প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চলতি সপ্তাহেই তাঁর মন্ত্রিসভা প্রসারিত করতে পারেন। বিজেপির শীর্ষ স্তরে তারই মহড়া চলছে। মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণে প্রায় দেড় ড’জন নতুন মন্ত্রীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের জন্য রাজ্যগুলিতে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হবে।
এরই মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধেয় প্রধানমন্ত্রী মোদীর বাসভবনে শীর্ষস্তরের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করা হয়েছে।মোদীর মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের সম্ভাবনার মাঝে অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং নারায়ণ রাণা-সহ বেশ কয়েকজন নেতাকে আজ দিল্লিতে ডাকা হয়েছে। একাধিক সাংসদ ও তিন নেতা আজই দিল্লি পৌঁছে যাচ্ছেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদলের খবর মেলার পর থেকেই জল্পনা চলছিল, বাংলা থেকে কারও ভাগ্যে পূর্ণমন্ত্রিত্বের শিকে ছিঁড়বে কি না। নামও ঘোরাফেরা করছিল কয়েকজনের – নিশীথ প্রামাণিক, লকেট চট্টোপাধ্যায়, শান্তনু ঠাকুর এমনকী দিলীপ ঘোষেরও। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর, বাংলা থেকে দু’জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নতুন সদস্য হচ্ছেন। কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক (Nisith Pramanik) এবং বনগাঁর সাংসদ, মতুয়া মহলের প্রতিনিধি শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)। নিশীথ প্রামাণিক এই মুহূর্তে দিল্লিতেই রয়েছেন। দিল্লির তলব পেয়ে তড়িঘড়ি রওনা দিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। সূত্রের খবর, লকেট চট্টোপাধ্যায়কেও (Locket Chattejee)ডেকে পাঠানো হয়েছে। রাষ্ট্রমন্ত্রির দায়িত্ব পেতে পারেন তিনি। রাতে তাঁরা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
নিশীথ প্রামাণিকের হাত ধরে উনিশের লোকসভায় উত্তরবঙ্গে ভাল ফল করেছিল বিজেপি (BJP)। তাই কোচবিহারের সাংসদের একটা আলাদা গুরুত্ব ছিলই। তিনি নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের বেশ পছন্দের ব্যক্তি। আর শরণার্থীদের স্থায়ী নাগরিকত্ব দান নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের যে স্ট্র্যাটেজি, তাতে মতুয়া মহলের গুরুত্ব অনেকটাই বেশি। বনগাঁর মতো মতুয়া (Motua) অধ্যুষিত এলাকা থেকে বিজেপির আসন ছিনিয়ে নেওয়ায় কদর বেড়েছে ঠাকুরবাড়ির সদস্য শান্তনু ঠাকুরের। এই দু’জনকে তাই মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের।
আরও পড়ুন: ভুয়ো আধিকারিক সনাতনের কাছে বিজেপি-র সদস্যপদের রশিদ !
বাংলার দুই সাংসদ বাদে মোদি ২.০’র (Modi Cabinet 2.0) মন্ত্রিসভায় নতুন করে যাঁরা ঠাঁই পেতে চলেছেন, তাঁদের সম্ভাব্য তালিকা –
- জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, মধ্যপ্রদেশ (BJP)
- নারায়ণ রানে, মহারাষ্ট্র (BJP)
- সুশীল মোদি, বিহার (BJP)
- সর্বানন্দ সোনেওয়াল, অসম (BJP)
- ভূপেন্দ্র যাদব, উত্তরপ্রদেশ (BJP)
- অনুপ্রিয়া প্যাটেল, উত্তরপ্রদেশ (Aapna Dal)
- পশুপতি পারস, বিহার (LJP)
- প্রীতম মুণ্ডে, মহারাষ্ট্র, (BJP)
এছাড়া সূত্রের খবর, বয়স্ক মন্ত্রীদের দায়িত্বভার কমানো হচ্ছে। যাঁরা বাদ পড়ছেন, তাঁদের ভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। অন্যদিকে, ২০২২-এ উত্তরপ্রদেশে নির্বাচন। গোবলয়ের সর্ববৃহৎ বিধানসভা আসন বিশিষ্ট রাজ্যে তাই বাড়তি নজর বিজেপির। তাই সেখান থেকে একাধিক সদস্যকে মন্ত্রিসভায় জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে। সূত্রের খবর এমনই।
উল্লেখ্য, মোট ৫৭ জন মন্ত্রী নিয়ে মোদী সরকারের দ্বিতীয় মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছিল। এর মধ্যে ২৪ জন ক্যাবিনেট, ৯ টি স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং ২৪ জন প্রতিমন্ত্রী। তবে এর মধ্যে অনেক মন্ত্রীর একাধিক মন্ত্রক রয়েছে। শিবসেনা ও আকালি দলকে বিচ্ছিন্ন করার পরে এবং রাম বিলাস পাসওয়ানের মৃত্যুর পরে মন্ত্রিপরিষদের মন্ত্রীর সংখ্যা নেমে এসেছে ২১-এ। একজন প্রতিমন্ত্রীও মারা গিয়েছেন। সুতরাং বর্তমানে মাত্র ৫৩ জন মন্ত্রী রয়েছেন।
আরও পড়ুন: অফলাইন ক্লাস শুরু ভাবনা, একাধিক রাজ্যের বিধি মেনে খুলছে স্কুল