আশঙ্কাই সত্যি, প্রায় চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ সংকোচন জিডিপিতে

সোমবার জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর জানিয়ে দিল, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে অর্থনীতির সঙ্কোচন হয়েছে ৭.৩ শতাংশ। এই ফল বিগত চার দশকের সবথেকে খারাপ।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

করোনা (Coronavirus) অতিমারীর বড় ধাক্কা যে দেশের অর্থনীতিতে লাগবে, তা জানাই ছিল। কারণ, এই সমস্যা কেবল ভারতের নয়। গোটা বিশ্বের। ব্যতিক্রম কেবল চিন। কিন্তু ধাক্কার পরিমাণ ঠিক কতটা, তা নিয়ে চলছিল জল্পনা। সোমবার জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর জানিয়ে দিল, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে অর্থনীতির সঙ্কোচন হয়েছে ৭.৩ শতাংশ। এই ফল বিগত চার দশকের সবথেকে খারাপ।

করোনার ধাক্কায় গত অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে (First Quarter) (এপ্রিল, ’২০ থেকে জুন, ’২০) ভারতের জিডিপি বা মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন রেকর্ড ২৪.৩৮ শতাংশ সংকুচিত হয়। পরবর্তী সময় পর্যায়ক্রমে উন্নতির পর গত অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে (জানুয়ারি, ’২১ থেকে মার্চ, ’২১) জিডিপি বৃদ্ধির হার দাঁড়ায় ১.৬ শতাংশ। গত জুলাইয়ে আনলক পর্ব বা নিউ নর্মাল পর্ব শুরু হওয়ার পর থেকে অর্থনীতির চাকা ধীরে ধীরে ঘুরতে শুরু করে। জুলাই, ’২০ থেকে সেপ্টেম্বর, ’২০ অর্থাৎ গত অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে জিডিপি (GDP) বৃদ্ধির হার ছিল ৭.৫ শতাংশ। যা যথেষ্ট ভাল বলেই মনে করা হচ্ছে, তৎকালীন নিউ নর্মাল পরিস্থিতির নিরিখে।

আরও পড়ুন : আপনার নামে কেউ মোবাইল সিম কার্ড ব্যবহার করছে? কিভাবে জানবেন

২০১১-২২ অর্থবর্ষ থেকে জিডিপি বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বিঘ্নিত হয়েছে করোনার জেরে। প্রথম সংশোধনী হিসেব অনুযায়ী ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১৪৫.৬৯ লক্ষ কোটি টাকা। যা প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী ২০২০-২১ অর্থবর্ষ কমে হয়েছে ১৩৫.১৩ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ সঙ্কোচন হয়েছে ৭.৩ শতাংশ। উল্লেখ্য, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে জিডিপি বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল মাত্র ৪ শতাংশ। যা তার আগের ১১ বছরের মধ্যে সব থেকে কম।

অর্থনীতিবিদদের মনে আশঙ্কা তৈরি করছে গত অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকের জিডিপির ফল। চলতি ক্যালেন্ডার বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। সমস্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, কারখানা, অফিস খোলা ছিল। সর্বত্রই কাজ হয়েছে স্বাভাবিক ছন্দে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও জিডিপি বৃদ্ধির হার মাত্র ১.৬ শতাংশ। যা যথেষ্ট উদ্বেগের।

অর্থনীতিবিদদের একাংশ মনে করছেন, এই সময় সব খোলা থাকলেও, ব্যবসা এবং উৎপাদন স্বাভাবিক গতি পায়নি। কারণ, করোনা অতিমারীর জেরে বহু মানুষ রোজগার হারিয়েছেন। বহু মানুষের আয় কমেছে। সবমিলিয়ে সাধারণ মানুষের আর্থিক সংকট বেড়েছে অনেকটাই। সঙ্গে ছিল করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা। যা সাধারণ মানুষের মধ্যে হাতে নগদ টাকা রেখে দেওয়ার প্রবণতা বাড়িয়েছে। তাঁদের চাহিদা এবং ক্রয় ক্ষমতার ওপরই ব্যবসা ও উৎপাদনের গতিপ্রকৃতির সিংহভাগ নির্ভর করে। চতুর্থ ত্রৈমাসিকের ফলে সেই অনিশ্চয়তা এবং সংকটের ছবি স্পষ্ট।

জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের অনুমান চলতি ২০২১-২২ অর্থবর্ষে জিডিপি বৃদ্ধির হার হতে পারে আট শতাংশ। যা রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার (সাড়ে সাত শতাংশ) পূর্বাভাসের থেকেও ০.৫ শতাংশ বেশি। কিন্তু, দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভয়ংকর রূপ নিয়ে আছড়ে পড়ায় সংক্রমণ রুখতে প্রায় সব রাজ্যকে ৩০ থেকে ৪৫ দিনের লকডাউনের রাস্তায় হাঁটতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবর্ষ শেষে জিডিপির বৃদ্ধির পূর্বাভাস কতটা মিলবে তা নিয়ে আশঙ্কা থাকছেই। আশঙ্কা রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের অন্দরেও।

আরও পড়ুন : ‘পরিকল্পনা মতোই মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক বয়কট করেন’‌, টুইটে বিস্ফোরক দাবি রাজ্যপালের

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest