সিপিএম-বিজেপি সংঘর্ষে বুধবার কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হল ত্রিপুরা। সোমবার ধনপুরে দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষের পর বুধবার প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছিল শাসক দল। ওই মিছিল থেকেই ফের সংঘর্ষ বাঁধল রাজধানী আগরতলায়।
সিপিএমের অভিযোগ, ভানু স্মৃতি ভবন, দশরথ ভবন-সহ একাধিক দলীয় কার্যালয় এবং প্রচুর গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছেন বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকরা। বিশালগড়ে সিপিএম পার্টি অফিসের গেট প্রথমে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়, তার পর ভিতরে ঢুকে আগুন লাগানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, পাশেই সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থপ্রতিম মজুমদারের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এ ছাড়াও আগরতলায় সংবাদমাধ্যমের অফিসেও হামলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে একাধিক সংবাদমাধ্যমের উপর হামলা হয়।
বুধবার ওই ঘটনার নিন্দা করে ত্রিপুরার বিপ্লব দেবের সরকারকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন রাজ্যের শাসকদলের নেতা-নেত্রীরা। পাশাপাশি, ত্রিপুরা থেকে বিজেপি সরকারের উৎখাতে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সংবাদমাধ্যমের অফিসেও যান রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ তথা অধুনা তৃণমূলনেত্রী সুস্মিতা দেব। পরে একটি সাংবাদিক সম্মেলনও করেন তাঁরা। তাতে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা। ঋতব্রত বলেন, “ত্রিপুরায় তিরিশের দশকের জার্মানির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে সেখানকার বিজেপি সরকার। যে সময় গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাও ছিল না। সংবাদমাধ্যমের উপর আক্রমণের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাই।”
পশ্চিমবঙ্গে টানা তিন বার ক্ষমতা দখলের পর এ বার অসম, ত্রিপুরার মতো দেশের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতেও জোড়াফুলের কর্তৃত্ব পেতে প্রচেষ্টা শুরু করেছে তৃণমূল। তবে সেই প্রচেষ্টায় ওই রাজ্যে গিয়ে বার বার তৃণমূল নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা বিজেপি-র হামলার মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ। হামলা হয়েছিল অভিষেকের কনভয়েও। বুধবার সংবাদমাধ্যমের উপর হামলার ঘটনা নিয়ে আসরে নেমেছেন অভিষেকও। এই ঘটনায় বিপ্লব দেবের সরকারকে সরাসরি আক্রমণ করেন তিনি।