মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতদিন না প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, ততদিন মনে হয় না ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত হবে। ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে এই কথাই জানালেন ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দেব। যখন সারা দেশ জুড়ে বিজেপি বিরোধী দলগুলি একসঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন, তখন তৃণমূল সাংসদের এই ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
একদিকে সক্রিয় মৌসুমী বায়ু। আবার তার উপর গত সপ্তাহে নিম্নচাপের জেরে প্রবল বৃষ্টি হয় কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে। আর তার ফলে হু হু করে বেড়েছে নদীগুলির জলস্তর। জল ছেড়েছে DVC। না জানিয়েই ডিভিসি থেকে জল ছাড়া হয়েছে বলেই অভিযোগ। সেই জলেই আপাতত ভাসছে হাওড়ার আমতা, উদয়নারায়ণপুর, হুগলির খানাকুল এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল।
আরও পড়ুন: South Bengal Flood: দক্ষিণবঙ্গে বন্যায় মৃত ১৬, ক্ষতিপূরণ ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
বুধবার দুপুর একটা নাগাদ প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে ঘাটালে পৌঁছন সাংসদ দেব। প্রথমেই মহকুমা শাসকের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। ত্রাণের বন্দোবস্ত এবং উদ্ধারকাজ নিয়ে আলোচনা হয় তাঁদের। বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত না হওয়ায় উদ্ধারকাজে সমস্যা হচ্ছে না বলেই জানান তিনি। ক্ষোভ উগড়ে দেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। তাঁর দাবি, ভোটের সময় বিজেপি (BJP) শীর্ষ নেতৃত্ব রাজ্যে এসে সোনার বাংলা গড়ার কথা বলে। তবে কেন্দ্র সরকার বাংলার কথা ভাবে না। তাই সংসদে আলোচনা সত্ত্বেও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান (Ghatal Master Plan) বাস্তবায়িত হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী না হওয়া পর্যন্ত ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হবে না বলেও মনে করছেন তিনি।
একইসঙ্গে কিছুটা ক্ষোভের সঙ্গেই এলাকার সাংসদ জানান, ‘আমি সাধারণত কারও নিন্দা করি না। কিন্তু আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, যতদিন না দিদি প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, ততদিন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কার্যকর হবে বলে মনে হয় না।’ একইসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ জানান, মানুষকে ভালো রাখার জন্যই রাজনীতি। কিন্তু এখন রাজনীতি অন্য কথা বলে। মানুষের জন্য খুব কম দলই কাজ করে।
এদিন নৌকায় চেপে ঘাটালের অজয়নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের শীলা রাজনগর, হরিদাসপুর এলাকা পরিদর্শন করেন সাংসদ দেব। শীলা রাজনগরের ত্রাণশিবিরে যান তিনি। কথা বলেন দুর্গতদের সঙ্গে। যাঁদের ঘর ভেঙে গিয়েছে, তাঁরা আর্থিক সাহায্য পাবেন বলেও আশ্বাস দেন তিনি। ঘাটাল ব্লকে দুর্যোগে ইতিমধ্যেই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের পরিজনদের পাশে থাকারও আশ্বাস দিয়েছেন দেব। এদিকে, এখনও ঘাটালের ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১০টি জলের তলায়। পুর এলাকার ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টি প্লাবিত। ঘাটাল ব্লকে সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষ জলবন্দি। বুধবারের বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঘাটালের পর দাসপুর ১ নম্বর ব্লকরে রাজনগর, নারাজল গ্রাম পঞ্চায়েত পরিদর্শন করবেন দেব। যেতে পারেন কেশপুরেও।
আরও পড়ুন: হাঁটুজলে দাঁড়িয়ে আমতায় বন্যা দেখলেন মমতা, কথা বললেন দুর্গতদের সঙ্গেও