর ক্যালোরিও বেশি। গুজিয়াতে খোয়ার বদলে স্বাস্থ্যকর কোনও পুর দিন, যেমন শুকনো আপেল, চেরি, আম, খেজুর, কিউই, আনারস ইত্যাদি শুকনো ফলের মিশ্রণ দিতে পারেন।
- রান্নার পদ্ধতিতেও বদল আনতে পারেন যেমন গুজিয়া বেক করে নিন, শুকনো খোলায় ভাজুন। একান্তই ভাজতে হলে দেশি ঘিয়ে ভাজুন।
- চিনির রসের বদলে বাদামী চিনি, গুড় বা মধুর মতো কম পরিমার্জিত চিনির রকমফের ব্যবহার করতে পারেন।