ফোনে আড়ি পাতা তথা পেগাসাস কাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য এবার তিন সদস্য়ের কমিটি গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট। সদস্যদের মধ্যে এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এবং দুই সাইবার বিশেষজ্ঞ থাকছেন বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। রায় দানের সময় একই সঙ্গে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।
ফোনে আড়িপাতা মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অস্বস্তিতে কেন্দ্রের মোদী সরকার। পেগাসাস স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে দেশের নাগরিকদের ব্যক্তি-স্বাধীনতা এবং গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বেছে বেছে সাংবাদিক, রাজনীতিক, সমাজকর্মীদের উপর চরবৃত্তি করা হয়েছে। সাংবাদিকদের ফোনে আড়ি পেতে তাঁদের খবরের সোর্স পর্যন্ত জানার চেষ্টা করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এ ভাবে চরবৃত্তি করা হলে সাংবাদিকদের কাজের মাধ্যমে দেশের নাগরিকরা কোনও দিনই প্রকৃত তথ্য বা খবর জানতে পারবেন না।
Pegasus matter | Supreme Court says there has been no specific denial by Centre in the issue, thus we have no option but to accept the submissions of petitioner prima facie and we appoint an expert committee whose function will be overseen by the Supreme Court. pic.twitter.com/JUoGEaqLzo
— ANI (@ANI) October 27, 2021
কেন্দ্র চেয়েছিল মোদী সরকারের ঠিক করা বিশেষজ্ঞ কমিটিকে দিয়ে পেগাসাস মামলার তদন্ত করাতে। সুপ্রিম কোর্টে এ নিয়ে আবেদন করা হয়। কিন্তু প্রধান বিচারপতি এনভি রমানার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ তা খারিজ করে দিয়েছে। বদলে শীর্ষ আদালতের ঠিক করা বিশেষজ্ঞ কমিটিকে দিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন বিচারপতি আর ভি রবীন্দ্রন। রবীন্দ্রন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। তাঁকে সাহায্য করবেন অলোক জোশী এবং সন্দীপ ওবেরয়।
অলোক জোশী প্রাক্তন আইপিএস অফিসার। তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত অপরাধের তদন্তে প্রচুর সাফল্য এবং অভিজ্ঞতা রয়েছে। সন্দীপ ওবেরয় সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ। এ ছাড়াও থাকছে তিন সদস্যের টেকনিক্যাল কমিটি। তদন্তের কাজে সাহায্য করবে এই কমিটি। প্রফেসর নবীনকুমার চৌধুরি, প্রফেসর প্রবহরণ পি এবং প্রফেসর অশ্বীন অনিল গুমস্তে। তদন্ত শেষ করে ৮ সপ্তাহ পর সুপ্রিম কোর্টের কাছে রিপোর্ট পেশ করতে হবে।
বুধবার রায় ঘোষণার সময় সেই ঘোষণাই করা হয়।প্রধান বিচারপতি বলেন, “কেন্দ্রকে জবাব দেওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও জবাব দেয়নি কেন্দ্র। ব্যক্তি গোপনীয়তার অধিকার রক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে সরকার যা খুশি করতে পারে না। এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের আরও সতর্ক থাকা উচিত।” সঙ্গে যোগ করেন, “শুধুমাত্র সাংবাদিক নয়, সমস্ত নাগরিকের গোপনীয়তা রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। বেশ কয়েকজন আবেদনকারী সরাসরি পেগাসাসের শিকার হয়েছেন।” জর্জ অরওয়েলের উক্তি তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘গোপন রাখতে চাইলে নিজেদের থেকেও গোপন রাখা উচিত’।