তৃতীয় বারের জন্য বিপুল আসন নিয়ে বঙ্গ জয় করেই দিল্লিতে গিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্রেই গোটা সপ্তাহজুড়ে দেশের কাছে শিরোনামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাঁচ দিনের সফর সেরে বাংলায় ফেরার আগে দিল্লিতে দাঁড়িয়েই মমতা জানিয়ে দিলেন, ২ মাস অন্তর তিনি দিল্লি আসবেন। অর্থাৎ, বাংলায় ফেরার আগে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করতে তিনিই মধ্যস্থতার কাজটি করবেন। একইসঙ্গে এও বুঝিয়ে দিলেন, বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো বিরোধী নেত্রী তিনিই। এমন একজন মুখ্যমন্ত্রী, যিনি রাজ্যের স্বার্থে ও দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পথ ধরে চলেন। এদিন মমতা বলেন, ‘দেশ বাঁচাতে হবে। বিরোধীরা যে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন, এর থেকে ভালো আর কী হতে পারে!’
বিজেপিকে বাংলায় নাজেহাল করে মমতা এখন জাতীয় নেত্রী। বহু ছোটদলই ভাবতে শুরু করেছে মোদী সরকারের অপশাসন দূর করার ক্ষমতা রয়েছে দিদির। তার নেতৃত্বে বিরোধীরা একজোট হলে আরএসএসের শিষ্য বিজেপিকে হঠান কঠিন কাজ নয়।
আরও পড়ুন : প্রথম পিএসি বৈঠকে অনুপস্থিত মুকুল রায়, চর্চা বিধানসভার অন্দরে
দিল্লিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে যেমন রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে বৈঠক করেছেন মমতা, তেমনি সনিয়া-রাহুল গান্ধি সহ একাধিক বিরোধী দলের নেতার সঙ্গেও বৈঠক সেরেছেন তিনি। কিন্তু যাঁর সঙ্গে শুরু থেকে এক হয়ে চলছিলেন তিনি, সেই শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বৈঠক হয়নি মমতার। সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শরদ পাওয়ারের বৈঠকের পরই গুঞ্জন ছড়িয়েছিল, তবে কি রাষ্ট্রপতির প্রস্তাব পাওয়া পাওয়ার নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন বিরোধী জোট থেকে?
এদিন অবশ্য মমতা জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে শরদ পাওয়ার দেখা হয়নি বটে, তবে ফোনে কথা হয়েছে। যদিও মমতার ‘সফল’ দিল্লি সফরের মাঝে পাওয়ার-কাঁটাই বিঁধছে তৃণমূল নেত্রীকে। এদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশে গণতন্ত্র যখন বিপন্ন হয়, তখন দেশ ভালো থাকে না। আমাদের দেশ বাঁচানোর কাজ করতে হবে।’
পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে কৃষক আন্দোলন, সবকিছু নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফের স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘আমরা কৃষকদের পাশে আছি।’ এমনকী পেগাসাস ইস্যুতেও যে কেন্দ্রকে ছেড়ে কথা বলবে না বিরোধীরা, সেই বার্তা দিতে এদিন রাহুল গান্ধির ডাকা বৈঠকে হাজির হন তৃণমূল সাংসদও।
মমতা বুঝিয়ে দিচ্ছেন তিনি একইঞ্চি জমি ছাড়বেন না। কংগ্রেসও বুঝেছে লড়তে হবে মমতাকে সঙ্গে নিয়েই। বিমান বসুর সাম্প্রতিক মন্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে ,জাতীয় লড়াইয়ে মমতার দলের সঙ্গে থাকতে তাদের আপত্তি নেই।
আরও পড়ুন : স্বয়ংক্রিয় গেটে কিউআর কোড স্ক্যানার বসাচ্ছে মেট্রো, পুরোপুরি অচল হবে টোকেন? উঠছে প্রশ্ন