Happy Birthday Michael Jackson, find out his mysterious life

Happy Birthday of Michael Jackson : শুভ জন্মদিন মাইকেল জ্যাকসন ,জেনে নিন তাঁর রহস্যময় জীবন

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

‘কিং অফ পপ’ নামে দুনিয়াজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছিলেন মাইকেল জ্যাকসন। তাকে বলা হয় তারকাদের তারকা। খুব বেশি দিনের জীবন না হলেও তিনি রেখে গেছেন অবিশ্বাস্য সাফল্যের গল্পকথা। যা পুরাণিক রূপকথাকেও হার মানায়। বিশ্বের আনাচে-কানাচে রয়েছে তার অসংখ্য-অগণিত শ্রোতা ও ভক্ত-অনুরাগী। বিশ্বব্যাপী এখনও তার গান সমানভাবেই জনপ্রিয়। গানের সাথে নাচের ছন্দে বিশ্ব মাতিয়েছেন এই পপ তারকা।

গোড়ালির ওপর ভর করে অভিকর্ষকে উপেক্ষা করে কিভাবে যে তিনি সামনের দিকে ঝুঁকে নাচতেন, তা এখনও সবার কাছে বিস্ময়! গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে সর্বকালের সবচেয়ে সফল সঙ্গীতশিল্পী তিনি। পপসাম্রাজ্যের এই কিংবদন্তি গান, নাচ ও ফ্যাশনে ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। ফলে মৃত্যুর পরও মাইকেল জ্যাকসনকে নিয়ে বিশ্বময় রয়েছে ভক্ত-অনুরাগীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও কৌতূহল। তাকে নিয়ে চলছে নানা গবেষণাও। মাইকেল জ্যাকসন একাধারে সঙ্গীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পী, গান লেখক, অভিনেতা, সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী। মূলত, তার নাচ ও গানের অসাধারণ শৈলী তাকে বিশ্বের শীর্ষ তারকায় পরিণত করে।

আজ ২৯ আগস্ট মার্কিন এই সঙ্গীতশিল্পীর জন্মদিন। জো জ্যাকসন ও ক্যাথেরিন জ্যাকসন দম্পতির সপ্তম সন্তান মাইকেল ১৯৫৮ সালের এইদিনে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা রাজ্যের গ্যারি নামে এক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মাইকেলের পুরো নাম মাইকেল জোসেফ জ্যাকসন। তার পরিবার ছিল আফ্রো-আমেরিকান।

পরিবারের অস্বচ্ছলতার কারণে মাইকেল জ্যাকসনকে কপিকল অপারেটর হিসেবে কারখানায় কাজ করতে হয়েছে। তবে গায়ক হিসেবে জ্যাকসনের উত্থান কিন্তু সেই ছোটবেলা থেকেই। তার পাঁচ ভাই ও তিন বোনের সবাই কোনো না কোনো সময় পেশাগতভাবে সঙ্গীতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৬৩ সালে মাত্র পাঁচ বছর বয়সে মাইকেল জ্যাকসন পেশাদার সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি তখন জ্যাকসন ফাইভ নামের সঙ্গীত গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে গান গাইতেন। সেখান থেকেই প্রথম মিউজিক অ্যালবাম ‘ডায়ানা রোজ’ ১৯৬৯ সালে প্রকাশ পায়।

এ অ্যালবামের প্রথম একক গান ‘আই ওয়ান্ট ইউ ব্যাক’ ১৯৭০ সালের জানুয়ারিতে বিলবোর্ডের হট তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করে নেয়। সারা বিশ্বের মানুষের কাছে আমেরিকার পপ সঙ্গীতকে জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে মাইকেল জ্যাকসন যে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন তার শুরুটা হয়েছিল ১৯৭১ সালে। তখন মাত্র ১৩ বছর বয়সে এককভাবে মাইকেল জ্যাকসনের ক্যারিয়ারের যাত্রা শুরু হয়।

