আফগানিস্তানে আটকে পড়া ভারতীয়দের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়াই ভারত সরকারের অগ্রাধিকার। প্রধানমন্ত্রীর ডাকে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠকে উপস্থিত বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের জানালেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি জানান, অন্তত ১৫ হাজার মানুষ আফগানিস্তান ছাড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সূত্রের খবর, সর্বদল বৈঠকে জয়শঙ্কর আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিন কী ভাবে তাদের লোকেদের সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তা-ও সবিস্তারে বিরোধী নেতাদের জানিয়েছেন। ভারত যত বেশি সম্ভব মানুষকে সরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে বলেও সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তৃণমূল-সহ দেশের সবকটি সংসদীয় দলের প্রতিনিধিরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ প্যাটেল, রাজ্যসভায় বিজেপির নেতা পীযূষ গয়াল। মূলত বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর উদ্যোগে এই বৈঠক। আফগান পরিস্থিতি সম্বন্ধে সংসদীয় দলগুলোকে অবগত করতে বিদেশ মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তারপরেই সংসদের সেন্ট্রাল হলে এদিন এই বৈঠক হয়েছে।
তালিবান ফেব্রুয়ারি ২০২০-তে করা দোহা চুক্তি ভেঙেছে। এমন অভিযোগের সুর শোনা গিয়েছে বিদেশ মন্ত্রীর গলায়। সেই চুক্তি মোতাবেক আফগানিস্তানে বসবাকারী সব সম্প্রদায়ের ধর্মীয় মতাদর্শ এবং স্বাধীনতাকে সম্মান করবে তালিবান। কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে সেই চুক্তির রূপায়ণ, তালিবানের তরফে হয়নি। এমনটাই কেন্দ্র সর্বদলীয় বৈঠকে জানিয়েছে। এই প্রসঙ্গে সংসদীয় দলগুলো কেন্দ্রকে প্রশ্ন করে, ‘আফগান প্রশ্নে ভারতের নীতি কী?’ সেই প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, ‘অন্য সব দেশের মতোই এই বিষয়ে ধীরে চল নীতি নেবে ভারত।‘
বৃহস্পতিবার সর্বদল বৈঠকে বিরোধী নেতাদের মধ্যে হাজির ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া, তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার, কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে, লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী প্রমুখ। বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী বিরোধী নেতৃত্বের সামনে সামগ্রিক পরিস্থিতি বর্ণনা করেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সূত্রের খবর, উপস্থিত নেতারা সমস্বরে জানিয়েছেন, সমালোচনা নয় বরং এই পরিস্থিতিতে সরকারের হাত শক্ত করাই তাঁদের উদ্দেশ্য।
দৈনিক দু’টি করে বিমানে কাবুল থেকে ভারতীয়দের সরিয়ে নিয়ে আসার কাজ করছে ভারত। এখনও পর্যন্ত ৩০০ জনেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে বলে বিদেশমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: শাসক দলের সঙ্গে পুলিশের ঘনিষ্ঠতা ‘বিপজ্জনক প্রবণতা’: সুপ্রিম কোর্ট