সেনাবাহিনীতে লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসেই যুগান্তকারী রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এবার শীর্ষ আদালতেই আরও এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের কথা জানাল কেন্দ্র। সেনাবাহিনীতে স্থায়ী কমিশন দিতে এবার মেয়েদেরও ভরতি করা যাবে ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে (National Defiance Academy)। বুধবারই সুপ্রিম কোর্টে সেকথা জানিয়েছে কেন্দ্র।
ভারতের সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলাদের নিয়োগ নিয়ে জট বেশ পুরনো। এতদিন এনডিএ বা নাভাল অ্যাকাডেমিতে মহিলাদের নেওয়া হত না। কারণ সশস্ত্র বাহিনীর স্থায়ী আধিকারিক হিসেবে মহিলাদের অন্তর্ভুক্তি হত না। এই ভেদাভেদ নিয়েই মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলার শুনানিতে বুধবার অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটি আদালতকে বলেন, ‘‘আমার কাছে একটি খুশির খবর আছে। সরকার ও সেনা আধিকারিকরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এ বার থেকে এনডিএ এবং নাভাল অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ শেষে মহিলাদের স্থায়ী কমিশনড আধিকারিক হিসেবে বাহিনীতে নিয়োগ করা হবে। কেন্দ্রের আইনজীবীর কথা শুনে সন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। বিচারপতি এসকে কলের বেঞ্চ বলে, ‘‘সশস্ত্র বাহিনী নিজে থেকে মহিলাদের অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেনে ভাল লাগছে।’’ কেন্দ্রকে সুপ্রিম কোর্ট বলে, এই পদক্ষেপের পর যেন লিঙ্গবৈষম্যের কোনও অভিযোগ না ওঠে তা নিশ্চিত করতে। ২২ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।
গত ১৭ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট এনডিএ-তে মহিলাদের পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেয়। এই মামলার শুনানির দিন সেনার আইনজীবী আদালতকে জানান, এনডিএ-র পরীক্ষায় মহিলাদের শামিল না করা নীতিগত সিদ্ধান্ত। এতে ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি কল। তিনি বলেন, ‘‘এটা যদি আপনাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে তা হলে বলতে বাধ্য হচ্ছি, তা বিদ্বেষমূলক।’’
বুধবার শীর্ষ আদালতে কেন্দ্রের তরফে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটি জানিয়েছেন,”আমি একটা দুর্দান্ত সুসংবাদ দিতে চাই। কেন্দ্র এবং তিন সেনার প্রধানরা মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে মেয়েরা ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি এবং নাভাল অ্যাকাডেমির মাধ্যমে সেনায় স্থায়ী কমিশন পাবে।” এরপরই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এস কে কৌল জানান, “লিঙ্গবৈষম্য নিয়ে সেনাবাহিনীকে আরও কাজ করতে হবে। আমরা খুশি যে সার্ভিস প্রধানেরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এবং আপনারা তাঁদের বোঝাতে পেরেছেন।”
আরও পড়ুন: ‘তৃতীয় ঢেউ এসে গিয়েছে’, উৎসবের মরশুমে বাড়িতেই থাকার অনুরোধ মেয়রের