তৃণমূল সাংসদদের লখিমপুর (Lakhimpur) যাওয়া নিয়ে এরাজ্যের শাসকদলের দিকে পরোক্ষে কটাক্ষের ‘ইট’টি প্রথমে ছুঁড়েছিলেন রাহুল গান্ধীই। রাহুলের ছোঁড়া সেই ইটের জবাব পাটকেল দিয়ে দিল তৃণমূল। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে টুইট করলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সাফ জানিয়ে দিলেন, রাহুলের (Rahul Gandhi) মতো পার্ট-টাইম রাজনীতিবিদদের কাছে তাঁরা কোনও জ্ঞান শুনবেন না। কারণ, কংগ্রেস যেখানে নিজেদের গড়ে বিজেপিকে হারাতে ব্যর্থ হচ্ছে, সেখানে তৃণমূল বাংলায় বিজেপিকে হারাচ্ছে।
1/2- Rahul Gandhi should know:@AITCofficial MPs are in Lakhimpur after a long fight.
In Tripura, BJP imposed 144 throughout Agartala only to prevent @abhishekaitc.
INC is a looser in their traditional UP incldng Amethi. But TMC defeated BJP in Bengal.
INC made Punjab a mess— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) October 6, 2021
2/2:
Rahul Gandhi should not try to confuse people by distorting facts.TMC will not accept any loose non political comment from any part time politician who has failed to combat BJP.
We respect INC. We are in favour of non BJP unity.
We are on roads, not in tweeter only.
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) October 6, 2021
প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর পর লখিমপুরে যেতে চেয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীও। তবে প্রথমে যোগী প্রশাসনের তরফে তাঁকে লখিমপুরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। বুধবার সকালেই সাংবাদিক বৈঠক করে রাহুল গান্ধী তোপ দাগেন বিজেপি সরকারকে। তিনি অভিযোগ করেন, কৃষকদের ময়নাতদন্ত ঠিক করে হয়নি। পাশাপাশি এই ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হামলা’ বলে আখ্যা দেন কংগ্রেস সাংসদ। রাহুলের অভিযোগ, ‘কৃষকদের গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে, হত্যা করা হচ্ছে। এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও তাঁর ছেলের নাম সামনে এসেছে এই ঘটনায়। এভাবে কৃষকদের উপর পরিকল্পিত হামলা চালানো হচ্ছে।’
লখিমপুরে ‘এক যাত্রায় পৃথক ফল’ কেন সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন রাহুল (Rahul Gandhi)। তিনি বলেন,”সবাইকে আটকানো হয়নি। দু’টি দল গতকাল গিয়েছিল- টিএমসি ও ভীম আর্মি। শুধু আমাদের আটকানো হয়েছিল। বাকিদের যেতে দিয়েছে। আমরা কী ভুল করেছি?” কংগ্রেস নেতার অভিযোগের জবাব দিয়ে তৃণমূল সাংসদরা জানিয়ে দিলেন, অনুমতি নয়, নিজেদের চেষ্টাতেই লখিমপুর পৌঁছেছেন তাঁরা (TMC replies to Congress allegations on Lakhimpur visit)৷
তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার এবং সুস্মিতা দেব।কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, “আমরা কোনও অনুমতি নিয়ে ঘটনাস্থলে যাইনি। আর্ত ও পীড়িত মানুষের পাশে থাকার জন্য অনুমতির প্রয়োজন হয় না। যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চেনেন, তাঁর রাজনীতি জানেন তাঁরা এ কথা বলবেন না। যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছেন। রাহুল গান্ধির উচিত আরেকটু রাজনৈতিক পরিপক্কতা নিয়ে কথা বলা।”
একই সুরে বলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সংসদ সুস্মিতা দেব। তাঁর কথায়, “কংগ্রেসের একটি চিঠি দেখলাম। যাতে লেখা হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদের কেন অনুমতি দেওয়া হয়েছে, কংগ্রেসকে কেন অনুমতি দেওয়া হয়নি? এই তথ্যটা ভুল। আমি কংগ্রেসকে একটু শুধরে দিতে চাইবো, তৃণমূল কংগ্রেস অনুমতি নিয়ে লখিমপুর খেরি যায়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা দলের ৫ জন সাংসদ দু’ভাগে ভাগ হয়ে লখিমপুর খেরি গিয়েছিলাম। তিন জন সাংসদ গিয়েছিলেন দিল্লি থেকে সড়ক পথে। আমি এবং কাকলি ঘোষ দস্তিদার কলকাতা থেকে লখনউ বিমানবন্দর হয়ে গিয়েছিলাম। কংগ্রেস ভুল বুঝেছে ,আমরা অনুমতি চাইনি আর অনুমতি পাইওনি। বাংলায় আমাদের সরকার থাকলেও কেন্দ্রে আমাদের সরকার নেই। আমরা বিরোধী দল। বিরোধীদের রাজনৈতিক বিরোধিতা করার অধিকার রয়েছে।”
সুস্মিতার কথায়, “হাথরসের ঘটনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। উত্তর প্রদেশ সরকারকে বিশ্বাস করা যায় না তারা যা কিছু করতে পারে তাই আগাম সতর্কতা ছিলাম আমরা। যাতায়াতের পথে কোথাও আমরা সাংসদ পরিচয় দিইনি। পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হলে আমরা আধার কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখিয়েছি। অতএব সাংসদ হিসেবে বা কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা চিহ্নিত হইনি।”
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিরোধী শিবিরের থেকে সরকারের বিরোধিতা করতে হলে এটাই রাজনৈতিক কৌশল হওয়া উচিত। যা কংগ্রেস করতে পারেনি। এদিন সুস্মিতা বলেন, “আমরা খুশি তার কারণ তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি যতক্ষণ পৌঁছয়নি ততক্ষণ কৃষকদের বক্তব্য সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রকাশ পায়নি। কৃষকদেরকে এখনও ক্ষোভ রয়েছে তা প্রকাশ পায় তৃণমূল কংগ্রেস যাওয়ার পরে।”