১৯৭২ সালে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘বেন’ প্রকাশিত হয়। এরপর ১৯৭৯ সালে তার পরবর্তী অ্যালবাম বের হয়। এ অ্যালবামের নাম ছিল ‘অফ দ্য ওয়াল’। যার ‘ডোন্ট স্টপ টিল ইউ গেট অ্যানাফ’ ও ‘রকিং উইথ ইউ’ গান দুটির মাধ্যমে তুমুল জনপ্রিয়তা পান তিনি। এক দশকের মাথায় জ্যাকসন হয়ে ওঠেন বিশ্বের পপসঙ্গীত শ্রোতাদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় শিল্পী। শুরু হয় তার একচ্ছত্র আধিপত্য। তারকাখ্যাতির সঙ্গে অর্থ-বিত্তের প্রাচুর্যে রূপকথার জীবন কাটাতে লাগলেন মাইকেল জ্যাকসন।

গানের তালে তালে মাইকেলের নাচের কৌশলগুলোও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এলভিস প্রিসলি পপসঙ্গীতের সম্রাট হওয়া সত্ত্বেও মাইকেল জ্যাকসনকেই শ্রোতারা গুরু ডাকতে শুরু করে। ১৯৮২ সালে তার ‘থ্রিলার’ অ্যালবামটি সারাবিশ্বে বেস্ট সেলিং অ্যালবাম হিসেবেই ইতিহাস গড়ে। মাইকেলের গাওয়া পাঁচটি সঙ্গীত অ্যালবাম বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত রেকডের্র মধ্যে রয়েছে। সেগুলো হলো- ‘অফ দ্য ওয়াল’ (১৯৭৯), ‘থ্রিলার’ (১৯৮২), ‘ব্যাড’ (১৯৮৭), ‘ডেঞ্জারাস’ (১৯৯১) ও ‘হিস্টরি’ (১৯৯৫)।

১৯৮০’র দশকে মাইকেল জ্যাকসন সঙ্গীত শিল্পীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছান। তিনি প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী যিনি এমটিভিতে এত জনপ্রিয়তা পান। বলা হয়, তার গাওয়া গানের ভিডিওর মাধ্যমেই এমটিভির প্রসার ঘটেছিলো। মাইকেলের জনপ্রিয় নাচের মধ্যে রবোট ও মুনওয়াক (চাঁদে হাঁটা) রয়েছে। মুনওয়াক হলো সামনের দিকে হাঁটার দৃষ্টিভ্রম সৃষ্টি করে পিছনে যাবার ভঙ্গিমা।

২০০১ সালে থ্রিলার অ্যালবামের একটি রিভাইসড এডিশন বের হয়। এরপর ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০০৮ সালে বের হয় ডিলাক্স এডিশন থ্রিলার ২৫। যাতে নতুন একটি গান, সাক্ষাৎকারসহ যুক্ত হয় নানা ফিচার। এখনো অনেক নতুন অ্যালবামের ভিড়ে ২৮ বছরের পুরনো অ্যালবামটির বিক্রি কমেনি। অথচ, একটা সময় কৃষ্ণাঙ্গ বলে সমাজে নিচু চোখে দেখছে সবাই- এই মনস্তাত্ত্বিক টানাপড়েনে প্লাস্টিক সার্জারি করে নিজেকে ফর্সা করে তোলেন জ্যাকসন। নিজের চেহারার কৃষ্ণাঙ্গ থেকে শ্বেতাঙ্গে রং বদল নিয়ে অনেক সমালোচনা সহ্য করতে হয় তাকে। সব বাঁধা পেরিয়ে বিশ্বের বুকে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে মাইকেল জ্যাকসন যেন কৃষ্ণাঙ্গদের সম্মানীত করে তোলেন।

একটা সময় শিশু যৌন নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ ওঠে মাইকেল জ্যাকসনের বিরুদ্ধে। যৌন হয়রানির অভিযোগে ২০০৫ সালে আদালতের কাঠগড়ায়ও দাঁড়াতে হয়েছিল এই সঙ্গীতশিল্পীকে। মাইকেলের এ যৌন নির্যাতনের বিষয়টি মূলত আরো খোলাসা হয় তার কন্যা প্যারিসের আত্মহত্যা চেষ্টার পর। এফবিআই যে তালিকা দিয়েছে, সেখানেও অভিযোগের সত্যতার দেখা মেলে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই জ্যাকসন সম্পর্কে স্পর্শকাতর গোপন ফাইল প্রকাশ করে।

