সংবাদমাধ্যমের একাংশ যেভাবে সংবাদ পরিবেশন করছে তাতে সাম্প্রদায়িকতার ছোঁয়া রয়েছে। গত বছরের মার্চে দেশে করোনার (Coronavirus) দাপট শুরু হওয়ার সময় তবলিগি জামাত (Tablighi Jamaat) সংগঠনের জমায়েতকে দায়ী করা নিয়ে একটি পিটিশন জমা পড়েছিল শীর্ষ আদালতে। দাবি করা হয়েছে কোভিডকে সাম্প্রদায়িক রং দিচ্ছে বহু সংবাদমাধ্যম। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে দেশের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা বলেন, ”সমস্যাটা হল, এদেশের সব কিছুকেই সাম্প্রদায়িকতার দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে চায় সংবাদমাধ্যমের একাংশ। এটাই সমস্যা। এর ফলে দেশের নামই খারাপ হবে।”
করোনা সংক্রমণ ছড়ানোয় তাবলিঘি জামাতের হাত রয়েছে। এই সংক্রান্ত একাধিক খবর বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। সেই প্রচারের বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতে মামলা ঠুকেছে জমিয়তে উলেমা হিন্দ। এই মিথ্যা খবর রটানোর পিছনে যাদের হাত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার আর্জি জানান হয়েছে সেই মামলায়। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি রামান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘ওয়েব পোর্টালের খবরে কারও হাত থাকে না। তাই সেই খবরে সাম্প্রদায়িক রঙ লাগানোর উদ্দেশ্য থাকে। এটাই সমস্যা।‘
এদিনের শুনানিতে ওয়েব পোর্টালগুলিকেও ভর্ৎসনা করেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর কথায়, ”ওয়েব পোর্টালগুলি কেবল প্রভাবশালী কণ্ঠস্বরের কথাই শোনে। দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো প্রতিষ্ঠান ও বিচারপতিদের বিরুদ্ধে যা খুশি লেখে। ওরা কেবলই প্রভাবশালীদের বিষয়ে উদ্বেগ দেখায়। বিচারপতি, প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষদের নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই। আমাদের অভিজ্ঞতা তাই বলে।”
সামাজিক মাধ্যমের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, ‘ট্যুইটার, ফেসবুক এবং ইউ টিউব বিচারকের প্রশ্নের উত্তর দেয় না। বরং কোনওরকম গ্রহণযোগ্যতা ছাড়াই প্রতিষ্ঠানবিরোধিতায় খবর করে। একমাত্র প্রভাবশালী মহলের কাছেই তারা জবাবদিহি দেয়।‘ উষ্মা প্রকাশ করে বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘আপনি ইউ টিউবে গেলে এমন অনেক ভুয়ো খবর পাবেন। যেগুলো কোনওরকম নজরদারি ছাড়া প্রচারিত। যে কেউ ইউটিউব চ্যানেল খুলে ফেলেছে। ভুয়ো খবর, ওয়েব নিউজ এবং ইউ টিউব চ্যানেল পরিচালনায় কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।‘
এই শুনানিতে কেন্দ্রের পক্ষে আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা বলেন, ‘দেশের সংশোধিত তথ্য-প্রযুক্তি আইন এই ধরনের প্রচার সংশোধনেই ব্যবহার করা হবে।‘