Site icon The News Nest

Manipur Violence: শান্তি ফেরাচ্ছে ‘সফেদ ঝান্ডা’, তবু ক্ষমতা হারানোর আশঙ্কা বিজেপির

manipur 4 1219328 1684253940

জাতি দাঙ্গায় রক্তস্নাত মণিপুরে আতঙ্কিত মানুষকে ভরসা জোগাচ্ছে ‘সফেদ ঝান্ডা’।

৩ মে থেকেই মণিপুরে সংখ্যাগুরু মেতেই জনজাতির সঙ্গে রক্তাক্ত সংঘাত চলছে কুকি-ঝোমি ও অন্য আদিবাসীদের। এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন পঞ্চাশ জনেরও বেশি মানুষ। বেশকিছু এলাকায় বন্ধ ইন্টারনেট।এখনও উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে জাতি দাঙ্গার আগুন ধিকি ধিকি জ্বলছে। এহেন পরিস্থিতিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে সফেদ ঝান্ডা হাতে তুলে নিয়েছে এইচ ওয়াজাং নামের একটি গ্রাম।

মণিপুরের কাকচিং জেলার পাল্লেলের কাছেই এইচ ওয়াজাং গ্রাম। কুকি-মেতেই সংঘাতে সেখানেও ছড়িয়েছে আতঙ্ক। তবে সাদা পতাকা টাঙিয়ে ওই গ্রাম শান্তির বার্তা দিচ্ছে। এই ‘হোয়াইট ফ্ল্যাগ ইনিশিয়েটিভে’র অন্তর্গত মেতেই ও কুকিদের মধ্যে একাধিক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দু’পক্ষই হিংসা বন্ধ করে শান্তি ফেরানোর পক্ষে। অত্যন্ত লক্ষণীয় ভাবে, এহেন পদক্ষেপের পুর থেকেই পাল্লেল ও আশপাাশের অঞ্চলে সেই অর্থে হিংসার কোনও বড়সড় ঘটনা ঘটেনি। ফলে রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলেও এইচ ওয়াজাং গ্রামকে উদাহরণ হিসেবে রেখে শান্তি ফেরানোর চেষ্টা করছে সেনা ও প্রশাসন।

অন্যদিকে, কর্নাটকে বিধানসভা ভোট মেটার পরে মণিপুর পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সরকারি সূত্রের খবর, সোমবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের সঙ্গে বৈঠক করে হিংসায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে শান্তি বজায় রাখার কথা বলেছেন। অর্থাৎ ঘটনার প্রায় ১২ দিন পর নিজের মৌনব্রত ভাঙলেন তিনি। আর বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের এই নীরবতার কারণেই মনিপুর হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

গতবছর অনুষ্ঠিত হয় মণিপুর বিধানসভার নির্বাচন। ৬০ আসনের সেই নির্বাচনে বিজেপি একাই পায় ৩৭টি আসন। জোট শরিক হিসাবে NPP পায় ৭টি আসন, NPF পায় ৫টি আসন ও KPA পায় ২টি আসন। এছাড়াও ৩জন নির্দল বিধায়ক বিজেপি সরকারকে সমর্থন জানায়। সব মিলিয়ে ৫৪জনের সমর্থনে দ্বিতীয়বারের জন্য সরকার গঠন করেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং(N Biren Singh)। বিরোধী আসনে রয়েছেন কংগ্রেসের মাত্র ৫জন বিধায়ক ও সংযুক্ত জনতা দলের ১জন বিধায়ক। সেই হিসাবে এই সরকারের কোনও বিপদই হওয়ার কথা নয়।

কিন্তু সেখানেই পরিস্থিতি পুরোপুরি পাল্টে গিয়েছে সাম্প্রতিক কালের সংঘর্ষের ঘটনায়। কেননা বিজেপির অন্দরেই মণিপুরের মাটিতে বিদ্রোহ শুরু হয়ে গিয়েছে। একদিকে দলের অন্দরেই যেমন জোরালো দাবি উঠেছে কুকি-হামার-জোমি প্রভাবিত এলাকায় ‘পৃথক প্রশাসনে’র, তেমনি সেই দাবিতে সুর চড়িয়েছেন ৩ জোট শরিক বিধায়কও। মোট ১০ জন বিধায়ক এই দাবির সমর্থনে সুর চড়িয়েছেন। এই ১০জনের মধ্যে ৭জনই আবার বিজেপির।

এই অবস্থায় গত রবিবার দিল্লি গিয়ে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের(Amit Shah) সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন বীরেন্দ্র। সেই বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিক বৈঠকে এটাও জানিয়ে দেন, কুকি-হামার-জোমি প্রভাবিত এলাকায় ‘পৃথক প্রশাসনে’র দাবি কোনওমতেই মেনে নেওয়া হবে না।

এই সিদ্ধান্তের জেরেই বিজেপির ৭ বিক্ষুব্ধ বিধায়ক দল ছাড়ার পথে হাঁটা দিতে চলেছেন। সেই সঙ্গে ৩ জোট শরিকও বিজেপির সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করতে চলেছে। তাঁদের এখন দাবি, মুখ্যমন্ত্রী বদল ঘটানো হোক মণিপুরে। এই অবস্থায় কার্যত সুতোর ওপর ঝুলছে মণিপুরের বিজেপি সরকারের ভবিষ্যত। বীরেন্দ্রকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দিলেও সমস্যার সমাধান কতখানি হবে তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

Exit mobile version