বাংলাদেশে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বুধবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। দুই বছর আগে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। তা আমলে নিয়ে গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। আসামিদের মধ্যে ২২ জনকে আজ আদালতে আনা হয়। পলাতক তিনজন। আবরার ফাহাদ নামে ইলেক্ট্রিক ও ইলেক্ট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্রটি কোনও ছাত্র রাজনীতির সাতে পাঁচে থাকত না।
বিভিন্ন বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করত। তেমনই কয়েকটি পোস্টে আবরার আওয়ামি লিগ সরকারের নীতির সমালোচনা করেন। ২০১৯-এর ৬ অক্টোবর রাতে তাঁর ফেসবুক পোস্টের জবাবদিহি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে ছাত্র লীগের এক নেতার ঘরে আবরারকে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে বেশ কিছু ছাত্র লাঠি, ব্যাট ও উইকেট নিয়ে হাজির ছিল। আরবারকে তারা জামাতে ইসলামির ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবিরের কর্মী বলে গালাগাল দিয়ে বেদম মারতে থাকে। মারের চোটে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আরবারকে ছাত্রাবাসের সিঁড়িতে শুইয়ে রাখা হয়। সেখানে জ্ঞান ফিরে আসার পরে ওই ছাত্র জল চাইলে সেটুকুও দেওয়া হয়নি। এর পরে সেখানেই মারা যান আরবার।
আবরারের মা রোকেয়া খাতুন এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।তিনি বলেন, আদালত যে রায় দিয়েছে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি সেই সঙ্গে এ রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি করছি। আমরা চেয়েছিলাম প্রত্যেক আসামিকে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি। যে ২০ জনকে আদালত ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন এতে আইনের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। সেই সঙ্গে অমিত সাহার ফাঁসি চাই। যেদিন এ রায় কার্যকর হবে সেদিন আমরা ভাববো আমরা বিচার পেয়েছি।