পুজো এলেই ঘরের সব জিনিস একটু নতুনের মতো সাজাতে ইচ্ছে করে। তবে ফ্রিজের ক্ষেত্রে এটি কিন্তু বিলাসিতা নয়, প্রয়োজন। আপনার রান্না করা খাবার, পরের দিন খাওয়ার জন্য তুলে রাখছেন ফ্রিজে। ঠিকমতো ফ্রিজ পরিষ্কার না করলে সেই খাবার থেকে যে ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণ ঘটবে না, তা কে বলতে পারে! অনেক সময়ে পুরনো হয়ে যাওয়া খাবার থেকে দুর্গন্ধও ছড়াতে পারে। তাই পুজোর আগের কোনও সপ্তাহ শেষের দিনে ভাল করে পুরো ফ্রিজ পরিষ্কার করে নিন।
প্রথম ধাপ
ফ্রিজ পরিষ্কার করার আগে প্লাগ খুলে রাখুন। দেখে নেবেন যাতে কোনও ভাবেই বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকে। তারপর কোমর বেঁধে নেমে পড়ুন পরিষ্কারে। প্রথমে আপনাকে ফ্রিজ খালি করতে হবে। সবার ফ্রিজেই কিছু খাবার, সবজি পড়ে থাকে। যেগুলো খাবার অযোগ্য এবং ফ্রিজের ভেতরের যাবতীয় ময়লা একটি প্লাস্টিক বা গার্বেজ ব্যাগে ভরে ডাস্টবিনে ফেলে দিন।
দ্বিতীয় ধাপ
খাবার ছাড়াও জ্যাম, বাটার, চকোলেট, কোল্ড ড্রিঙ্কস, প্যাকেজড ফুড থাকে ফ্রিজে। সেগুলো বাইরে রেখে দিন। যে খাবারগুলো আবার ফ্রিজে রাখতে হবে সেগুলো অন্যত্র রেখে ফ্রিজের তাক, সবজি রাখার ট্রে এবং ডিমের ট্রে সব বের করে নিন।
তৃতীয় ধাপ
সবকটি তাক, ট্রে ভালো করে সাবান জলে ধুয়ে জল ঝরাতে দিন। তবে সেগুলো কখনই গরম জলে ধোবেন না। ফ্রিজের সব জিনিসই ঠান্ডা থাকে, হঠাৎ করে গরম জল ধুলে চিড় ধরে যেতে পারে। ফ্রিজের শক্ত দাগ দূর করতে টুথপেস্ট ব্যবহার করতে পারেন। ফ্রিজের গন্ধ দূর করতে একটি জারে বেকিং সোডা নিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। যতক্ষণ না গন্ধ যাচ্ছে রেখে দিতে হবে।
চতুর্থ ধাপ
এরপর ফ্রিজের ভিতরের অংশ পরিষ্কার করতে হবে। প্রথমে হালকা গরম জলে সাবান মিশিয়ে নিন। তাতে কাপড় ভিজিয়ে ভিতরটা মুছুন। এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। তারপর শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে। একই পদ্ধতিতে ফ্রিজের দরজা, বাইরের অংশও মুছে নিন।
সাবানের পরিবর্তে ঘরে তৈরি সলিউশনও ব্যবহার করতে পারেন – ১) এক বালতি জলে ১ টেবিল চামচ লিকুইড ব্লিচ মিশিয়ে সেই জল দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। ২) একটি বালতিতে এক কাপ অ্যামোনিয়া, হাফ কাপ ভিনেগার, ১/৪ কাপ বেকিং সোড মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি স্প্রে বোতলে ভরে ফ্রিজ পরিষ্কার করতে পারেন। যেভাবে ফ্রিজ পরিষ্কার করলেন একইভাবে ফ্রিজারও পরিষ্কার করে নিন। প্রথমে খালি করুন ফ্রিজার। বরফের পাত্র থেকে বরফের টুকরোগুলো ফেলে দিয়ে নতুন জল ভরে রাখুন। পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পর ফ্রিজারে যেসব খাবারের প্যাকেট ছিল সেগুলো নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে দিন।
পঞ্চম ধাপ পরিষ্কার করার পর একটা পাতিলেবু কেটে ফ্রিজের সব তাকে রেখে দিন। ফ্রিজের দরজা খোলা রাখুন কিছুক্ষণ। ভাল হয় সারারাত ফ্রিজের দরজা খুলে রাখলে। নাহলে ঘণ্টা দুয়েক ফ্রিজ খোলা রাখার পর আবার চালু করুন। প্রথমেই খাবার রাখবেন না। একটা জলের বোতল রাখুন। ঠান্ডা হতে শুরু করলে বাটার, চিজ, প্যাকেজড ফুড রাখতে পারেন। তারপর রাখুন শাকসবজি। জিনিসপত্র ফ্রিজে রেখে দেওয়ার পর রান্নাঘরের যে জায়গায় ফ্রিজ থেকে বের করা জিনিসপত্র রেখেছিলেন, সেখানটাও পরিষ্কার করেন নিন। এরপর সাবান দিয়ে ভাল করে হাত ধুয়ে ফেলুন। ফ্রিজ যতটা সম্ভব খালি রাখলে ভালো হয়। বেশি জিনিস ফ্রিজে ভরলে ঠান্ডা কম হবে।