দু’হাজার বছর আগেও ফাস্ট ফুডের রমরমা! আগ্নেয়গিরির চাপা ছাই থেকে বেরল দোকান, কী বিক্রি হত জানেন?

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

ফাস্টফুড বলতে এখন চাউমিন, চিলি চিকেন কিংবা গরম গরম তেলেভাজা। কিন্তু ২ হাজার বছর আগেও ফাস্টফুড ছিল। ইতালির প্রাচীন শহর পম্পেইতে (Pompeii) আবিষ্কৃত হয়েছে ২ হাজার বছর আগের চট জলদি খাবারের দোকান। যা দেখে চমকে গিয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। বদলেছে রোমান খাদ্যাভাস সম্পর্কে চলে আসা ধারণাও।

দিন কয়েক আগে, ছাইয়ের নিচে ফসিল হয়ে যাওয়া দু’টি দেহ মিলেছিল। এবার মিলল গোটা একটা ফুড কাউন্টার! অর্থাৎ এমনই একটি স্থাপত্য মিলেছে, যার সঙ্গে আজকের দিনের ফাস্ট ফুডের (Fast food) দোকানগুলোর বিস্তর মিল। তা দেখে তাজ্জব পুরাতত্ববিদরা।

৭৯ খ্রিস্টাব্দে মাউন্ট ভিসুভিয়াসের ছাইয়ের তলায় ঠিক কী কী চাপা পড়েছিল, তার কোনও সঠিক হিসেব মেলে না। তবে পুরাতাত্ত্বিকরা নানা সময়ে উদ্ধার হওয়া নানা নমুনা পরীক্ষা করে বিভিন্ন সময় দু’হাজার বছর প্রাচীন সেই শহরের জীবনযাত্রা সম্পর্কে নতুন নতুন তথ‌্য জানতে পারছেন। তারই একটি রাস্তার ধারের এই খাবারের দোকান। শুধু খাবারের দোকানটুকুই নয়, সেখানে সঙ্গে থাকত পানীয়ের ব‌্যবস্থা। আর যে সমস্ত খাবার মিলত, তা একেবারে হাতে গরম। কিছু পুরনো পোড়া মাটির পাত্র তার সাক্ষ‌্য বহন করছে। পথচলতি মানুষজন সেখানে নিজেদের ক্ষুধাতৃষ্ণা নিবারণ করতেন। ল‌্যাটিন ভাষায় যাকে বলা হত – ‘থার্মপোলিয়াম।’ থার্মো শব্দের অর্থ গরম আর পোলিয়াম মানে বিক্রি।

আরও পড়ুন: OMG! মায়ের মোবাইল থেকে ১১ লক্ষ টাকার গেম কিনল ছ’বছরের শিশু!

উদ্ধার হওয়া নির্মাণটির খণ্ডবিশেষ খতিয়ে দেখে তাঁরা বুঝেছেন, দোকানগুলিতে নিচু কাউন্টারে দোকানদারের বসার ব‌্যবস্থা, আর কাউন্টারের মধ্যে বেশ কয়েকটি গোল পাত্রে খাবার গরম রাখার ব‌্যবস্থা ছিল। এমনকী দোকানের সামনে যে রঙিন সাজসজ্জা ছিল, তারও হদিশ মিলেছে। খাবারে কী ধরনের উপাদান ব‌্যবহার করা হত, তাও সেই ছবির সাহায্যে বোঝানো রয়েছে। ওই দোকান থেকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে হাঁস, শূকর ও ছাগলের হাড়ের অংশ।

পাওয়া গিয়েছে শামুক ও মাছেরও অংশবিশেষ। গুঁড়ো করে রাখা মটরশুঁটিরও হদিশ মিলেছে। যেখান থেকে প্রত্নতত্ত্ববিদদের আশঙ্কা ওয়াইনকে আরও সুস্বাদু করে তুলতে এগুলো যোগ করা হত। যেখান থেকে বিশেষজ্ঞদের ধারণা হয়ত এই দোকানে ওয়াইনের সঙ্গে এদের মাংস পরিবেশন করা হত।

পম্পেই আর্কিওলজিক‌্যাল পার্কের ডিরেক্টর মাসিমো ওসানা বলেন, “নতুন যে তথ‌্য পাওয়া গিয়েছে তা সত্যিই অদ্ভূত আবিষ্কার। এই প্রথম আমরা একটা গোটা  থার্মপোলিয়াম খুঁজে পেলাম।” এর আগে এই অঞ্চল থেকে তাঁরা পেয়েছেন, কারুকার্য করা ব্রোঞ্জের পান পাত্র যা ‘পাতেরা’ নামে পরিচিত, ঝোল-জাতীয় রান্নার জন‌্য ব‌্যবহৃত সেরামিকের জার, পানীয় রাখার ফ্লাস্ক এবং দুই হাতল বিশিষ্ট সরু গলার তরল রাখার পাত্র ‘অ‌্যামফোরা’।

ইতিহাস বলছে, ৭৯ খ্রিস্টাব্দে ইতালির নেপলস শহরের কাছে বিখ্যাত ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরি থেকে হঠাৎই অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়। পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসে গলিত লাভা। সেই লাভা উদ্গীরণের শক্তি নাকি কয়েকটা পরমাণু বোমার সমান, এমনই মনে করেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা।তার তলায় চাপা পড়ে পম্পেই, হারকিউলানিয়াম, অপলন্টিস এবং স্তাবিয়া। এর মধ্যে পম্পেই পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ঠিক কত জন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, তার প্রকৃত সংখ‌্যা এখনও জানা যায়নি।

কিন্তু অন্তত সেই সময়েও অন্তত তেরোশোর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল বলে প্রত্নতত্ত্ববিদদের আন্দাজ। ষোড়শ শতাব্দীতে প্রথম পম্পেইয়ের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার হয়। এরপর সম্প্রতি পম্পেই শহরের সংলগ্ন অঞ্চল থেকে প্রায় দু’হাজার বছর প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার হয়। তার থেকেই মিলছে নানা অবাক করা তথ‌্য।

আরও পড়ুন: পোপ ছবিতে ‘লাইক’ দিতেই ফলোয়ার বেড়ে ৬ লাখ! দাবি সেই বিকিনি মডেলের

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest