ফের নিগ্রহের শিকার এক মুসলিম ব্যক্তি। বছর ৪৫-এর ওই ব্যক্তিকে রাস্তা দিয়ে জোর করে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। করা হয়েছে মারধরও। একই সঙ্গে তাঁকে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) রাজ্য উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) কানপুর (Kanpur) শহরে। উলটে পরে তাঁকেই পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
২৫ সেকেন্ডের সেই ভাইরাল ভিডিয়োতে সেই ব্যক্তিকে ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে বাধ্য করা হয়েছে। নিগৃহীত ব্যক্তি এক রিক্সাচালক বলে জানা গিয়েছে। এদিকে তিন ব্যক্তিকে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় যুক্ত মোট ১৫ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
ঘটনার প্রেক্ষিতে কানপুরের ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) রবীনা ত্যাগী নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। তিনি জানান কচ্চি বস্তির এলাকার গোপাল মোড়ের ৫০০ মিটার দূরে ঘটনাটি ঘটেছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, বাবার প্রাণরক্ষার জন্য তাঁকে জড়িয়ে ধরে রয়েছে তাঁর খুদে কন্যা। আক্রমণকারীদের কাছে মিনতি করছে। হাত জোড় করে অনুনয় করছে তার বাবাকে যাতে রেহাই দেওয়া হয়। উল্টে তার হতে ধরে টেনে সরিয়ে দেওয়া হল। তাঁকে রাস্তা দিয়ে ও ভাবে টেনে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশের হাতে তুলে দেয় মারমুখী জনতা। পরে দেখা যায় পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীনও তাঁকে আঘাত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কেবল বাংলায় নয়, ত্রিপুরাতেও ‘খেলা হবে দিবস’ পালন করবে তৃণমূল
অভিযোগকারী ব্যক্তির বক্তব্য, বুধবার দুপুর তিনটে নাগাদ তাঁর উপর চড়াও হয় কয়েকজন দুষ্কৃতী। তাঁকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করতে শুরু করে এই দুষ্কৃতীরা। তারা অভিযোগকারীকে প্রাণে মারার হুমকি পর্যন্ত দেয়। পরে তিনি জানান যে তাঁকে পুলিশ বাঁচিয়েছে। মুসলিম সেই ব্যক্তির নাকি প্রতিবেশী এক হিন্দু পরিবারের সঙ্গে বিবাদ রয়েছে। এর আগে জুলাই মাসে নাকি এই দুই পরিবার একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল।
সূত্রের খবর, সম্প্রতি ঝামেলার সঙ্গে যুক্ত হয় বজরং দল। ওই মুসলিম পরিবারটির বিরুদ্ধে জোর করে ধর্মান্তরকরণের অভিযোগ এনে তারা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে বলে অভিযোগ। কানপুরের এক শীর্ষ পুলিশকর্তা রবিনা ত্যাগী জানান, ওই ভিডিও তাঁদের নজরে এসেছে। আক্রান্ত ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। এরপরই রাহুল, আমন এবং রাজেশ নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও এই গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে থানার সামনে আবার বিক্ষোভ দেখিয়েছে বজরং দলের সদস্যরা।
ভিডিয়োটি নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর নেটাগরিকদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন নিগ্রহকারীদের মুখ স্পষ্ট দেখা গেলেও তাঁদের কেন গ্রেফতার করা হয়নি? পুলিশ তার জবাব দেয়নি। তারা শুধু জানিয়েছে, ১২ জন অভিযুক্তের মধ্যে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ও তাঁর ছেলে রয়েছেন। বাকি অভিযুক্তের পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: বিমা বিলের বিরোধিতায় সংসদে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন মৌসম বেনজির নূর