কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে টুইটারের (Twitter) সংঘাত দিনের পর দিন প্রকট হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদও (Ravi Shankar Prasad) একাধিকবার ভারতীয় আইন মেনে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন মাইক্রোব্লগিং সাইটকে। আর এ বার টুইটারের নিয়মজালে আটকে পড়লেন খোদ তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী। ‘এক ঘণ্টার জন্য আমাকে টুইটার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি’, এমনই অভিযোগ সামনে আনলেন রবিশঙ্কর প্রসাদ। শুক্রবার এই অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, কপিরাইটের নিয়ম ভাঙার অভিযোগে তাঁর অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে ব্লক করে দেয় টুইটার।
কিন্তু টুইটারের এই পদক্ষেপ কেন্দ্রের নয়া ডিজিটাল আইন মেনে করা হয়নি বলেই দাবি তাঁর। তিনি জানিয়েছেন, টুইটারের এই পদক্ষেপের ফলে নতুন ডিজিটাল আইনের ৪(৮) ধারা লঙ্ঘিত হয়েছে। ওই নিয়মানুযায়ী, এমন পদক্ষেপ করার আগে ব্যবহারকারীকে সেই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাতে হবে।
মাস খানেক আগে মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়ে ছিলেন, ভারতের আইনকে সম্মান করতে হবে টুইটারকে। সেই সঙ্গে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে কোনও আপস কেন্দ্রীয় সরকার করবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
Friends! Something highly peculiar happened today. Twitter denied access to my account for almost an hour on the alleged ground that there was a violation of the Digital Millennium Copyright Act of the USA and subsequently they allowed me to access the account. pic.twitter.com/WspPmor9Su
— Ravi Shankar Prasad (@rsprasad) June 25, 2021
প্রসঙ্গত, দেশের নয়া ডিজিটাল আইন নিয়ে টুইটার-সহ সমস্ত শীর্ষস্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থা ও মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম প্রতিবাদ করলেও বাকিরা কার্যত কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে নিয়েছে। একমাত্র টুইটারের সঙ্গেই জারি রয়েছে সংঘাত। ইতিমধ্যেই ভারতে আইনি রক্ষাকবচও হারিয়েছে এই মাইক্রোব্লগিং সাইট।
গত সপ্তাহেই সংসদের তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক স্থায়ী কমিটিতে তলব করা হয়েছিল টুইটারকে। শশী থারুরের (Shashi Tharoor) নেতৃত্বে প্রায় দেড় ঘণ্টা টুইটারের প্রতিনিধিদের একপ্রকার জেরাই করেন কমিটির সদস্যরা। এই ব্যাপারে অগ্রণী ছিলেন কেন্দ্রের শাসক বিজেপির (BJP) সাংসদরা।
কেন্দ্রের সঙ্গে টুইটারের সংঘাত প্রথম নয়। চলতি মাসেই ভারতের তথ্য-প্রযুক্তি নীতি না মানার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মার্কিন সংস্থাকে কড়া বার্তা দেন রবিশঙ্কর প্রসাদ। কেন্দ্রের নয়া আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘ভারতের সংস্কৃতি এর ভৌগলিক অবস্থানের মতোই বিশাল। বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় সহযোগিতায় সামান্য বিষয়ও বড় আকার ধারণ করতে পারে, বিশেষ করে ভুয়ো খবরের ক্ষেত্রে। এই গাইডলাইন আনার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল এই বিষয়টি।’ তিনি টুইটারকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, টুইটার নিজেকে বাক স্বাধীনতার ধ্বজাধারী বলে মনে করতে পারে না। তনি অভিযোগ করেছিলেন, ইচ্ছাকৃত এই গাইডলাইন অনুসরণ করেনি টু্ইটার। একইসঙ্গে ব্যবহারকারীদের সমস্যার সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন।
দেশের তথ্য প্রযুক্তি আইন টুইটার কেন মানছে না, তা নিয়ে কড়া প্রশ্ন করা ছাড়াও তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয় দেশীয় আইনের ঊর্ধ্বে নয় টুইটারের নিজস্ব নীতি। কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদও আগেই টুইটারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, এবার তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট সাময়িক ভাবে বন্ধ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন মোড় নিল কেন্দ্র-টুইটার বিতর্ক।
আরও পড়ুন : উত্তরপ্রদেশেও ‘খেলা হবে’, যোগীকে ধরাশায়ী করতে তৃণমূলের স্লোগান ধার অখিলেশের