লোকসভায় অধিনায়ক বদল করতে পারে কংগ্রেস। অধীর রঞ্জন চৌধুরী হারাতে পারেন বিরোধী দলনেতার তকমা। এমনটাই খবর সূত্র মারফত। জি-২৩ নেতাদের মধ্যে কেউ লোকসভার বিরোধী দলনেতা হতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, কংগ্রেসের অভ্যন্তরে জোরাল হচ্ছে ‘বিদ্রোহী’ নেতাদের কণ্ঠস্বর। একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে আরও একবার প্রকাশ্যে আসছে সেই ফাটল। তাই অধীর রঞ্জন চৌধুরীর জায়গায় ‘বিদ্রোহীদের’ কাউকে বসিয়ে সেই চাপা স্রোত ঢাকতে পারে কংগ্রেস নেতৃত্ব। এমনটাই দাবি সূত্রের।
এখনও অবধি কংগ্রেসের দলীয় সূত্রে উঠে এসেছে ৫টি নাম। তালিকায় রয়েছেন শশী তারুর, মণীশ তিওয়ারি, গৌরব গগৈ, রণভিত সিংহ বিট্টু ও উত্তমকুমার রেড্ডি। এঁদের মধ্যে গৌরব সংসদে উপ দলনেতা হিসাবে কাজ করছেন। রণভিত লুধিয়ানা কেন্দ্রের সাংসদ। তেলঙ্গানার নালগোন্দা আসন থেকে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে জয় লাভ করেন উত্তমকুমার।
গান্ধী পরিবারের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্কের কথা সকলেই জানে। ১৯ জুলাই শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। তার আগেই লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা পাল্টে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বিভিন্ন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিকে নজর রেখেই এই পরিবর্তন করা হতে পারে। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়তেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচক অধীরকে সরাতে চাইছে কংগ্রেস নেতৃত্ব?
আরও পড়ুন: নয়া আইটি নিয়ম না মানলেও খবর সম্প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নয়,নির্দেশ আদালতের
অধীরের প্রতি কংগ্রেসের এই অসন্তোষের কারণ নীলবাড়ির লড়াইয়ে কংগ্রেসের শোচনীয় ফলাফল, এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অনেকেই এর দায় চাপিয়েছেন অধীরের উপরেই। তাঁদের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মমতার প্রতি যথেষ্ট নরম থাকলেও অধীর লাগাতার তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন। আর সেই কারণেই জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষিতে মমতার সঙ্গে কংগ্রেসের সেতুবন্ধনে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন অধীর।
অন্য দিকে, বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপি-বিরোধী মুখ হিসাবে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন মমতা। কারও কারও মনে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-কে পরাস্ত করার পর কেন্দ্রীয় বিজেপি বিরোধী জোটের পয়লা নম্বর মুখ হতে পারেন মমতা। এই পরিস্থিতিতে অধীরের উপস্থিতি কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক যাতে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়, সেই কারণেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে আপাতত আঞ্চলিক রাজনীতিতেই আটকে রাখতে চাইতে পারে দল।
জি-২৩ নেতাদের নিয়ে অন্তর্কলহে বেশ কয়েকদিন ধরেই ভুগছে কংগ্রেস। সনিয়া গান্ধী মাঠে নেমেও সেই বিদ্রোহ সম্পূর্ণ নিভিয়ে দিতে পারেননি। এমতাবস্থায় ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন ও একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা বদলের দাওয়াইয়ে সমতা বিধান হয় কি না, সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশ দিয়ে শুরু, ২৪-এর আগেই দেশে জন্ম নিয়ন্ত্রণ আইন আনবে মোদী সরকার!