Mahant Narendra Giri death case: Disciple Anand Giri taken into police custody; FIR lodged

মহিলার সঙ্গে মর্ফ করা ছবি নিয়ে ব্ল্যাকমেল! আখড়া পরিষদের প্রধানের রহস্যময় মৃত্যুতে গ্রেপ্তার প্রধান শিষ্য

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদ (Akhil Bharatiya Akhada Parishad) প্রধান মোহন্ত নরেন্দ্র গিরি মহারাজের (Narendra Giri) মৃত্যুতে প্রধান অভিযুক্ত আনন্দ গিরিকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। জানা গিয়েছে, প্রয়াত নরেন্দ্র গিরির সুইসাইড নোটে প্রধানত আনন্দকেই দায়ী করা হয়েছিল। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে নরেন্দ্রর আরও দুই সদস্যকেও। ইতিমধ্যেই এই মামলায় একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে।

আনন্দ গিরিও এক জন প্রভাবশালী গুরু। সুইসাইড নোটে তাঁর নাম রয়েছে শুনে অনেকেই চমকে উঠেছিলেন। কিন্তু পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে আরও অবাক করা তথ্য। সামনে এসেছে আনন্দের বিলাসী জীবনের নানা তথ্য। রাজস্থানের বিলওয়াড়ার এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম আনন্দের। তাঁর আসল নাম অশোক চোটিয়া। হরিদ্বারের এক আশ্রমে ঠাঁই হয়েছিল তাঁর।সেই আশ্রমেই ১২ বছরের অশোককে মনে ধরে গিয়েছিল গুরু নরেন্দ্রর।

গুরু নরেন্দ্রর হাত ধরেই ১২ বছরের সেই বালক হরিদ্বার থেকে প্রয়াগরাজ রওনা দিলেন। প্রয়াগরাজের বাঘমবারি মঠে থাকার ব্যবস্থা হল তাঁর। ২০০৭ সালে এলেন শ্রী পঞ্চায়তি আখাড়া নিরঞ্জনিতে। এখানেই থাকতেন গুরু নরেন্দ্র। তাঁর ছত্রছায়ায় ঝড়ের গতিতে উত্থান হতে শুরু করে অশোকের।অল্প সময়ের মধ্যেই ওই আশ্রমে সকলের কাছে ‘ছোট মহারাজ’ হয়ে উঠেছিলেন। গুরু নরেন্দ্র ছিলেন বড় মহারাজ এবং তিনি ছোট। পুত্র স্নেহে আস্তে আস্তে নিজের জমি ছেড়ে দিচ্ছিলেন গুরু নরেন্দ্র। তাঁর উত্তরসূরি হিসাবে অশোকের নাম প্রায় লেখা হয়েই গিয়েছিল।

সেই সময়ে আশ্রমে তাঁকে নিয়ে নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করে। সন্ন্যাসী হয়েও বাড়ির লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ ওঠে। আশ্রমের টাকা নয়ছয় করারও অভিযোগ ওঠে।আনন্দের বিলাসিতা সকলের নজরে পড়তে শুরু করেছিল। দামি গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা, বিমানে মদের গ্লাস নিয়ে ছবি তোলা— এ সব একেবারেই পছন্দ হচ্ছিল না কারও। এর উপর আবার ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ায় সিডনি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। দুই মহিলা যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে।

গুরু নরেন্দ্র শিষ্যের এই সমস্ত কীর্তি জানার পর হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারেননি। বাঘামবারি মঠ এবং নিরঞ্জনি আখড়া থেকে বার করে দেন তাঁকে। মন্দিরেও তাঁর প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেন। এর পরই গুরু-শিষ্যের সম্পর্কে চিড় ধরে। গুরু নরেন্দ্রর বিরুদ্ধে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করতে শুরু করেন তিনি। নেটমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে নিজের সমস্ত অনুগামীদের গুরু নরেন্দ্রর বিরুদ্ধে উস্কাতে শুরু করেন। কয়েক জনের হস্তক্ষেপে সে সময় গুরু-শিষ্যের মনোমালিণ্যের অবসান ঘটে। ফের আখড়া এবং মঠে প্রবেশ হয় আনন্দের।

কিন্তু তার পরই নাকি বদলার খেলা শুরু করেন আনন্দ। গুরু নরেন্দ্রকে নানা ভাবে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করেন। মহিলার সঙ্গে তাঁর বিকৃত করা ছবি-ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে শুরু করেছিলেন। গুরু নরেন্দ্রর সুইসাইড নোটে এই ঘটনারই উল্লেখ রয়েছে।

সোমবার থেকেই কোনও খোঁজ মিলছিল না নরেন্দ্র মহারাজের। তাঁর ঘর ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। বারবার ডাকাডাকির পরেও কোনও সাড়াশব্দ না মেলায় সন্দেহ দানা বাঁধে। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। খবর পাওয়ামাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ প্রথমে ঘরের দরজা ধাক্কা দেয়। তবে কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি তাঁর। দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে পুলিশ। অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদের প্রধান মোহন্ত নরেন্দ্র গিরি মহারাজকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। অবাক হয়ে যান প্রায় সকলেই। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। সেই সময়ই তাঁর ঘর থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়।

সুইসাইড নোট মেলার পরই আনন্দকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরেই আটক করা হয় হনুমান মন্দিরের পুরোহিত আদ্য তিওয়ারীকে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেবার দায়ে অভিযুক্ত আনন্দ গিরি এবং আদ্য তিওয়ারীকে বুধবার ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজত দেওয়া হয়েছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest