ছাত্র একটু বেশিই দুষ্টু। উচিত শিক্ষা দিতে তাকে একটু অন্যরকম শাস্তি দিতে চেয়েছিলেন অধ্যক্ষ। সেই শাস্তির বহর দেখে শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। স্রেফ পা ধরে ঝুলিয়ে দেওয়া শিশুটির ছবি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। উত্তরপ্রদেশের সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘটনাটি চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ঘটেছে। আহরাউড়ার সদভাবনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জুনিয়র হাই স্কুলের ঘটনা।
ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে স্কুলের এক কমবয়সি ছাত্রের একটি পা ধরে খোলা বারান্দা থেকে শূন্যে ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষক। পা উপরে, মাথা নিচে থাকা অবস্থায় ছাত্রটি দু’হাত ছড়িয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে। স্কুলের বারান্দায় ভয়ঙ্কর ঘটনাটি চারপাশে ভিড় করে দেখছে ওই ছাত্রের সতীর্থরা। কিন্তু শিক্ষকের তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই। বরং তিনি হুমকি দিচ্ছেন, ক্ষমা না চাইলে মাটিতে ফেলে দেবেন।
ভিডিয়োটি দেখে উত্তরপ্রদেশের জেলা প্রশাসন স্বতঃপ্রণোদিত তদন্ত শুরু করেছিল। শুক্রবার সেই তদন্তের পর অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার ওই স্কুলের অধ্যক্ষ মনোজ বিশ্বকর্মাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে শিশু আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সোনু যাদব টিফিনের সময় এক সহপাঠীকে কামড়ে দিয়েছিল। তাতেই সোনুকে ওই ‘শাস্তি’ দেন মনোজ।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মনোজ বিশ্বকর্মা অবশ্য এখনও নিজের যুক্তি দিয়ে চলেছেন। তাঁর কথায়, ‘খাওয়ার সময় দুষ্টুমি’ করায় তিনি রেগে গিয়েছিলেন। সেই কারণেই দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া সোনু যাদবকে তিনি বারান্দা থেকে ঝুলিয়ে ভয় দেখিয়ে শাস্তি দিচ্ছিলেন। অন্য পড়ুয়ারাও যাতে দেখে শিক্ষা পায়, সেই উদ্দেশ্যেই এমনটা করেন তিনি। রাগের মাথায় এমনটা করেছেন, বলছেন ওই প্রধান শিক্ষক।
জানা গিয়েছে, চিত্কার করে ক্ষমা প্রার্থনা করার পর ওই শিশুকে তিনি ফের তোলেন। কিন্তু ততক্ষণে কোনও পড়ুয়া বা স্কুলেরই শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী পুরো বিষয়টার ছবি তুলে নিয়েছেন ফোনে। এরপরে তা আপলোড হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতেই শিক্ষকের কীর্তি ফাঁস হয়।
সোনুর বাবা রঞ্জিত যাদব বলেন, ‘আমার ছেলে শুধু অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে একটু ফুচকা খেতে গিয়েছিল। সবাই মিলে একটু দুষ্টুমি করছিল, যেমন শিশুরা করে আর কী!। এটুকুর জন্যই প্রিন্সিপাল এমন শাস্তি দিয়েছেন, যাতে আমার ছেলের জীবন বিপন্ন হতে পারত।’