স্ট্যান স্বামী মৃত্যু মামলায় এনআইএ এবং মহারাষ্ট্র কারা দফতরের কাছে জবাব তলব করল বম্বে হাইকোর্ট। এলগার পরিষদ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছিল স্বামীকে। অসুস্থ ছিলেন তিনি, ভর্তি ছিলেন বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। ৫ জুলাই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সেদিনই মৃত্যুর ঘণ্টা খানেক আগে ছিল তাঁর জামিনের শুনানি।
আরও পড়ুন : বিরোধিতাকে দমন করতে সন্ত্রাস-বিরোধী আইনের অপব্যবহার কাম্য নয়: বিচারপতি চন্দ্রচূড়
স্ট্যান স্বামীর আইনজীবী আদালতে বলেছেন যে, তাঁর মক্কেল একপ্রকার বিনা চিকিৎসাতেই মারা গিয়েছেন। ৮৪ বছরের জেসুইট যাজক স্ট্যানের আইনজীবী মিহির দেশাই মুম্বই হাইকোর্টকে বলেন, তিনি অসুস্থ ছিলেন। বহু শারীরিক সমস্যা ছিল। কিন্তু তাঁর ওপর নজর পর্যন্ত রাখা হয়নি।
২৮ মে হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক স্বামীকে তালোজা সেন্ট্রাল জেল থেকে বান্দ্রার নবী মুম্বাইয়ের হলি ফ্যামিলি হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। বলা হয়েছিল চিকিৎসা খরচ তাঁকেই দিতে হবে। স্বামীর আইনজীবী বম্বে হাইকোর্টে বলেন, এনআইএ এবং মহারাষ্ট্র কারাদফতরের উদাসীনতার কারণেই স্বামীর এমন পরিণতি হয়। তাদের কারণেই তাঁর চিকিৎসায় বিলম্ব হয়, তিনি সময় মত চিকিৎসা পরিষেবা পাননি।
বারবার বলেছিলেন, তিনি নিরপরাধ। বারবার বলেছিলেন, তিনি অসুস্থ। জেলে থাকলে আর বাঁচবেন না। তবু মেলেনি জামিন। এনআইএ জামিনের বিরোধিতা করে বলেছিল, তাঁর অসুস্থতার যথেষ্ট প্রমাণ নেই। মাওবাদী–যোগসাজশের অভিযোগে গ্রেপ্তার সেই প্রবীণ স্ট্যান স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। সেই মৃত্যুর পরেই একটি মার্কিন সংস্থার রিপোর্ট নিয়ে তুমুল বিতর্ক। সরব হয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার রক্ষা বিষয়ক সংগঠন। আঙুল উঠেছে কেন্দ্রের দিকেই। এর মাঝেই কেন্দ্রের সাফাই, ‘আইনি অধিকার প্রয়োগের জন্য নয়, আইন ভাঙার জন্য’ এই ধর্ম যাজকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি জানিয়েছেন, ‘আইনের বিধি মেনে স্ট্যান স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে এনআইএ।’ তিনি আরও বললেন, ‘তাঁর বিরুদ্ধে আনা চার্জের কারণেই আদালত জামিন দেয়নি। আইনি অধিকার প্রয়োগের জন্য নয়, আইন ভাঙার বিরুদ্ধে ভারত সরকার পদক্ষেপ করেছে। সব পদক্ষেপ আইন মেনেই হয়েছে।’
সমালোচনার মুখ পড়ে বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে এ কথাও জানিয়েছে, যে সমস্ত নাগরিকের মানবাধিকা রক্ষার জন্য ভারত সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যদিও দেশে বিরোধী রাজনীতিক থেকে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম হোক বা রাষ্ট্রপুঞ্জ, কেউই কেন্দ্রের এই বক্তব্য মানছে না। মঙ্গলবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা প্রয়োগ, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সংযোগের কারণে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায় না।’
আরও পড়ুন : করোনা বিধি মেনেই কলকাতার দুর্গাপুজো, গাইডলাইন দিল ফোরাম ফর দুর্গোৎসব