বিহারে (Bihar) এবার করের আওতায় আনা হচ্ছে মন্দিরগুলিকে (Temple)।এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যাচ্ছে, করের আওতায় আনা হচ্ছে এমনকী কোনও পরিবারের ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থাপিত মন্দিরকেও। ‘বিহার স্টেট বোর্ড অফ রিলিজিয়াস ট্রাস্ট’ এই নির্দেশ জারি করার পর থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। নয়া নির্দেশে বলা হয়েছে, ৪ শতাংশ কর দিতে হবে রাজ্যের সমস্ত মন্দিরকে। ইতিমধ্যেই হিন্দুত্ববাদীরা সরব হয়েছেন নীতীশ কুমারের সরকারের বিরুদ্ধে। এমনকী, মুঘল আমলে অমুসলিমদের উপরে চাপানো জিজিয়া করের সঙ্গেও তুলনা করা হচ্ছে এই করকে।
নতুন নিয়মে অনুসারে, বিহার স্টেট বোর্ড অফ রিলিজিয়াস ট্রাস্ট, প্রতিটি সর্বজনীন মন্দিরের জন্য চার শতাংশ করে, কর নির্ধারণ করেছে। প্রতিটি সর্বজনীন মন্দিরকেই বাধ্যতামূলকভাবে তাদের নাম নিবন্ধিত করতে হবে। একবার নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গেল, তারপর থেকে তাদের মোট আয়ের চার শতাংশ করে ট্যাক্স দিতে হবে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বেশ কয়েকটি বাড়ির মন্দিরকেও কর দিতে হবে, বলে অভিযোগ। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তাদের আবাসিক প্রাঙ্গনে নির্মিত হলেও মন্দিরগুলি যদি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়, তাহলে কর দিতে হবে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, যদি কোনও মন্দির কোনও বাড়ির সীমানা প্রাচীরের মধ্যে থাকে এবং সেখানে শুধুমাত্র একটি পরিবারের সদস্যরাই পূজা করেন, তাহলে সেটিকে ব্যক্তিগত মন্দির হিসাবে বিবেচনা করা হবে এবং তাদের কর দিতে হবে না। তবে, যদি মন্দিরটি বাড়ির সীমানা বাইরে থাকে, অথবা সীমানার মধ্যে মন্দির হলেও, সেখানে বাইরের লোকও এসে পূজা দেয়, তাহলে সেই মন্দিরগুলিকে সর্বজনীন বলেই গন্য করা হবে। সেইক্ষেত্রে সেই মন্দিরের মালিকদের কর দিতে হবে।
এই সিদ্ধান্তে হিন্দু ভক্তরা যারপরনাই ক্ষুব্ধ। কারণ, বিহারে আবাসিক প্রাঙ্গনে বেশ কয়েকটি মন্দির গড়ে উঠেছে। সেই মন্দিরগুলিতে ওই বাড়ির বাসিন্দারাই শুধু পূজা দেন তা নয়, বাইরের মানুষও এসে পূজা দিয়ে থাকেন। তবে, টাইমস নাও-এর প্রতিবেদন অনুসারে, বিহার স্টেট বোর্ড অফ রিলিজিয়াস ট্রাস্টের অ্য়াসিস্ট্যান্ট সুপারিনটেনডেন্ট, তুলসায়ন সায়গাল (Tulsayan Saigal) বলেছেন, তাঁরা কোনও কর চাপাননি মন্দিরগুলির উপর। আয়ের ৪ শতাংশ অর্থ সরকার নিচ্ছে বার্ষিক পরিষেবা খরচ হিসাবে।
প্রসঙ্গত, বিহার প্রশাসনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ বিজেপি। আর গেরুয়া শিবিরের শাসনাধীন রাজ্যে মন্দিরের উপরে কর বসানো নিয়ে বিতর্ক এক অন্য মাত্রা পেয়েছে। ‘শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট’-এর এক সদস্য কমলেশ্বর চৌপল এই নয়া করের নির্দেশের কড়া সমালোচনা কর একে জিজিয়া করের সঙ্গে তুলনা করেছেন। প্রসঙ্গত, জিজিয়া কর হল মুঘল আমলে অমুসলিমদের থেকে নেওয়া কর। জনপ্রতি বাৎসরিক এই কর আকবরের আমলে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ‘ষড়যন্ত্রের শিকার শাহরুখ খান’, বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মুখ খুললেন মমতা