২১শের ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। ব্রিগেডের জনসভায় নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে সেই যোগদান হয়েছিল। ভোট প্রচারে রাজ্য জুড়ে ঘুরেছেন। এমনকী, প্রচার পর্বে জনতার অনুরোধে বলা তাঁর ছবির হিট সংলাপ বলার জন্য কোর্টে ছুটতে হয়েছিল ‘এমএলএ ফাটাকেষ্ট’ থুড়ি মিঠুন চক্রবর্তীকে। তবে ভোটের পর আর এই রাজ্যে দেখা যায়নি তাঁকে। কিন্তু এবার বিজেপির জাতীয় সংগঠনে বিশেষ দায়িত্ব পেলেন তিনি।
প্রাক্তন সাংসদ তথা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর পাশাপাশি বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী জায়গা পেয়েছেন ওই কমিটিতে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কর্মসমিতিতে রাখা হয়েছে আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে। বিজেপি-র সংবিধান অনুযায়ী এটি দলের অন্যতম প্রধান কমিটি। এর উপরে রয়েছে শুধু ১২ সদস্যের সংসদীয় বোর্ড। দলের যাবতীয় নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় সেই বোর্ড।
এদিন দুপুরেই প্রকাশিত হয়েছে বিজেপির ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কমিটির (national executive committee) নয়া তালিকা। ১২ পাতার এই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে বেশ কয়েকজনের নাম রয়েছে। ৮০ জন জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যের তালিকায় বাংলা থেকে ৬ জন আছেন। ৭৫ নম্বরে রাজ্যের প্রতিনিধি তালিকার প্রথম নাম মিঠুন চক্রবর্তী। এছাড়াও আছেন দীনেশ ত্রিবেদী, স্বপন দাশগুপ্ত, ভারতী ঘোষ, অনির্বাণ গাঙ্গুলি ও মুকুটমণি অধিকারী। ৫০ জনের বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্যের তালিকায় ৬ জন এই রাজ্য থেকে আছেন। সেখানেই ৪৬ নম্বরে নাম রয়েছে রাজীব ব্যানার্জির। এছাড়াও আছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী, জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়, রাজ্যসভার সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবং রাজ্য বিজেপি-র মুসলিম মুখ মাফুজা খাতুন।
বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন রাজীব ব্যানার্জি। তখন তিনি ছিলেন তৃণমূল সরকারের বন দপ্তরের মন্ত্রী। নিজের পুরনো কেন্দ্র ডোমজুড় থেকে বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে হেরে যান। তারপর থেকেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, তৃণমূলে ফিরে আসছেন তিনি। যদিও এই প্রতিবেদন লেখার সময় সব্যসাচী দত্ত তৃণমূলে ফিরলেন। কিন্তু এখনও ফেরা হল না রাজীবের। ঠিক এই অবস্থায় বিজেপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক কমিটিতে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে নাম দেখা গেল রাজীব ব্যানার্জির।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই তালিকা অনুযায়ী নতুন করে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি হুগলির সাংসদ লকেট চ্যাটার্জিকে। প্রসঙ্গত, বাবুল সুপ্রিয়র পরে লকেটও দল ছাড়ছেন এই জল্পনা চলছে বহুদিন ধরেই। অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী ভোটের পরে রাজনীতি নিয়ে সেভাবে আর আগ্রহ দেখাননি। ফিরে গেছেন অভিনয়ের জগতে। ফলে তাঁর নাম এই তালিকায় থাকায় এটা পরিষ্কার, বিজেপি ছাড়ছে না তাঁকে। তবে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্যের তালিকায় থাকা রাজীবের নাম কৌতূহল জাগাচ্ছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এতে ‘ঘরে’ ফেরায় সমস্যা হতে পারে রাজীবের।