হিন্দু ধর্মগুরু কালীচরণ মহারাজের এক মন্তব্যের জেরে রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কালীচরণ মহারাজ গান্ধীর হত্যা প্রসঙ্গে নাথুরাম গডসের (Nathuram Godse) প্রশংসা করেন।
ধর্মীয় মঞ্চ থেকে মোহনদাস গান্ধীকে কটু কথা বলেই ক্ষান্ত থাকেননি তথাকথিত ধর্মগুরু কালীচরণ মহারাজ, বলেছেন তাঁকে হত্যা করে প্রকৃত দেশপ্রেমের কাজ করেছেন নাথুরাম গডসে। হিন্দুত্ববাদী এই সন্তের কথায়, গান্ধীই দেশ ভাগ করিয়েছেন এবং তাঁর জন্যই ভারত হিন্দু রাষ্ট্র হয়ে উঠতে পারেনি। অন্য ধর্মকে বিঁধেও নানা আক্রমণাত্মক কথা বলেছেন কালীচরণ।
উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার হরিদ্বারের বিষয়টিকে গুরুত্ব না-দিলেও কংগ্রেস শাসিত ছত্তীসগঢ় সরকার এই সন্তের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরির চেষ্টা এবং হিংসায় উস্কানি দেওয়ার দায়ে এফআইআর করেছে। সন্তটির যে রাজ্যে আশ্রম আছে, সেই মহারাষ্ট্রের অ-বিজেপি জোট সরকারও তাঁর মন্তব্যের নিন্দা করে জানিয়েছে, ছাড় দেওয়া হবে না এঁকে।
আরও পড়ুন: ‘মুসলিম-খ্রিস্টানদের পুনরায় হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনা হবে’ বিতর্কিত মন্তব্য বিজেপি সাংসদের
রবিবার রায়পুরের রাবণভাটা মাঠে একটি ধর্ম সংসদ ছিল। সেখানেই গডম্যান বলেন, “মহাত্মা গান্ধীকে খুন করার জন্য আমি নাথুরাম গডসেকে কুর্ণিশ জানাই।” এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। দু’দিন আগে খবরের শিরোনামে আসে হরিদ্বারের আরও একটি হিন্দুসভাও। যেখানে সংখ্যালঘু নিধনের বার্তা দেওয়া হয়েছিল। গোটা বিষয়ে উদ্বিগ্ন অনেকেই। এই অবস্থায় দেশের ৭৬ জন আইনজীবী প্রধান বিচারপতি এনভি রামানাকে চিঠি লিখলেন৷ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালতে স্বতঃপ্রণোদিত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা৷
রাহুল গান্ধী এ দিন হিন্দিতে মোহনদাস গাঁধীরই একটি মন্তব্য টুইট করেছেন। তার সারমর্ম— শরীরকে বেড়িতে বন্দি করা যায়, যন্ত্রণা দিয়ে কাউকে শেষও করে দেওয়া যায়। কিন্তু মতাদর্শকে বন্দি করা যায় না। মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী ও এনসিপি নেতা নবাব মালিক টুইটে বলেছেন, ‘গাঁধীকে অপমান করা মানে দেশকে অসম্মান করা।’ মহারাষ্ট্রের আকোলাতেই কালীচরণের আশ্রম। সেখানকার উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার বলেছেন, “ছাড়া হবে না এই সন্তকে। কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে এই সাম্প্রদায়িক উস্কানির।” কংগ্রেস নেতারাও কালীচরণকে তুলোধোনা করছেন। কিন্তু বিজেপি চুপ।
আরও পড়ুন: মোদীর সুশাসনের তালিকায় শীর্ষে গুজরাত, সবার নীচে বাংলা! মনগড়া রিপোর্ট বলল তৃণমূল