সাম্প্রদায়িক অশান্তিতে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ, ভারতে আইনি রক্ষাকবচ হারাল টুইটার

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

সাম্প্রদায়িক অশান্তিতে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগে ভারতে আইনি রক্ষাকবচ হারাল মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটার। নয়া ডিজিটাল নজরদারি বিধি নিয়ে এমনিতেই কেন্দ্রের সঙ্গে টানাপড়েন চলছিল তাদের। তার উপর উত্তরপ্রদেশে ঘটে যাওয়া এক প্রবীণ ব্যক্তিকে নিগ্রহের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। সেই নিয়ে মঙ্গলবার রাতেই যোগীরাজ্যে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তার প্রেক্ষিতেই তাদের আইনি রক্ষাকবচ তুলে নেওয়া হয়েছে বলে দিল্লি সূত্রে খবর, যাতে ফৌজদারি ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং সেই মতো পদক্ষেপ করা যায়।

জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media) প্ল্যাটফর্মগুলির মধ্যে একমাত্র টুইটারই নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নিয়মের শর্তপূরণ করেনি। এমনটাই অভিযোগ এনেছিল ভারত সরকার। যে নীতি অনুযায়ী, ভারতের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলিকে চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার, রেসিডেন্ট গ্রিভান্স অফিসার নিয়োগ করতে হবে। কিন্তু প্রথম থেকেই সেই নয়া নীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে টুইটার। গত ৫ জুন কেন্দ্রের চূড়ান্ত নোটিশের পর অবশ্য আগের অবস্থান থেকে কিছুটা পিছিয়ে আসে সংস্থা। সুর নরম করে মাইক্রো ব্লগিং সাইট। জানানো হয় নয়া নীতি মেনে চলা হবে।

এরপর কেন্দ্রের তরফে সংস্থাকে এক সপ্তাহের মধ্যে শর্ত পূরণ করার কথা জানানো হয়। সেইমতো আশ্বাসও দেয় সংস্থাটি। সেই ঘটনার রেশ ধরে মঙ্গলবার টুইটারের তরফে জানানো হয়, নয়া নীতি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। নিয়োগ করা হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসারও। আশ্বাস দেওয়া হয়, ‘নয়া নীতি পূরণের জন্য সবরকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে টুইটার।’ তবে রক্ষাকবচ বাতিলের ফলে এখন যদি আদালতে কোনও মামলা হয়, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় সুরক্ষা পাবে না টুইটার। কোনও মামলা দায়ের হলে টুইটার নিজেদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দেখাতে পারবে না। এবরা থেকে টুইটার কেবল ডিজিটাল সাইট হয়েই থাকবে এ দেশে।

আরও পড়ুন: যেতেই হবে না আরটিও অফিসে, ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পাবেন খুব সহজে

কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছে, সরকারি বিধি লঙ্ঘন করায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে রক্ষাকবচ হারিয়েছে টুইটার। এ বার থেকে যে কোনও ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাবে। নেটমাধ্যমে প্রকাশিত যাবতীয় লেখালেখি এবং ভিডিয়োর উৎস কেন্দ্রকে জানাতে হবে বলে টুইটার, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইউটিউবের মতো সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। একই সঙ্গে ভারতে বিশেষ আধিকারিক নিয়োগ করতে বলা হয়েছে তাদের, যাঁর হাতে আপত্তিকর পোস্টের উপর নজরদারি এবং তা সরানোর দায়িত্ব থাকবে। সেই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে টানাপড়েন চলছিল বেশ কিছু দিম ধরেই। তার মধ্যেই টুইটারের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ।

কেন্দ্রীয় বিধিনিষেধ বাক স্বাধীনতার পরিপন্থী বলে এর আগে সাফ জানিয়েছিলেন টুইটার কর্তৃপক্ষ। তার পরেও ভারতে এক জন অন্তর্বর্তীকালীন আধিকারিক নিয়োগ করা হয়েছে বলে মঙ্গলবারই জানায় তারা। যদিও সরকারের দাবি, গত মাসে চালু হওয়া নয়া বিধিনিষেধ অন্য সংস্থাগুলি মেনে নিলেও, একমাত্র টুইটারই বেঁকে বসেছে।

তবে মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে উত্তরপ্রদেশে দায়ের হওয়া যে মামলার কথা বলা হচ্ছে, তা নিয়েও বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে। সম্প্রতি একদল দুষ্কৃতীর হাতে আক্রান্ত হন সুফি আবদুল সামাদ নামের এক প্রৌঢ়। সেই ঘটনার ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ ওঠে, মাদুলি এবং কবচ বিক্রির করার দায়ে ওই প্রৌঢ়কে ‘বন্দে মাতরম’ এবং ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে বাধ্য করা করে দুষ্কৃতীরা। এমনকি তাঁর দাড়িও কেটে নেওয়া হয়।

এই ঘটনায় গত কয়েক দিন ধরেই সরগরম নেটমাধ্যম। বিষয়টির তীব্র নিন্দা করেছেন বিশিষ্ট জনেরা। সংবাদমাধ্যমেও উত্তরপ্রদেশের শাসনব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু ইচ্ছাকৃত ভাবে এই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়া হচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তাদের দাবি, ভুল বুঝিয়ে কবচ বিক্রির জন্য ওই প্রৌঢ়ের উপর রেগেছিলেন অনেকে। এটা কোনও সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা নয়। বরং হিন্দু-মুসলিম, দু’পক্ষের ছ’জন মিলে হামলা চালান।

উত্তরপ্রদেশের পুলিশের অভিযোগ, এই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার জন্য দায়ী টুইটার কর্তৃপক্ষই। যদিও লিখিত বিবৃতিতে সেই অভিযোগ খারিজ করে দেয় টুইটার, যা ১৪ জুন উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সকলের সামনে তুলেও ধরে। কিন্তু তাদের দাবি, সতর্ক করা সত্ত্বেও ওই ঘটনায় সাম্প্রদায়িক মন্তব্যগুলি মোছেনি টুইটার। নিগ্রহের ওই ভিডিয়োটিকে বিকৃত বলে সতর্কবার্তাও দেয়নি, তাই তাদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ব্যবস্থা নেওয়াই উচিত। সেই মতো টুইটারের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক অশান্তিতে ইন্ধন জোগানোর মামলা দায়ের করে তারা।

আরও পড়ুন: পদচ্যুত নেতানিয়াহু, ইসরাইলের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে টুইটে যে বার্তা দিলেন মোদী

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest