মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক বৃহস্পতিবার নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ের ‘নিকাহ নামা’ বা বিবাহের শংসাপত্রের একটি অনুলিপি এবং বিয়েতে তাঁর প্রথম স্ত্রী শাবানা কুরেশির সাথে সমীরের ছবি টুইট করেন। নবাব মালিক এই টুইট করে দাবি করেন যে এই টুইট সমীরের ধর্ম নিয়ে নয়, বরং এটা প্রমাণ করতে যে ভুয়ো বর্ণ শংসাপত্র বানিয়ে আইআরএস-এর চাকরি পান সমীর।
সমীরের বিয়ের ছবিটি বুধবার সকাল ৭টা ৪১ মিনিটে টুইটারে প্রকাশ করেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী এবং ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতা নবাব। বর্ণনায় কিছুটা ব্যঙ্গের সুরেই লেখেন, এক মিষ্টি দম্পতির ছবি। সমীর দাউদ ওয়াংখেড়ে এবং চিকিৎসক শাবানা কুরেশি। এখনকার দুঁদে এনসিবি কর্তা সমীর ২০০৬ সালের ওই ছবিতে একজন অল্পবয়সি যুবক। বিয়ের দিন প্রথম স্ত্রী শাবানাকে নিয়ে ছবিটি তুলিয়েছিলেন তিনি। ওই ছবি এবং তার পরে সমীরের মুসলিম মতে বিয়ের শংসাপত্র বা নিকাহনামা প্রকাশ করে নবাব জানিয়েছেন, সমীরের ধর্ম নিয়ে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। তিনি শুধু চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে চান সমীর একজন অসৎ ব্যক্তি। যিনি চাকরির প্রয়োজনে খাতায় কলমে নিজের ধর্ম কিংবা জাতি বদলে ফেলতেও দ্বিধাবোধ করেননি।
Photo of a Sweet Couple
Sameer Dawood Wankhede and Dr. Shabana Qureshi pic.twitter.com/kcWAHgagQy— Nawab Malik نواب ملک नवाब मलिक (@nawabmalikncp) October 27, 2021
গতকাল মালিক চার পৃষ্ঠার চিঠি দেখিয়ে দাবি করেন যে তাতে ২৬টি মামলার তালিকা রয়েছে যেখানে লোকেদের জাল মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। চিঠিটি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিবি-র এক আধিকারিক লিখেছেন বলে দাবি করা হয়। এই ক্ষেত্রেও মালিকের অভিযোগের আঙুল সমীরের দিকে ছিল। এই চিঠির প্রেক্ষিতে এনসিবির ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল মুথা অশোক জৈন দাবি করেন যে এই চিঠিটি কেবল সোশ্যাল মিডিয়াতেই ভাইরাল হয়েছে এবং সংস্থা এমন কোনও চিঠি এখনও পায়নি।
নবাব বলেছিলেন, এনসিবির রেকর্ডে সমীরের বাবার নাম জ্ঞানদেব ওয়াংখেড়ে লেখা থাকলেও আসলে তাঁর নাম দাউদ। নবাবের দাবি অবশ্য তখন অস্বীকার করেছিলেন সমীরের বাবা। বুধবার সকালে ছবিটি প্রকাশ করার পর অবশ্য তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। বুধবার নবাব এ-ও বলেন যে, ২০০৬ সালের ৭ ডিসেম্বর সমীর এবং শাবানার বিয়েতে দ্বিতীয় সাক্ষী ছিলেন তাঁর বোন ইয়াসমিনের স্বামী আজিজ খান।
This is the 'Nikah Nama' of the first marriage of
'Sameer Dawood Wankhede' with Dr. Shabana Quraishi pic.twitter.com/n72SxHyGxe— Nawab Malik نواب ملک नवाब मलिक (@nawabmalikncp) October 27, 2021
নবাবের অভিযোগের পাশাপাশি সমীরের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি টাকার একটি ঘুষ কেলঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগও উঠেছে। মুম্বইয়ের মাদক মামলার অন্যতম সাক্ষী প্রভাকর সইল একটি হলফনামা প্রকাশ করে সোমবার জানিয়েছিলেন আরিয়ানকে রেহাই দেওয়ার জন্য শাহরুখ খানের ম্যানেজার এবং বেসরকারি গোয়েন্দা কিরণ গোসাভির মধ্যে কোনও চুক্তি হয়েছিল। যে বিষয়ে গোসাভির কথোপকথনে তিনি স্পষ্ট শুনেছিলেন সমীরের নাম। মুম্বইয়ের জোনাল অফিসার সমীর ওয়াংখেড়েকে আট কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন গোসাভি। প্রভাকর জানিয়েছিলেন, এই অভিযোগের প্রমাণও আছে তাঁর কাছে। যা তিনি প্রকাশ্যে আনবেন গোসাভি আত্মসমর্পণ করার পরই।
প্রভাকরের ওই অভিযোগের পরই সমীরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে এনসিবি। তদন্তের জন্য মুম্বই পুলিশ একজন এসিপি স্তরের অফিসার নিয়োগ করেছে। ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত সমস্ত অভিযোগের তদন্ত করবেন এই অফিসার। মুম্বইয়ের চারটি থানায় এখনও পর্যন্ত সমীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।