আরও পড়ুন : হাসপাতালে রবীন্দ্র জাদেজা জানুন ভারতীয় অলরাউন্ডারের হেলথ আপডেট

প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশুদের প্রতি যৌনাসক্ত ছিলেন মাইকেল জ্যাকসন। জীবদ্দশায় অন্তত ২৪ জন বালককে যৌন হয়রানি করেছেন তিনি। আর এতে তিনি ব্যয় করেছেন ৩ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি এ কর্মে লিপ্ত ছিলেন। এই ফাইলগুলোতে মাইকেল জ্যাকসনকে ‘পেডোফিল’ বা শিশুদের প্রতি যৌনাসক্ত বলে দাবি করা হয়েছে।

দাম্পত্য জীবনে ভালোবেসে ঘর বেঁধেছিলেন বিশ্বের সব রকস্টারের স্বপ্ন নায়ক এলভিস প্রিসলির একমাত্র সন্তান লিসা মেরি প্রিসলিকে বিয়ে করে। কিন্তু অল্প দিনেই ভাঙন আসে এই সুখের সংসারে। ১৯৯৬ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। ১৯৯৭ সালে আবারো বিয়ের পিঁড়িতে বসেন পপ সম্রাট। পেশায় নার্স এই ভদ্রমহিলার নাম ডোবরা জেনি রো। তারা দু’বছর সংসার করার পর ১৯৯৯ সালে আলাদা হয়ে যান এবং তালাকের সময় দুই সন্তানের প্রতিপালনের দায়িত্ব ডোবরা মাইকেলকে প্রদান করেন।

জ্যাকসনের তিন ছেলে-মেয়ে। পুত্র প্রিন্স মাইকেল জন্ম নেয় ১৯৯৭ সালে। মেয়ে ক্যাথরিনা ১৯৯৮ সালে। প্রিন্স মাইকেল টু নামে তার একটি পুত্র আছে যে ২০০২ সালে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু তার মায়ের ব্যাপারে কোন কিছু জানা যায়নি। জীবনের শেষ দিকে এসে নানা যন্ত্রণায় বিরক্ত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন তিনি।

জানা যায়, এ ব্যাপারে তার প্রযোজক বন্ধু ও গীতিকার ডেভিড ওয়ার্নসবি ও ফিলিপ বুবাল তাকে সহায়তা করেন। তারা তাকে বুঝাতে সক্ষম হন তারা ইসলাম গ্রহণ করে কিভাবে সুন্দর জীবন যাপন করছেন। মুসলিম হবার পর তিনি মিকাঈল নাম গ্রহণ করেছিলেন বলে জানা যায়।

মাইকেল জ্যাকসন দুবার রক অ্যান্ড রোল হল অব ফেইমে নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনিই এই পৃথিবীর একমাত্র ব্যক্তি যিনি গানের সাথে বহুমাত্রিকতায় নাচকে (সর্বপ্রথম এবং একমাত্র), ‘আর এন বি’ হল অব ফেইমে জায়গা করে নিয়েছেন। সঙ্গীত জগতের কেউ এত ক্যাটাগরিতে হল অব ফেইমে নিজেকে নিতে পারেননি।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে মাইকেল সর্বকালের সবচেয়ে সফল শিল্পী। ১৩টি গ্র্যামি পুরস্কার, ১৩টি ১ নম্বর একক সঙ্গীত এবং ১০০ কোটিরও বেশি মাইকেলের অ্যালবাম বিক্রি হয়েছে। যা এখনো বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড তাকে বিশ্বরেকর্ডে ভূষিত করেছে বিনোদন জগতের মানুষ হিসেবে সবচেয়ে বেশি দানশীল ছিলেন। তার দানকৃত অর্থের পরিমাণ ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি নানা কেলেঙ্কারিতে (পরবর্তীতে যার অধিকাংশই ভুল প্রমাণিত হয়) জড়ালেও প্রায় ৪০ বছর ধরে সারা বিশ্বে বিখ্যাত হয়ে ছিলেন। তিনি পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ গায়ক এবং নৃত্যশিল্পীর সিংহাসনে বসে আছেন আজো।

আরও পড়ুন : পুজোয় বাড়তে পারে কোভিড ,আশঙ্কা জানিয়ে রাজ্যকে চিঠি কেন্দ্রের, ভবানীপুরও কি বিধিনিষেধের লক্ষ্যে ?

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest