ভারতে উত্পাদন স্থগিতকরণের ঘোষণা করল ফোর্ড। বিপুল লোকসানের বোঝা, নিম্নমুখী চাহিদার কারণে এই সিদ্ধান্ত। গত বেশ কয়েক মাস ধরেই এ বিষয়ে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল। জানা গিয়েছে ফোর্ড ধীরে ধীরে তার সানন্দ এবং মারাইমালাইয়ের কারখানায় উত্পাদন বন্ধ করে দেবে। পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হতে প্রায় এক বছর সময় লাগতে পারে।
ফোর্ড ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট ও এমডি অনুরাগ মেহরোত্রা বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে জমতে থাকা লোকসান এবং ভারতের গাড়ির বাজারে প্রত্যাশিত বৃদ্ধির অভাবের কারণে এই সিদ্ধান্ত।’ ভারতে গত ১০ বছরে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের লোকসান হয়েছে সংস্থার।ধীরে ধীরে ফিগো, অ্যাসপায়ার, ইকোস্পোর্ট এবং এনডেয়াভর-এর মতো গাড়ির বিক্রি বন্ধ করে দেবে সংস্থা। তবে দামি মাসল কার মাসট্যাঙ বা ম্যাক-ই ইলেকট্রিক গাড়ি বিক্রি করবে সংস্থা। সেগুলি আসবে মার্কিন মুলুক থেকে।
আরও পড়ুন: ছেলেরা রোজগেরে – মেয়েরা গৃহবধূ! মত ভাগবতের, তালিবানি ভাবনা – বললেন দিগ্বিজয় সিং
সিঙ্গুর থেকে টাটা মোটরস ন্যানো তৈরির কারখানা সরানোর পরে নরেন্দ্র মোদী সাদর অভ্যর্থনা জানিয়ে তাঁদের গুজরাতের সানন্দে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই সানন্দেই আমেরিকার ফোর্ড মোটর কারখানা তৈরির পরে ২০১১-র জুলাইয়ে মোদী সগর্বে ঘোষণা করেছিলেন, আমেরিকার বাইরে এই সংস্থার সব থেকে বড় কারখানার জন্য গুজরাত গর্বিত। এর ফলে ৩৬ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ১০ বছর পরে সেই ফোর্ড মোটরই এ দেশে গাড়ি তৈরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে সমালোচনার মুখে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদের অভিযোগ, এক দিকে বেকারত্ব বাড়ছে। অন্য দিকে মোদী সরকারের নীতির ব্যর্থতায় বন্ধ হচ্ছে কারখানা। ডিলারদের অভিযোগ ছিল, সব মিলিয়ে কাজ হারানোর আশঙ্কা ৪০,০০০-এরও বেশি কর্মীর।
সানন্দের পাশাপাশি চেন্নাইয়েও কারখানা রয়েছে ফোর্ডের। সানন্দের কারখানায় অন্য দেশের গাড়ির জন্য ইঞ্জিন তৈরি হলেও, চেন্নাইয়ের কারখানা পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে। সেখানে কর্মী সংখ্যা প্রায় ২৬০০ জন।
বৃহস্পতিবারই সরকারি পরিসংখ্যান জানিয়েছে, গত অক্টোবর-ডিসেম্বরে দেশে বেকারত্বের হার ১০ শতাংশের উপরে ছিল। রাহুল গান্ধী সে দিকে আঙুল তুলে কটাক্ষ করেছেন, দেশের ‘বিকাশ’ করে ‘আত্মনির্ভর’ অন্ধকার নগরী তৈরি করে ফেলেছেন মোদী। কারখানা বন্ধের জন্য বিক্রির অভাবকেই দায়ী করেছে ফোর্ড। কংগ্রেস মুখপাত্র জয়বীর শেরগিল বলেন, “অগস্ট মাসেও বেকারত্বের হার ৮ শতাংশের উপরে ছিল। এ দিকে ফোর্ডের মতো সংস্থা কারখানা বন্ধ করছে। বাজারে চাহিদা নেই বলে অভিযোগ করছে। এর জন্য জ্বালানির আকাশছোঁয়া দামও দায়ী। এটাই ভোটারদের জন্য বিজেপির রিটার্ন গিফ্ট।”
এর আগে জেনারেল মোটরস এবং হার্লে ডেভিডসন ভারতে গাড়ি তৈরি বন্ধ করেছিল। শিবসেনার সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী বলেন, “গত ফেব্রুয়ারিতেই কেন্দ্র সংসদে জানিয়েছিল, পাঁচটি গাড়ি তৈরির সংস্থা গত কয়েক বছরে ভারত থেকে বিদায় নিয়েছে। সেই তালিকায় এ বার যোগ দিল ফোর্ডও।”
আরও পড়ুন: BJP Chief Minister: ৬ মাসে চতুর্থ মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা! বিজেপিতে সব ঠিক আছে তো- প্রশ্ন জনগণের