একাত্তর বছরে পদার্পণ এবং সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রধান প্রশাসক হিসেবে দুই দশক পূর্ণ করাকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনে রেকর্ড সংখ্যক টিকাদানের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে টিকা মজুতের অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা।
শুক্রবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে (১৭ সেপ্টেম্বর) দলের লক্ষ্যই হল, যত বেশি সংখ্যক সম্ভব মানুষকে কোভিডের টিকা দেওয়া। ওই দিনে রেকর্ড সংখ্যক টিকাকরণ যাতে হয়, সেই লক্ষ্য নিয়েছে দল। দলীয় সূত্রের দাবি, দেশ জুড়ে এখন মসৃণ গতিতে টিকাকরণ চালু রয়েছে। সম্প্রতি চোখে পড়ার মতো গতি বেড়েছে তার। তার দৌলতে দেশে সংক্রমণ আগের থেকে অনেকটাই কমেছে। এই কৃতিত্বের হকদার যে শুধু প্রধানমন্ত্রী, সেই বার্তা দিতেই তাঁর জন্মদিনকে রেকর্ড টিকাকরণের জন্য বেছে নিয়েছে দল।
আরও পড়ুন: মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ বেড়েছে ৪৬ শতাংশ, শীর্ষে উত্তরপ্রদেশই
গত দু’সপ্তাহে যে প্রতিষেধকের জোগান আগের তুলনায় বেশ খানিকটা বেড়েছে, তা টিকাকরণের দৈনিক পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। কিন্তু বিরোধী শিবিরের একাংশের প্রশ্ন, ভারতের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশে যেখানে এক দিন আগে কাউকে টিকা দিতে পারলেও সংক্রমণে রাশ টানার ক্ষেত্রে খানিকটা সুবিধা হয়, সেখানে রেকর্ড গড়তে একটি নির্দিষ্ট দিনের জন্য বসে থাকা কেন? যদি আগাম এমন পরিকল্পনা করা যায়, তার মানে তো হাতে টিকা রয়েছে। তা হলে তা আগেভাগে না দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে দেওয়ার যুক্তি কী? এক বিরোধী নেতার প্রশ্ন, ‘‘তবে কি ওই নির্দিষ্ট দিনের জন্য আগাম মজুত করা হচ্ছে প্রতিষেধক? এর আগে আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে (২১ জুন) রেকর্ড গড়ার লক্ষ্যে তার আগের কয়েক দিনে যেমন করা হয়েছিল!’’
ওই দিন থেকেই দেশে ১৮ বছর কিংবা তার বেশি বয়সি সকলের জন্য প্রতিষেধক নিখরচায় দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। টিকা দেওয়া হয়েছিল ৮৫ লক্ষ। তখন অভিযোগ উঠেছিল, ওই রেকর্ড গড়তে তার আগের কয়েক দিন টিকা কিছুটা কম দেওয়া হয়েছিল। রেকর্ডের পরেও ফের ঝিমিয়ে পড়েছিল তার গতি। প্রশ্ন, এ বারও তেমন হবে না তো?
বিরোধীদের দাবি, গোড়া থেকে কেন্দ্রের ভুল নীতির কারণেই টিকাকরণ হয়েছে শ্লথ গতিতে। করোনা যোদ্ধা এবং ৪৫-ঊর্ধ্বদের নিখরচায় টিকা দেওয়ার কথা শুরুতে বলা হলেও, বাকিদের জন্য ওই নীতি ঘোষণায় গড়িমসি করেছে কেন্দ্র। মোট জনসংখ্যার অনুপাতে দু’ডোজ় টিকা পাওয়া মানুষ এখনও যথেষ্ট কম। তার পরেও ‘রেকর্ড’ গড়তে জন্মদিনের জন্য অপেক্ষা করা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীদের অনেকে। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘এ দিনও যেখানে প্রধানমন্ত্রী কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছেন, সেখানে রেকর্ডের জন্য অপেক্ষা কি সাজে?’’
আরও পড়ুন:নির্ভয়া কাণ্ডের ছায়া মুম্বইয়ে, ধর্ষণের পর রড ঢোকানো হল যৌনাঙ্গে, মহিলা সঙ্কটজনক