জগন্নাথ মন্দিরের সিংহদুয়ারের ঠিক সামনে ইমার মঠ। পাঁচ একর জমির ওপর তৈরি সেই মঠই গুপ্তধন সন্ধানের কেন্দ্রস্থল। ২০১১-তে ও ২০২১-এ, পরপর দু’বার এই মঠ থেকে পাওয়া গিয়েছিল সোনা-রূপোর জিনিস। কয়েক কোটি টাকার সম্পদ উদ্ধার হয় সেই সময়। পাওয়া গিয়েছিল অন্তত ৫০০ রূপোর বাট।
জানা যায়, ১৮৬৬ সালে দুর্ভিক্ষের সময় বহু মানুষকে খাওয়ানো হয়েছিল এই মঠে। মনে করা হয় দানস্বরূপ অনেক বহুমূল্য ধাতু পেয়েছিল ওই মঠ। আর সে সবই চাপা আছে মাটির তলায়। শুধু সোনা, রুপো, নাকি আরও অনেক বহুমূল্য রত্নের সন্ধান মিলবে? তা সময়ই বলবে। প্রথমবার অর্থাৎ ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি মঠের তলা থেকে উদ্ধার হয়েছিল ১৮ টন রূপো। ছিল মোট ৫২২ টি রুপোর বাট। সেই সময় ওই পরিমান রূপোর বাজারমূল্য ছিল ৯০ কোটি টাকা। এরপর ফের গুপ্তধন মেলে চলতি বছরে। এপ্রিল মাসে উদ্ধার করা হয় আরও ৪৫টি রুপোর বাট, যার ওজন ৩৫ কেজি।
আরও পড়ুন: রাজস্থান বিধানসভায় পাশ বাল্য বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের জন্য বিল, ‘কালো দিন’ দাবি বিরোধীদের
কী ভাবে মিলল গুপ্তধনের সন্ধান?
১০ বছর আগে অর্থাৎ ২০১১ সালে রুপোর বাট চুরি করার সময় ধরা পড়ে যায় দুই শ্রমিক। মঠে মেরামতির কাজে নিযুক্ত ছিল তারা। রুপো সমেত হাতে নাতে ধরা পড়ে যায় তারা। ধেনকানাল পুলিশ তাদের কাছ থেকে ৩০ কেজি ওজনের দুটি রুপোর বাট উদ্ধার করে। এরপরই শুরু হয় অনুসন্ধান। শুধু কয়েক’শ রুপোর বাটই নয়, পাওয়া গিয়েছিল একটি রুপোর গাছ, একটি রুপোর ফুল। ছিল ১৬টি তলোয়ার, একটি ব্রোঞ্জের গোমূর্তি।
আবার শুরু গুপ্তধনের সন্ধান
গত বৃহস্পতিবার থেকে ফের শুরু হয়ে্যে খননকার্য। জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষের সদস্য, পুরীর কালেকটর, সাব কালেকটর ও পুলিশ সুপার কানওয়ার বিশাল সিং-এর উপস্থিতিতে সন্ধান কাজ চালাচ্ছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ।
ইমার মঠের মহান্তের দায়িত্বে থাকা নারায়ণ রামানুজ দাস এই গুপ্তধনের সন্ধান শুরু করার আর্জ জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন। তাঁর আর্জি আরও উন্নততর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হোক। তিনি জানিয়েছেন বর্তমানে যে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে অনুসন্ধান করা হয় তা ২ ফুটের গভীরে থাকা জিনিস খুঁজে বের করতে পারে না।
কোথা থেকে এল গুপ্তধন?
ইতিহাসবিদ অনিল ধরের ওডিশার দুর্ভিক্ষ নিয়ে লেখা একটি বইতে গুপ্তধনের সূত্রের খোঁজ পাওয়া যায়। অনিল ধর জানান, এই সময় দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। কোথাও খাবার পাওয়া যাচ্ছিল না। ব্রিটিশরা তখন সোনা বার রুপোর বাট দিয়ে খাবার চাইত মঠ-মন্দিরে। তিনি আরও জানান, সেই সময় টাকার কোনও মূল্য ছিল না। টাকা থাকলেও খেতে পাচ্ছিলেন না মানুষ। ওডিশার অন্তত এক তৃতীয়াংশ মানুষের মৃত্যু হয় সেই সময়। তখনই সম্ভবত এই সব রুপো আসে মঠ কর্তৃপক্ষের হাতে।
আরও পড়ুন: পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ চান্নির, ছিলেন রাহুল-সিধু, অনুপস্থিত অমরিন্দর সিং