লালকেল্লায় ভারতের ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসে ভাষণ দিতে গিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামী মাতঙ্গিনী হাজরাকে অসমের বাসিন্দা বলে উল্লেখ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। মোদীকে কটাক্ষ করে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল।
স্বাভাবিকভাবেই প্রধানমন্ত্রী এহেন মন্তব্যকে ঘিরে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ টুইটারে লেখেন, “মাতঙ্গিনী হাজরা অসমের? আপনার কি মতিভ্রম হয়েছে? আপনি ইতিহাস জানেন না। কোনও অনুভূতি নেই আপনার।” প্রধানন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তিনি আরও লেখেন, “আপনি তো অন্যের লেখা স্ক্রিপ্ট পড়েন। এটা বাংলার অপমান। আপনি ক্ষমা চান।”
আরও পড়ুন: ২০২২ থেকেই নিষিদ্ধ হচ্ছে প্লাস্টিক, ইয়ার বাডস থেকে আইসক্রিম স্টিক সবই বাতিলের খাতায়!
.@BJP4India Matangini Hazra from Assam? R u mad? U don't know history. U have no feelings. You just read a written speech ( that also by others) with drama. This is insult to Bengal. You must beg apology. Hope Your LOP from East Midnapore will also condemn such a mistake. pic.twitter.com/azMV45GN7f
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) August 15, 2021
প্রসঙ্গত, মাতঙ্গিনী হাজরা ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী এক মহান বিপ্লবী নেত্রী। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ২৯ সেপ্টেম্বর তদনীন্তন মেদিনীপুর জেলার তমলুক থানার সামনে ব্রিটিশ ভারতীয় পুলিশের গুলিতে তিনি শহিদ হয়েছিলেন। তিনি ‘গান্ধীবুড়ি’ নামে পরিচিত ছিলেন। ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে তমলুকের অদূরে আলিনান নামে একটি ছোটো গ্রামে তাঁর জন্ম হয়েছিল।
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনও মোদিকে কটাক্ষ করে টুইট করেন৷ লেখেন, শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী৷ সংসদে তিনদিনে ৯টা প্রশ্ন আপনাকে করেছিলাম৷ যার একটারও উত্তর পাইনি৷ আজ আপনি কী বললেন? মাতঙ্গিনী হাজরার বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিল না৷ তাহলে এবার আমার নতুন এবং দশম প্রশ্ন হল, এই ভিডিওটা কী তাহলে জাল? নাকি লালকেল্লায় বলা আপনার ভাষণের অংশ?’
যদিও এই বিতর্কের মাঝে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই ঘটনাকে ‘ছোট ভুল’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এটা ছোট ভুল। ভারতবর্ষে হাজার হাজার এ রকম মহাপুরুষ এসেছেন। তাঁরা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। কোনও কারণে ছোট ভুল হতেই পারে। এটাকে বড় করে দেখার দরকার নেই। যাঁরা এত কষ্ট পাচ্ছেন তাঁরা মাতঙ্গিনী হাজরার জন্য কী করেছেন?’’
তাঁকে অবশ্য পাল্টা জবাব দিয়েছেন কুণাল। বলেছেন, ‘এ যদি বাংলার অপমান না হয়, তাহলে কার অপমান? দিলীপ বাবুরা নিজের বাঙালি পরিচয় বিক্রি করে দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: 75th Independence Day: পরিবহণ ব্যবস্থায় ‘বিপ্লব’ আনতে ১০০ লক্ষ কোটির ‘গতিশক্তি’ প্রকল্প ঘোষণা মোদীর