ভোডাফোন আইডিয়া (Vodafone Idea) সংস্থার শীর্ষপদ ছেড়ে দিলেন আদিত্য বিড়লা (Aditya Birla) গ্রুপের চেয়ারম্যান কুমারমঙ্গলম বিড়লা (Kumar Mangalam Birla)। বুধবার তিনি মোবাইল পরিষেবা সংস্থাটির নন-এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও নন-এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন।
দু’দিন আগে সামনে এসেছিল ভোডাফোন আইডিয়ায় (ভিআই) কুমার মঙ্গলম বিড়লার ২৭% অংশীদারি ছাড়তে চাওয়ার খবর। যা জানিয়ে গত জুনে ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবাকে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। তুলে ধরেছিলেন টেলিকম সংস্থাটির বেহাল আর্থিক দশার কথা। দেনায় জর্জরিত ভোডাফোন আইডিয়া লিমিটেড সংস্থাকে বাঁচাতে তাঁদের সম্পূর্ণ মালিকানা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হস্তান্তর করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিড়লা। আর বুধবার ভিআই-এর পর্ষদ থেকে সরেই গেলেন। নন-এগ্জ়িকিউটিভ চেয়ারম্যান এবং নন-এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর পদ থেকে বিড়লার সরে যাওয়ার আর্জি মেনে নেওয়া হয়েছে বলে জানাল সংস্থার পরিচালন পর্ষদ।
দীর্ঘদিন ধরেই বিনিয়োগকারী খুঁজছেন ভোডাফোন আইডিয়ার মালিকরা। কিন্তু দেনা, লোকসানের ভারে জর্জরিত সংস্থায় কেউই বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। মঙ্গলবার কুমারমঙ্গলমের সরকারকে লেখা চিঠি মিডিয়ায় ফাঁস হওয়ার পরেই এদিন রেকর্ড পতন হয় ভোডাফোন আইডিয়ার শেয়ার দরে। গত ৫২ সপ্তাহের মধ্যে এদিন ১০ শতাংশেরও বেশি পতন হয় শেয়ারটিতে। রাজীব গৌবাকে লেখা চিঠিতে কুমারমঙ্গলম আরও জানান, এই সংস্থা কিনতে বিদেশি কোনও সংস্থাও দোটানায় ভুগছে। বিশেষ করে চিনা শিল্পপতি বাদ দিয়ে অন্য কোনও দেশের শিল্পপতিই আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
আরও পড়ুন: Prashant Kishor: পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে সরলেন পিকে
কেন্দ্রীয় সরকারকে তাঁর অংশীদারিত্ব কেনার জন্য আবেদন জানিয়ে তিনি চিঠিতে আরও লিখেছিলেন, ”ভোডাফোন আইডিয়ার ২৭ কোটি ভারতীয় গ্রাহকের প্রতি কর্তব্যের খাতিরে আমি কোম্পানিতে আমার অংশীদারিত্ব সরকার বা দেশীয় আর্থিক সংস্থা বা অন্য যে কোনও মাধ্যমে সরকারের হাতে তুলে দিতে চাই।” যদিও তার প্রেক্ষিতে সরকারের তরফে কোনও জবাব দেওয়া হয়েছিল কি না তা জানা যায়নি। এর পরই তড়িঘড়ি সংস্থার শীর্ষপদ থেকে সরে দাঁড়ালেন কুমারমঙ্গলম।
এ দিন ভোডাফোন জানিয়েছে, কুমার মঙ্গলম সরার পরে আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে নন-এগ্জ়িকিউটিভ চেয়ারম্যান হয়েছেন হিমাংশু কাপানিয়া। যিনি বর্তমানে নন-এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর। এই গোষ্ঠীরই আর এক প্রতিনিধি সুশীল আগরওয়ালকে অতিরিক্ত ডিরেক্টর নিয়োগ করা হয়েছে।
এই ঘোষণা ২৭ কোটির বেশি গ্রাহকের মধ্যে নয়, কাঁপুনি ধরিয়েছে ব্যাঙ্কিং শিল্পেও। কারণ, শেষ পর্যন্ত ভোডাফোন ঝাঁপ বন্ধ করলে তাদের বিপুল ঋণ পরিণত হতে পারে অনুৎপাদক সম্পদে। যা ব্যাঙ্কের সঙ্কট বাড়াবে। পরিস্থিতি উদ্বেগের বলে জানিয়ে সম্প্রতি নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের এমডি-সিইও এস এস মল্লিকার্জুন রাও। প্রসঙ্গত, গত ৩১ মার্চের হিসেবে লিজ়ের দায় বাদে লাইসেন্স ও স্পেকট্রাম বাবদ খরচ, ঋণ মিলিয়ে ভোডাফোনের বকেয়া প্রায় ১.৮ লক্ষ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: আজ ত্রিপুরায় অভিষেক, তার আগেই আগরতলায় ছেঁড়া হল পোস্টার