Site icon The News Nest

‘প্রমাণ হল তো!’ রূপাণীর বিদায় নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করে জেল খাটা-দেশছাড়া সাংবাদিক মুখ খুললেন অবশেষে

rupani quint

গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে যে বিজয় রূপাণী সরছেন, তার ভবিষ্যদ্বাণী এক বছর আগেই করেছিলেন সে রাজ্যের এক সাংবাদিক। তখন দেশে করেনার প্রথম ঢেউ সব শুরু হয়েছে। গুজরাতের সাংবাদিক ধবল প্যাটেল সে সময় লিখেছিলেন গুজরাতের মসনদে কিছু দিনের মধ্যে বড় বদল আসতে চলেছে। বদলটি যে আদতে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণীরই অপসারণ, লেখায় তার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন ধবল।

সেই রিপোর্ট লেখার জন্য তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে পড়তে হয়। এমনকি টানা দু’সপ্তাহ জেলও খাটতে হয়েছিল সাংবাদিককে। জামিন পেলে আর এ নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেননি। দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন ধবল। শনিবার গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে রূপাণী ইস্তফা দেওয়ার পর অবশেষে ঘটনাটি নিয়ে মুখ খুললেন। বললেন, ‘‘যা লিখেছিলাম, তা এত দিনে প্রমাণিত হল।’’

যে প্রতিবেদনটির কথা ধবল উল্লেখ করেছেন, তার শিরোনাম ছিল, ‘মনসুখ মাণ্ডব্যকে (বিজেপি-র) হাই কম্যান্ডের তলব, গুজরাতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব বদলের সম্ভাবনা’। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য থেকে রাজ্যসভার সাংসদ মনসুখ তখন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী-র পদ সামলাচ্ছেন।

ধবল ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী পদে তিনি রূপাণীর বিকল্প হিসেবে উঠে আসতে পারেন। যদিও মনসুখ নিজে সেই খবর অস্বীকার করেন। রূপাণীর অপসারণের কারণ হিসেবে মূলত করোনা পরিস্থিতিতে গুজরাত সরকারের ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছিলেন ধবল। মনসুখ প্রকাশ্যে রূপাণীর করোনা সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনার প্রশংসাও করেন। পরোক্ষে মিথ্যেবাদী প্রমাণ করে দেওয়া হয় ধবলকে।

খবরটি ওই ওয়েব পোর্টালে প্রকাশিত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। এমনকি মনসুখের বক্তব্যও প্রকাশ করা হয়েছিল। তার পরও ধবলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। আমেদাবাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চের এক সাব ইনস্পেক্টর তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনেন। প্রকৃত তথ্য না জেনে প্রশাসনের অবমাননাকর রিপোর্ট প্রকাশের অভিযোগও আনা হয়। টানা ১৪ দিন জেল হেফাজতে থাকতে হয় ধবলকে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি ধবল বলেছেন, ‘‘আমি নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকেই খবর পেয়েছিলাম। পরে তা যাচাই করেই প্রতিবেদন লিখেছিলাম। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আসলে একজন সাংবাদিককে চাপ দেওয়ার অস্ত্র ছিল।’’

আদালত ধবলকে সতর্ক করে বলেছিল, ‘‘ভবিষ্যতে যখন কোনও রিপোর্ট লিখবেন, তা যদি সাংবিধানিক কোনও প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে হয়, তবে এ ধরনের কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না।’’ সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারটিতে ওই সাংবাদিক বলেছেন, ‘‘আমি বুঝতে পারছিলাম, প্রশাসন বিষয়টিকে টেনে নিয়ে যেতে চায়। আমি সেটা চাইনি। কারণ তার প্রভাব আমার কর্মজীবনে পড়ত। সরকারের আইনজীবীই আমাকে নিঃশর্তে ক্ষমা চেয়ে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।’’

Exit mobile version