মহাত্মা গান্ধীর (Mahatma Gandhi) পর এবার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ (Maulana Abul Kalam Azad)। একাদশ শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়া হল দেশের প্রথম শিক্ষামন্ত্রীর নাম। ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং(NCERT)-এর নির্দেশে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বই থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁর নামটি। এর আগে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে গান্ধীর অবদান ও তাঁর হত্যার বিষয়টি বাদ দেওয়ায় বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল। এবার বাদ পড়লেন আজাদও। বাদ দেওয়া হয়েছে স্বাধীনতার পরে কাশ্মীরে শর্তাধীন অন্তর্ভুক্তির প্রসঙ্গও।
বইটির প্রথম অধ্যায়ে ‘সংবিধান- কী ও কেন’-এ সংসদীয় কমিটির মৌলানা আজাদের নাম ছিল। বাদ দেওয়া হয়েছে সেই অংশটি। জওহরলাল নেহরু, রাজেন্দ্র প্রসাদ, সর্দার প্যাটেল, বিআর আম্বেদকরের নাম বইতে উল্লেখ থাকলে সেখানে উল্লেখ নেই মৌলানা আজাদের নাম।
প্রসঙ্গত, আজাদ সংবিধান তৈরীর প্রাক্কালে ১৯৪৬ সালে নতুন গণ পরিষদের নির্বাচনে কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কালামের সাথেই বই থেকে বাদ পড়েছে কাশ্মীরের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিও। এই সংক্রান্ত একটি বাক্য বাদ দেওয়া হয়েছে বইয়ের দশম অধ্যায় ‘সংবিধানের দর্শন’ থেকে। বাদ দেওয়া অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, ‘উদাহরণস্বরূপ ভারতীয় ইউনিয়নে জম্মু ও কাশ্মীরের যোগদান সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের অধীনে এর স্বায়ত্তশাসন রক্ষা করার প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে ছিল।’
আরও পড়ুন: Kailash Vijayvargiya: মহিলাদের পোশাক নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য, রাজনীতিতে ফের ভেসে উঠলেন কৈলাস
সম্প্রতি এনসিইআরটির পাঠ্যবই থেকে মোগল ইতিহাস এবং গান্ধীহত্যার প্রসঙ্গ বাদ দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য মহাত্মা গান্ধীর প্রয়াসকে অনেক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন যে ভাল ভাবে নেয়নি, সেই অংশটিও বাদ গিয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, অতিমারিকালে পড়ুয়াদের উপর অতিরিক্ত চাপ কমাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইতিহাসবিদদের একাংশ। পড়ুয়াদের বিকৃত ইতিহাস পড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে, এই অভিযোগেও সরব হয়েছেন তাঁরা।
এই প্রসঙ্গে ‘দি হিন্দু’কে ঐতিহাসিক ইরফান হাবিব বলেন, “স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে আজাদ বিনামূল্যে দেশের সব পড়ুয়াকে পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। গণপরিষদ বা সংবিধান সভার একাধিক আলোচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন আজাদ। তাই পাঠ্যবই থেকে তাঁর নাম বাদ পড়াটা দুর্ভাগ্যজনক।” সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের জন্য ২০০৯ সালে চালু হওয়া আজাদ বৃত্তিও যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, সে কথাও স্মরণ করিয়ে দেন প্রবীণ ইতিহাসবিদ হাবিব।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: দেশের ৩০ মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে সবথেকে গরিব মমতা, বাকি ২৯ কোটিপতি, শীর্ষে জগন