দিনকয়েকের ব্যবধানে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল কেন্দ্রীয় সরকার। গত সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র জানিয়েছিল, নতুন করে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারার (রাষ্ট্রদ্রোহ আইন) পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন নেই। যদিও সোমবার শীর্ষ আদালতে নরেন্দ্র মোদী সরকার জানাল, স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র আগে জানিয়েছিল যে, রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বাতিলে তাদের সায় নেই। সুপ্রিম কোর্টে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল জানান, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের অন্তর্গত ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ধারা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা প্রয়োজন। মামলার শুনানি-পর্বে বেণুগোপাল সাম্প্রতিক কালে কয়েকটি ক্ষেত্রে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের অপপ্রয়োগের কথাও বলেছেন। তাঁর অভিযোগ, মহারাষ্ট্রে হনুমান চালিশা পাঠের জন্যও অযৌক্তিক ভাবে ১২৪(এ) ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। যদিও কৃষক আন্দোলন-পর্বে হরিয়ানায় বিজেপি নেতা তথা ডেপুটি স্পিকারের গাড়ির কাচ ভাঙার জন্য পুলিশ ১০০ জন কৃষকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা সম্পর্কে কিছু বলেননি তিনি।
আরও পড়ুন: এখনই নয়, ৩-৪ মাসের মধ্যে দল গড়ার ইঙ্গিত পিকের, আপাতত তিন হাজার কিমি পদযাত্রা
গত বছর রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ‘অপব্যবহার’ -এর দিক উল্লেখ সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে প্রশ্ন করেছিল, এক সময় যে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বলে মহাত্মা গান্ধী এবং বাল গঙ্গাধর তিলকের মতো নেতাদের নিপীড়ন করা হয়, সেই ‘ঔপনিবেশিক’ আইন কেন এখনও ব্যবহার হবে। সরকারের হাতে এই আইনের অপব্যবহারের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘রাষ্ট্রদ্রোহ আইন হল কাঠের মিস্ত্রির হাতে করাত তুলে দেওয়ার মতো! কাঠের বদলে বন কেটে আনে সে!’’
বহু পুরনো আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। সেই পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে হলফনামা পেশ করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে কেন্দ্র আর্জি জানিয়েছে যে যতক্ষণ না ভারত সরকারের পুনর্বিবেচনার প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ যেন সেই বিষয়ে সময় ব্যয় না করে শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন: Rupee Hits Low: ডলারের তুলনায় রেকর্ড পতন টাকার! রাত থেকেই কি আরও দামি পেট্রল-ডিজেল?