মানচিত্র নিয়ে বিবাদের জের। এবার নিজেদের দেশে ভারতীয় চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করল নেপাল। বৃহস্পতিবার থেকে নেপালে দূরদর্শন ছাড়া সমস্ত ভারতীয় খবরের চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নাম গোপন রাখার শর্তে আধিকারিকরা জানিয়েছেন, নেপাল সরকারের তরফে সরকারিভাবে ভারতীয় চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধের কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। ডিসহোম, ডিএসএন, মাই টিভি, মেগা ম্যাক্সের মতো কেবল অপারেটররা নিজেরাই সেই চ্যানেলগুলি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নেপালের প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী ও নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির (এনসিপি) মুখপাত্র নারায়ণ কাজি শ্রেষ্ঠা ভারতীয় মিডিয়ায় তাদের দেশের সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন প্রোপাগান্ডা চালানোর অভিযোগ তুলেছিলেন। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই পদক্ষেপ। বিতর্কিত লিমপিয়াধুরা-কালাপানি-লিপুলেখ অঞ্চল নিয়ে ভারত ও নেপালের সম্পর্ক গত কয়েকদিনে অবনতি হয়েছে। এমনকী সীমান্তেও উত্তেজনা বাড়ছিল।
আরও পড়ুন :২০২১ এর মধ্যে মিলবে করোনা ভ্যাকসিন, জানাল হু
দিনকয়েক আগে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি’র প্রধান উপদেষ্টা বিষ্ণু রামাল বলেছিলেন, ভারতের সংবাদ মাধ্যমে নেপালের সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও আপত্তিজনক খবর দেখানো হচ্ছে। নেপালের প্রধানমন্ত্রী আবার দাবি করেছিলেন, তাঁকে উৎখাত করার জন্য ভারতে গোপন বৈঠক হচ্ছে।
একটি বেসকারি সংবাদ চ্যানেলের ‘অবমাননাকর’ ভিডিয়ো তুলে ধরে নেপালে ভারত বিরোধী ভাবাবেগ আরও উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে ওলি সরকার। সরাসরি না হলেও সেই ভিডিয়োর জন্য নয়াদিল্লিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে কাঠমান্ডু। নেপালের শাসক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রঞ্জন ভট্টরাই একটি টুইটবার্তায় বলেন, ‘নয়া মানচিত্র প্রকাশের পর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে যে খবর আসছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা সম্পূর্ণভাবে এই মনগড়া এবং ভুয়ো রিপোর্টকে বাতিল করে দিচ্ছি। আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বাধীনতার প্রশ্নে নেপালের সরকার এবং মানুষের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানকে সম্মান জানানোর জন্য ওদের (ভারত) আর্জি জানাচ্ছি।’
বস্তুত দলে কোণঠাসা হয়েই ওলি মানচিত্র বদলের সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে জাতীয়তাবাদের ঝড় তোলার কৌশল নিয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে তাৎক্ষণিক লাভ হলেও দলের নেতারা এ বার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকায় সংযোজন করেছেন, ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রতিবেশী বন্ধু দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে কূটনৈতিক বিপর্যয় ঘটানোর। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেস এবং অন্য বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, দলে কোণঠাসা ওলি ভারত-বিরোধিতাকে হাতিয়ার করে দেশে সঙ্কট ও অনাস্থার আবহাওয়া তৈরি করেছেন। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে পার্লামেন্টের বাজেট অধিবেশন স্থগিত করে গণতন্ত্রকে বিপন্ন করে তুলেছেন।
আরও পড়ুন : কাকিমার সঙ্গে ভাসুরপোর প্রেম! জানাজানি হতেই সিঁদুর পরিয়ে জঙ্গলে আত্মঘাতী যুগল