লখিমপুর কাণ্ডের ফরেন্সিক রিপোর্ট ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। আর তাতে দেখা গিয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। মন্ত্রীর ছেলের বন্দু থেকেই যে গুলি চলেছিল, তা ফরেন্সিক রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট। লখিমপুর-খেরি হিংসায় অন্যতম অভিযুক্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে আশিস মিশ্র। পুলিশ আগেই আশিস মিশ্র এবং তাঁর বন্ধু অঙ্কিত দাসের আগ্নেয়াস্ত্র ফরেন্সিক রিপোর্টের জন্য পাঠিয়েছিল। আজ সেই ফরেন্সিক রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, মন্ত্রীর ছেলে আশিস মিশ্রর আগ্নেয়াস্ত্র থেকেই গুলি চলেছে।
ওই রিপোর্ট বলছে, লখিমপুর-কাণ্ডের আর এক অভিযুক্ত অঙ্কিত দাসের বন্দুক থেকেও সে দিন চালানো হয়েছিল গুলি। আশিস এবং অঙ্কিতের বিরুদ্ধে কৃষকদের গাড়ির চাকায় পিষে খুন করা পাশাপাশি গুলি চালানোরও অভিযোগ রয়েছে। গত ৯ অক্টোবর আশিসকে গ্রেফতার করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তার কয়েক দিন পরেই উদ্ধার করা হয় তাঁর বন্দুক।
কী বলছে ফরেনসিক রিপোর্ট? তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ঘটনার দিন ওই লাইসেন্সড আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চালিয়েছিল অভিযুক্তরা। যদিও কেউ গুলিবিদ্ধ হননি সেদিন। কৃষকদের অভিযোগ ছিল, বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চলেছে মন্ত্রী-পুত্র ও তাঁর সঙ্গীর আগ্নেয়াস্ত্র থেকে। মন্ত্রীপুত্রের রাইফেল ও অঙ্কিতের পিস্তল থেকে গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন দু’জনেই। কিন্তু, শেষমেশ ফরেনসিক রিপোর্টে কৃষকদের সেই অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
লখিমপুর-কাণ্ডে ফরেনসিক রিপোর্ট সামনে আসার পর তাই কার্যত বিপদ বাড়ল মন্ত্রী-পুত্রের। ঘটনায় মৃতদের শরীরে গুলিবিদ্ধ হওয়ার কোনও চিহ্ন না মিললেও ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া গাড়িগুলিতে গুলির ক্ষত চিহ্নিত করেছিল পুলিশ। ফলে ঘটনার সময় সেখানে ছিলেন না বলে আশিস যে দাবি করেছিলেন, তা প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়বে। মান্যতা পাবে কৃষকদের অভিযোগই। লখিমপুর কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকালই লখিমপুর কাণ্ডের তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এই নিয়ে তৃতীয়বার গোটা ঘটনার তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে উত্তর প্রদেশ পুলিশের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করল শীর্ষ আদালত। শুনানিতে শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, গোটা মামলার নিত্যদিনের তদন্তের গতিপ্রকৃতির উপর নজর রাখতে তারা কোনও হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতিকে নিয়োগ করতে চান।
৩ অক্টোবর, একটি অনুষ্ঠানে লখিমপুর খেরিতে যাওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় মিশ্র ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব মৌর্য্যের। এদিকে, কৃষকরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সফরের কথা জানতে পেরেই পথ আটকে আন্দোলন করতে শুরু করে। পরে তা হিংসার আকার নেয়। মোট ৮ জনের মৃত্যুর খবর জানা যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই কার্যত রণক্ষেত্রের রূপ নেয় লখিমপুর খেরি।