যৌন নিগ্রহের অপরাধের ক্ষেত্রে সরাসরি ত্বকের স্পর্শ জরুরি নয়। বৃহস্পতিবার ‘শিশুদের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ আইন’ (পকসো) সংক্রান্ত এক মামলায় এই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি ইউ ইউ ললিত, বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট্ট এবং বিচারপতি বেলা ত্রিবেদীর বেঞ্চ এ বিষয়ে বম্বে হাই কোর্টের রায় খারিজ করে দিয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি পুষ্প গানেদিওয়ালা রায় দিয়েছিলেন, শিশুদের পোশাক খুলে বা জামাকাপড়ের ভিতরে হাত গলিয়ে তাদের বুক বা গোপনাঙ্গ স্পর্শ না করা হলে সেটা যৌন নির্যাতন বলে ধরা হবে না পকসো আইনে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা হয়েছিল শীর্ষ আদালতে।
বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালার দুটি রায় ঘিরে সাম্প্রতিককালে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়। একটি রায়ে তিনি বলেন, পোশাকের উপর দিয়ে নাবালিকার শরীরে হাত দিলে তা পকসো আইনের আওতায় যৌননিগ্রহ হিসেবে গ্রাহ্য হবে না। যৌন নির্যাতনের অভিপ্রায়ে ত্বকের সঙ্গে ত্বকের সংস্পর্শ হলে, তবেই তা যৌন নিগ্রহ হিসেবে গণ্য হবে। অন্য একটি মামলার রায়ে তিনি বলেন, কোনও নাবালিকার হাত ধরা কিংবা প্যান্টের চেন খোলা পকসো আইনে যৌন নির্যাতন নয়।
১২ বছর বয়সি এক শিশুকন্যার বুকে হাত দেওয়ায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া পকসো মামলার প্রেক্ষিতে এ কথা জানিয়েছিল বম্বে হাই কোর্ট। পকসো আইনের ৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী ওই অভিযুক্তের তিন বছর জেল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আইনের নতুন ব্যাখ্যা দিয়ে বিচারপতি গানেদিওয়ালা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ এবং ৩৪২ নম্বর ধারা মোতাবেক ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। যদিও গত ২৭ জানুয়ারি এই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
বম্বে হাইকোর্টে বিতর্কিত রায় নিয়ে এদিন শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতি রীতিমতো কড়া মন্তব্য করেন। বলেন, “যৌন নিগ্রহের অভিপ্রায়ে পোশাক বা অন্য কিছুর উপর দিয়ে শরীর স্পর্শ করার বিষয়ে পকসো আইনে স্পষ্ট করেই বলা আছে। কোর্ট (বম্বে হাইকোর্ট) এই বিষয়ে অস্পষ্ট মন্তব্য করতে পারে না, যা সহজ ভাষায় বলা আছে আইনে। সঙ্কীর্ণ মন্তব্যের ফলে এই আইনের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে। “