Bilkis Bano Case: Supreme Court Will Hear Plea Against Convicts' Release

বিলকিস বানু মামলা : যাবজ্জীবন দণ্ডিতদের মুক্তির বিরুদ্ধে আবেদন শুনবে সুপ্রিম কোর্ট

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

বিলকিস বানুর ধর্ষক ও তার পরিবারের লোকজনদের যারা খুন করে যাবজ্জীবন সাজা খাটছিল তারা স্বাধীনতা দিবসে মুক্তি পেয়েছে। এমন জঘন্য অপরাধীদের মুক্তিতে হতবাক দেশের চেতনাসম্পন্ন সমস্ত মানুষ। হতবাক বহির্বিশ্বও। গুরাট সরকারের আবেদনে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এই অপরাধীদের মুক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়ার সুভাষিণী আলী, তৃণমূল কংগ্রেসের মহুয়া মৈত্র এবং আরও বেশ কয়েকজন। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট এই মালাটিকে তালিকাভুক্ত করেছে এবং শুনতে সম্মতি দিয়েছে। মঙ্গলবার সকালে দেশের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনার কাছে এই মামলাটি উত্থাপন করেছেন আইনজীবী অপর্ণা ভট্ট। বুধবার জরুরি ভিত্তিতে মামলাটি তালিকাভুক্ত করার আর্জি জানানো হয়েছে।

গুজরাট দাঙ্গায় নিশানা করা হয়েছিল সংখ্যালঘুদের। দাহোড় জেলার রাধিকপুর গ্রামে থাকতেন বিলকিস বানো। ২৮ ফেব্রুয়ারি তিন বছরের শিশু কন্যা সালেহা আর ১৫ জন আত্মীয়ের সঙ্গে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান বিলকিস। বিলকিসের বয়স তখন ১৯ বছর। পাঁচ মাসের গর্ভবতী ছিলেন তিনি। ৩ মার্চ ছাপাড়ভাড় জেলায় আশ্রয় নিয়েছিলেন বিলকিস ও তাঁর পরিবার। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা ও বোন।

চার্জশিটে বলা হয়েছিল, ছাপাড়ভাড়ে যখন আশ্রয় নিয়েছিলেন বিলকিসরা, তখন ২০-৩০ জনের একটি দল হামলা চালায়। ওই দলেই ছিলেন বিলকিসের ১১ জন ধর্ষকও। হামলাকারীদের হাতে ছিল কাস্তে, তরোয়াল, লাঠি।বিলকিস, তাঁর মা, বোন এবং ওই দলে থাকা অন্য মহিলাদের গণধর্ষণ করা হয়। অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকেও রেয়াত করেনি তারা।

এখানেই শেষ নয়। বিলকিসের চোখের সামনে তাঁর তিন বছরের মেয়েকে পাথরের উপর আছড়ে ফেলেন হামলাকারীরা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সালেহা।রাধিকপুর গ্রাম থেকে পালিয়ে এসেছিল ১৭ জনের যে দল, তাঁদের মধ্যে আট জনের দেহ মেলে। ছ’জন নিখোঁজ। জীবিত ছিলেন বিলকিস আর একটি শিশু।চোখের সামনে শিশুকন্যাকে খুন হতে দেখেছিলেন। তার পরেও চলেছিল গণধর্ষণ। ঘটনার জেরে প্রায় তিন ঘণ্টা অচেতন ছিলেন বিলকিস।

জ্ঞান ফিরলে এক আদিবাসী মহিলার থেকে শরীরে জড়ানোর মতো একটা কাপড় চেয়ে নিয়েছিলেন বিলকিস। দ্বারস্থ হয়েছিলেন হোমগার্ডের। সেই হোমগার্ড লিমখেরা থানায় নিয়ে গিয়েছিলেন বিলকিসকে।

সিবিআই জানিয়েছে, থানায় গিয়ে অভিযোগ লিখিয়েছিলেন বিলকিস। কিন্তু হেড কনস্টেবল সোমাভাই গোরি বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ‘বিকৃত রিপোর্ট লিখেছিলেন তিনি।’জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বিলকিসের বিষয়টি নিয়ে লড়াই শুরু করে। হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই বিলকিস গণধর্ষণের তদন্তে নামে সিবিআই।ঘটনার ভয়াবহতায় চমকে উঠেছিলেন সিবিআই তদন্তকারীরাও। রাধিকপুর থেকে পালিয়ে আসা দলটির মধ্যে যে সাত জনের দেহ মিলেছিল, তাঁদের প্রত্যেকের খুলি মেরে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।

২০০৪ সালে বিলকিস সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ করেছিলেন, প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন। গত দু’বছরে ২০টি বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।২০০৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মুম্বইয়ের আদালতে সরানো হয় বিলকিসের মামলা। ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ছ’জন পুলিশ অফিসার এবং এক জন সরকারি চিকিৎসক।এক জন অন্তঃসত্ত্বাকে গণধর্ষণের প্রায় ছ’বছর পর রায় ঘোষণা হয় বিশেষ আদালতে। ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি। ১২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। প্রমাণের অভাবে বাকি সাত জন বেকসুর খালাস পান।শুনানির চলাকালীন এক জন অভিযুক্ত মারা যান। ১১ জন ধর্ষককে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়।

শুনানি চলাকালীন প্রত্যেক অভিযুক্তকেই শনাক্ত করেছিলেন বিলকিস। জানিয়েছিলেন, অভিযুক্তেরা সকলেই তাঁর পরিচিত। গত কয়েক বছর ধরে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের থেকে দুধ কিনতেন অপরাধীরা।২০১৭ সালের মে মাসে বম্বে হাই কোর্ট ১১ জন ধর্ষকের যাবজ্জীবন সাজা বহাল রাখে। ২০১৯ সালে গুজরাত সরকারকে বিলকিসের হাতে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় সু্প্রিম কোর্ট।

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest