সোমবার দিনভর তোলপাড় কাশী। প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে উদ্বোধন হয়ে গেল কাশী বিশ্বনাথ করিডরের। ২০১৯ সালেই ৫ লাখ বর্গফুটের এই করিডরের কাজ শুরু করার কথা ঘোষণা করেন নমো। আজ সেই করিডরের প্রথম পর্বের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী। এই করিডরটি তৈরি করতে গিয়ে ভাঙতে হয়েছে তিনশো বাড়ি। প্রকল্পের মোট খরচ ৩৩৯ কোটি টাকা।
পাঁচ লক্ষবর্গ ফুট এলাকাজুড়ে গঙ্গার ঘাট ও মন্দিরের সংযোগ রক্ষা করছে এই করিডোর। যার মাধ্যমে সহজেই ভক্তরা কাশী বিশ্বনাথ মন্দির পৌঁছতে পারবেন৷ এ ছাড়াও করিডরে রয়েছে, যাত্রী সুবিধা কেন্দ্র, টুরিস্ট ফ্যাসিলিয়েশন সেন্টার, বৈদিক কেন্দ্র, মুমুক্ষু ভবন, ভোগশালা, সিটি মিউজিয়াম, ভিউয়িং গ্যালারি, ফুড কোর্ট ইত্যাদি৷
Behind the success of the Shri Kashi Vishwanath Dham project is the hardwork of countless individuals. During today’s programme I had the opportunity to honour them and have lunch with them. My Pranams to these proud children of Bharat Mata! pic.twitter.com/iclAG9bmAR
— Narendra Modi (@narendramodi) December 13, 2021
মন্দির এলাকা
নতুন করিডর নির্মাণ ছাড়াও মন্দির এলাকার ব্যাপক মানোন্নয়ন হয়েছে৷ অত্যাধুনিক পরিষেবা কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে৷ আগে গঙ্গার ঘাট থেকে মন্দিরটি স্পষ্ট দেখা যেত না৷ কিন্তু, নতুন করে ২০-২৫ ফুট চওড়া করিডরের মাধ্যমে গঙ্গার ললিতা ঘাটকে মন্দির চকের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় মন্দিরের চারপাশের এলাকা তিন হাজার থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লাখ বর্গফুট করা হয়েছে। এখানে প্রায় ৪০টি মন্দিরের গৌরব পুনরুদ্ধার করা হয়েছে৷ ২৩টি ভবনে বিভিন্ন সুবিধা প্রদানের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ যে ভাবে করিডর নির্মাণ করা হয়েছে, তাতে তীর্থযাত্রীদের আর ভিড় করতে হবে না৷ কারণ, গঙ্গার ঘাট থেকে মন্দির সরাসরি দেখা যাবে৷
আরও পড়ুন: এবার ত্রিপুরার সরকারি বিজ্ঞাপনে শিয়ালদহ উড়ালপুল! প্রকাশ্যে আসতেই শুরু রাজনৈতিক তরজা
অত্যাধুনিক পরিষেবা
চলতি বছরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্যবসায়িক সম্মেলন এবং আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার উদ্বোধন করেছিলেন৷ যে ভবনের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘রুদ্রাক্ষ’৷ সেই ভবনে ১,২০০ লোকের বসার জায়গা আছে৷ যে ভবনটি দেখতে শিবলিঙ্গের মতো৷ ভবনের সামনে ১০৮টি রুদ্রাক্ষ রয়েছে৷ এ ছাড়াও আর্ট গ্যালারি, বহুমুখী জলসা ঘর, আলাদা আলাদা আলাচনার ঘর৷ প্রতিটিতেই আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে৷
সড়ক ও পরিবহণ
প্রধানমন্ত্রী মোদি দু’টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সংযোগ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন৷ একটি বারাণসী রিং রোড এবং বাবতপুর-বারাণসী সড়ক। রিং রোড নির্মাণে মোট ১,৫৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে৷ প্রথম দফায় ১৬.৫৫ কিমি দীর্ঘ রিং রোড নির্মাণে ৭৫৯ কোটি টাকা খরচ হবে৷ দ্বিতীয় দফায় চার লেনের ১৭.২৫ কিমি বাবতপুর-বারাণসী সড়ক নির্মাণে ৮১২ কোটি ব্যয় করা হবে৷ অন্য দিকে, জাতীয় সড়ক ১৯-র অধীনে ছয় লেনের বারাণসী থেকে প্রয়াগরাজ রোড নির্মাণ করা হবে৷ যে রোড বারাণসী যানজটহীন হবে৷ ১১১.২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫৩ কিমি বিস্তৃত ৪৭টি গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে৷ নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতিতে অনলাইন পোর্টাল করা হয়েছে। বারাণসীর মান্ডুয়াদিহ রেলওয়ে স্টেশনকে আরও উন্নত সুবিধার ক্যাফেটেরিয়া, বুকিং রুম, লাউঞ্জ-সহ বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে৷
চিকিৎসা পরিষেবা উন্নতি
চিকিৎসা ব্যবস্থার ব্যপক উন্নতি করা হয়েছে৷ ২০ শয্যার জরুরি পরিষেবার জন্য বিএইচইউ ট্রমা সেন্টার৷ শহর ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যের লোকেদের চিকিত্সা দেওয়ার জন্য দুটি ক্যান্সার হাসপাতাল৷ একটি পন্ডিত মদন মোহন মালভিয়া ক্যান্সার হাসপাতাল এবং হোমি ভাবা ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং প্রযুক্তি
শহরের ঐতিহ্যবাহী জায়গাগুলিতে কুইক রেসপন্স (কিউআর) কোড সহ ‘স্মার্ট সাইনসেজ’ বসানো হয়েছে। এক স্ক্যানেই পর্যটকদের সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য এবং কোনও নির্দিষ্ট স্থানের ইতিহাস প্রদান করবে। এটি বারাণসীর ৮৪টি প্রাচীন ঘাট এবং সাইটগুলির চারপাশে গড়ে ওঠা সংস্কৃতি সম্পর্কে আরও তথ্য দেবে। পর্যটকদের সাহায্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শহরটি ৭২০টি স্থানে ৩০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রীনগরে পুলিসের বাসে জঙ্গি হামলা, আহত কমপক্ষে ১৪ জন আধিকারিক