সুফি সাধক হাসান বসরীর পুরো নাম আল হাসান ইবনে আবিল হাসান আল বসরী। তাঁর জীবনকাল ৬৪২ – ৭২৮ খ্রীস্টাব্দ। তিনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত মুসলিম ধর্মতাত্ত্বিক।তিনি পারস্য বংশোদ্ভুত পিতামাতার ঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বড় হয়েছিলেন উম্মে সালমার ঘরে। হাসান বসরী অনেক সাহাবির সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। বলা হয় যে, বদর যুদ্ধে সৈনিক হিসেবে অংশগ্রহণকারী সত্তরজন সাহাবীর সাথে তিনি সাক্ষাৎ করেছিলেন। সুফি সাধনার দিক দিয়ে তিনি হযরত আলীর অনুসারী ছিলেন
আরও পড়ুন : জেনে নিন ইমাম গাজ্জালীর অমর বাণী,যা আপনার মনেও আলো জ্বালবে
হজরত হাসান বসরী(র) এর উপদেশ সমহ
১)মানুষ ছাগল-ভেড়ার চেয়েও অসাবধান। রাখাল এর ডাক শুনে পশুরা ঘাস খাওয়া বন্ধ করে দেয়।কিন্তু মানুষ তার প্রতি পালকের আহবান শুনেও ভ্রুক্ষেপ করে না.অসত র্কম করেই যায়।
২)মন্দ লোকের সংসর্গ ভালো লোকের সাথে সদ্ভাব প্রর্দশনে বাধা সৃস্টি করে।
৩)হৃদয়ে যখন আল্লাহর বিরোধিতার লেশমাত্র থাকে না।তখন জানতে হবে,মারেফত অর্জন হয়েছে।
৪)বাইরেরআনুষ্ঠানিকতা দিয়ে জান্নাত লাভ করা যায় না।প্রয়োজন মনের একাগ্রতা আর কঠোর সাধনা।
৫)মনের আয়না যখন শুধু সৎ ভাবনা প্রতিফলিত হয়,তখন জানতে হবে,সঠিক পথেই রয়েছি।যদি অসৎ চিন্তায় থাকে তবে জানতে হবে অসৎপথেই আছি।
৬)যার কথায না আছে যুক্তি না আছে বুদ্ধি তার কথায কোন উপকার নেই।তার কথা শুনলে শুধু সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছুই না।
৭)নিবিড় চিন্তায় যার মন আল্লাহ্ কে জানতে না পারে সে নিশ্চয় পার্থিব জীবনে মোহাচ্ছন্ন অথবা অলস।আর যার দৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহ্ র রহশ্যময়তার আভাস নেই,তারও দৃষ্টি জাগতিক ধুলাবালি দ্বারা আচ্ছন্ন।
৮)তওরাতে আছে যে ব্যাক্তি অল্পতে তুষ্ট হওয়ার অভ্যাস করে,সে পর মুখাপেখিপেক্ষিতা থেকে বেঁচে যায়।আর সে যদি মাসুষের সংস্রব এড়াতে পারে, বুঝতে হবে ,সে প্রকৃত পথের সন্ধান পেয়েছে।যে প্রবৃত্তিকে
বশিভূত করতে পেরেছে,সে স্বাধীনতা লাভ করেছে।যে হিংসা দ্বেষ ত্যাগ করতে পেরেছে সে বন্ধুত্ব লাভের উপযুক্ত হয়েছে।
৯)আল্লাহ্ ভীতির তিনটি লক্ষন আছে
ক)যার মনে আল্লাহ্র ভয় আছে,সে রেগে গেলেও বা স্বাভাবিক অবস্থায় সত্য কথা বলে। খ) সে মন্দ রিপু গুলিকে দমন করেন।
গ)যে কাজে আল্লাহ্র সন্তুস্টি লাভ করা যায়,সেই কাজেই শুধ ব্যস্ত থাকেন।
১০)এক পলকের পার্থিব অনাশক্তি হাজার বছরের ইবাদত অপেক্ষা মূল্যবান ।
১১)অন্তরের অমিলই হল প্রবঞ্চনার লক্ষণ।
১২)তিনিই প্রকৃত বিশ্বাসী,যিনি আল্লাহ্ র শপথ নিয়ে বলতে পারেন যে তিনি বিশ্বাসী।
১৩)বিশ্বাসীর সংজ্ঞা সংজ্ঞা ধীর স্থির লোক। যিনি গোপন গভীর সাধনায় দিন যাপন করেন। মুখে যাই আসে তাই বলেনা।
১৪)তিন লোকের নিন্দাবাদ করা সিদ্ধ অথবা তাকে পরচর্চা বলেনা
যেমন- ক)ইন্দ্রিয়াসক্ত-লোভী,
খ )প্রকাশ্য এ প্রতিনিয়ত অসাদাচারী, গ )নিষ্ঠুর অত্যাচারী শাসক ও নেতা।
১৫)পরচর্চার প্রায়শ্চিত্ত হল আল্লাহ্র দরবারে ক্ষমা চাওয়া।যার নিন্দা করা হয় তার কাছে থেকে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া।
আরও পড়ুন : শেখ সাদির অসাধারণ সেই সব বাণী, যা একবার পড়তেই হবে