ওয়েব ডেস্ক: করোনা মহামারির মধ্যেই বাতাসে যুদ্ধের গন্ধ। নেপথ্যে আগ্রাসী চিন। যুদ্ধের হুংকার দিয়ে মঙ্গলবার দেশের সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ করোনা বিধিনিষেধ দূরে সরিয়ে লাজফৌজকে অবিলম্বে মহড়া শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
চিন লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার (এলএসি) ওপারে সেনা ও যুদ্ধাস্ত্র মোতায়েন বাড়ালে ভারতও পাল্লা দিয়ে সেনা মোতায়েন বাড়াবে। আজ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর শীর্ষকর্তাদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভারতের যে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ নিয়ে চিনা সেনা আপত্তি তুলেছে, তা-ও চালিয়ে যাওয়া হবে।
আরও পড়ুন: গাঁজা সেবনে কমতে পারে মারণ ভাইরাস করোনার প্রকোপ, দাবি কানাডার বিজ্ঞানীদের
চিনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রকাশিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় লালফৌজকে আরও শক্তিশালী ও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে প্রশিক্ষণ এই মুহূর্তে খুব প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় বদানুবাদ লক্ষ্য করা গিয়েছে ভারত এবং চিন সেনার মধ্যে। উত্তেজনা তৈরি হয়েছে দুই দেশের সীমান্তের তিনটি সেক্টরেই। ওয়েস্টার্ন সেক্টরে লাদাখে রাস্তা তৈরি নিয়ে আপত্তি তোলে চিন। অন্যদিকে লাদাখের প্যাঙ্গং লেক, উত্তর সিকিম সীমান্তে ভারতীয় সেনা এবং পিপল’স লিবারেশন আর্মির নিরাপত্তারক্ষীর মধ্যে মুখোমুখি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়ত ও তিন সামরিক বাহিনীর কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার আগে মোদী ও রাজনাথ সামরিক বাহিনীর কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রীর কথা হয়েছে। আগামিকাল সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজমুকুন্দ নরবণেও বাহিনীর শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
মে রাতে পূর্ব লাদাখের প্যাঙ্গং লেকের কাছে চিন ভারতীয় সেনার নজরদারি বাহিনীকে বাধা দেয়। তার পর থেকেই ওই দু’টি এলাকায় দু’দেশের সেনা পরস্পরের চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। পূর্ব ভাগে বা ইস্টার্ন সেক্টরের উত্তর সিকিমেও এ মাসের শুরুতে দুই সেনাবাহিনীর সংঘাত বেধেছে। সাধারণত সেন্ট্রাল সেক্টরের উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশের অংশ শান্ত থাকে। কিন্তু সেখানেও বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে।
রাজনাথের সঙ্গে সামরিক কর্তাদের বৈঠকে এই পরিস্থিতির পর্যালোচনা হয়। বিপিন রাওয়ত ও তিন সামরিক বাহিনীর প্রধানরা বৈঠকে হাজির ছিলেন। আলোচনা চলে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে। ঠিক হয়েছে, এই বিবাদের মীমাংসা একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই সম্ভব। কূটনৈতিক স্তরেই এর সমাধান সম্ভব।
চিন যদি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে আরও বেশি সেনা ও যুদ্ধাস্ত্র মোতায়েন করে, ভারতও পাল্লা দিয়ে সেনা-যুদ্ধাস্ত্র মোতায়েন করবে। সেনা সূত্রের খবর, উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে চিন প্রায় হাজার দশেক সেনা মোতায়েন করেছে। তিব্বতের গারি গুনশা ঘাঁটিতে চলছে নির্মাণকাজ। সেখানে হাজির বেশ কিছু যুদ্ধবিমানও। গত কাল ভারত থেকে নিজেদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছে চিন।
আরও পড়ুন: বাতিল ট্রাম্পের করোনা দাওয়াই! হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ট্রায়াল স্থগিত WHO-র