গণেশ পুজো উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বাড়িতে যাওয়া নিয়ে শুরু বিতর্ক। সমাজমাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কেন প্রধানমন্ত্রীকে পুজোয় আমন্ত্রণ জানাতে গেলেন প্রধান বিচারপতি, যেখানে দু’জনে সংবিধানের দুটি স্তম্ভের শীর্ষে অবস্থান করছেন। দু’জনেরই ব্যক্তিগত সম্পর্কের ঊর্ধ্বে থাকাই বাঞ্ছণীয়।
উল্লেখ্য, বুধবার সন্ধেয় প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বাড়িতে গণেশ পুজোয় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন সস্ত্রীক বিচারপতি চন্দ্রচূড়। তারপর একসঙ্গে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়, তাঁর স্ত্রী কল্পনা দাস এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সিদ্ধিদাতার আরতিও করতে দেখা যায়। যদিও এর পর বেশিক্ষণ প্রধান বিচারপতির বাড়িতে থাকেননি মোদি। সৌজন্য সাক্ষাৎ সেরে বেরিয়ে যান বলেই খবর।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধান বিচারপতির ব্যক্তিগত পরিসরের ‘এই সৌজন্য’ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু করেছে। বর্ষীয়ান আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং বলছেন, “খোদ দেশের প্রধান বিচারপতি প্রশাসন এবং বিচারব্যবস্থার মধ্যে দূরত্বের সঙ্গে আপস করেছেন। এই ঘটনায় প্রধান বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে আর আস্থা রাখতে পারছি না। বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশ্যে এই ঘটনার নিন্দা করা উচিত।” আর এক আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলছেন, “বিচারপতির উচিত নিজের পদমর্যাদার খেয়াল রাখা উচিত। এমন কোনও কাজ করা উচিত নয়, যাতে তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।”
#WATCH | PM #NarendraModi visited CJI #DYChandrachud‘s residence in #NewDelhi for #Ganpati poojan@narendramodi pic.twitter.com/LmIYLQSjNy
— Hindustan Times (@htTweets) September 11, 2024
আসরে নেমেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও। শিব সেনার উদ্ধব শিবিরের নেতা সঞ্জয় রাউত বলছেন, ‘এই ধরনের সাক্ষাৎ সংশয় তৈরি করেছে। তাঁর সাফ কথা, শিব সেনার প্রতীক সংক্রান্ত যে মামলা প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে চলছে, সেটা থেকে তাঁর নিজেকে সরিয়ে নেওয়া উচিত।’ তাঁর সাফ কথা, বিচারপতির সঙ্গে বিজেপির যোগাযোগ প্রকাশ্যেই দৃশ্যমান। রাউতের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান। তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে গুচ্ছ মামলা সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। এক অর্থে প্রধানমন্ত্রী সরকারি মামলার বাদি। তিনি কী করে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে যেতে পারেন? প্রধান বিচারপতিই বা কেন আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করে নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ করেছেন।
প্রধান বিচারপতির এসব থেকে বিরত থাকা উচিত। আরজেডি নেতা মনোজ ঝা’ও বলছেন, ‘গণেশপুজো তো ব্যক্তিগত বিষয়। সেখানে এভাবে ক্যামেরা নিয়ে গিয়ে যে ছবি প্রকাশ করেছে, সেটা অস্বস্তিকর বার্তা দেয়।’