করোনাকে (Coronavirus) ঘিরে উদ্বেগ ক্রমেই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। মারণ ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় বিপর্যস্ত দেশ। এমন পরিস্থিতিকে আরও ভয়ংকর করে তুলতে এবার প্রাদুর্ভাব ঘটেছে কালো ছত্রাকের! ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ (Black Fungus) নামে পরিচিত এই মারণ ছত্রাক হয়ে দাঁড়াচ্ছে করোনার এক দোসর।
ডাক্তাররা বলছেন, এই রোগের নাম মিউকরমাইকোসিস (Mucormycosis) । যা বিষাক্ত ছত্রাকের থেকে ছড়ায়। নিঃশ্বাসের সঙ্গে এর রেণু শরীরে ঢুকে গেলে দেহকোষগুলিকে সংক্রামিত করে। নাক, মুখ, ত্বকের ছিদ্র দিয়ে সহজে ঢুকে পড়ে মানুষের শরীরে। গত বছরও কোভিড রোগীদের মধ্যে মিউকরমাইকোসিসের প্রকোপ দেখা গিয়েছিল। দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, আহমেদাবাদে অন্তত ১০০ জন রোগী সংক্রামিত হয়েছিলেন মিউকরমাইকোসিসে।
সম্প্রতি দিল্লি, আহমেদাবাদ, মুম্বইয়ের একাধিক হাসপাতালে কোভিড রোগীদের মধ্যে এই ‘ফাঙ্গাল ইনফেকশন’ ধরা পড়ছে। আবার করোনা সারিয়ে উঠেছেন এমন রোগীরাও আক্রান্ত এই ছত্রাকের সংক্রমণে। একেই কোভিড সারাতে নাজেহাল ডাক্তাররা, তার ওপর ছত্রাকজনিত রোগ মাথাচাড়া দেওয়ায় আতঙ্ক কয়েকগুণ বেড়েছে।
আরও পড়ুন: ক্লান্তি কাটছে না? শরীর চাঙ্গা করতে খেতে পারেন এই খাবারগুলি
দিল্লির শ্রী গঙ্গারাম হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডঃ মনীশ মুঞ্জাল জানালেন, কোভিডের প্রভাবে এই ভয়ানক ছত্রাকের সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে। গত দু’ দিনে মিউকরমাইসিসের আক্রান্ত ছ’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত বছর এই মারাত্মক ছত্রাকের সংক্রমণে মৃত্যুহার বেড়ে গিয়েছিল। দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে যাওয়া, নাকে সমস্যা এবং চোয়ালের হাড়ের সমস্যা ছিল লক্ষণ।
হাসপাতালটির নাক-কান-গলা বিভাগের চেয়ারম্যান ডঃ অজয় স্বরূপ বলছেন, কোভিডের চিকিতসায় স্টেরয়েড ব্যবহার এবং সেই সঙ্গে রোগীদের ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়া, এই দুই মিলে হয়তো মিউকরমাইসিসের উদ্ভব ঘটাচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়েছেন কিন্তু ডায়বেটিস, কিডনি কিংবা হৃদযন্ত্রের সমস্যার মতো কো-মর্বিডিটি সম্পন্ন রোগীদের মধ্যে এই ছত্রাক বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। তাঁর সঙ্গে সম্মতি জানিয়ে ডঃ মুঞ্জাল বলেছেন, ইমিউনিটি যাঁদের দুর্বল, তাদের বিপদ বেশি। তাই চোখে চোখ এবং চোয়ালে ফোলা ভাব কিংবা নাকে কালো ছোপ পড়লেই দেরি না করে বায়োপসি করিয়ে চিকিৎসা করাতে বলছেন।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টি ফাঙ্গাল ওষুধ খাওয়া প্রয়োজন। তবে অনেক গুরুতর ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করে সংক্রমিত মাংসপেশীগুলি বাদ দেওয়া হয়। ঠিক সময় ধরা পড়লে এই রোগের চিকিৎসা হওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুন: Ramadan 20201: রোজা রেখে মাথা যন্ত্রনা হলে যা করবেন…