গর্বের মুহূর্ত বাংলার, বাইডেনের প্রশাসনে এবার বাঁকুড়ার সোহিনী

তিনি সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার নিযুক্ত হয়েছেন। বিশ্বের উন্নয়ন, সংঘর্ষ এবং গণহত্যা– এই তিন বিষয় নিয়েই মূলত কাজ করেন সোহিনী।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

আবারও বাঁকুড়ার হাত ধরে বাঙালির জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লাভ। আমেরিকার নব নিযুক্ত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনিক কাজকর্মে সামিল হলেন এই জেলার সোনামুখীর সোহিনী চট্টোপাধ্যায়। তিনি রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের নীতি পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করবেন বলে জানা গিয়েছে। তবে এই প্রথম নয়, আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়কালে নীতি উপদেষ্টা (আন্তর্জাতিক উন্নয়ন) পদে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে এই বঙ্গ তনয়ার।

সম্প্রতি রাষ্ট্রসঙ্ঘে নিযুক্ত মার্কিন (‌ইউএসইউএন)‌ রাষ্ট্রদূতদের তালিকা ঘোষণা করেছে বাইডেন প্রশাসন। সেই তালিকায় নাম রয়েছে সোহিনীর। তিনি সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার নিযুক্ত হয়েছেন। বিশ্বের উন্নয়ন, সংঘর্ষ এবং গণহত্যা– এই তিন বিষয় নিয়েই মূলত কাজ করেন সোহিনী।

রুখা-শুখা লাল মাটির জেলা বাঁকুড়ার সঙ্গে এই সোহিনী চট্টোপাধ্যায়ের যোগের সূত্র খুঁজতে আমাদের একটু পিছনে তাকাতে হবে। ১৯৭৮ সালে স্ত্রী ও শিশু কন্যা সোহিনীকে নিয়ে আমেরিকায় পাড়ি দেন সোনামুখী শহরের মনোহরতলার বাসিন্দা স্বদেশ চট্টোপাধ্যায়। সেখানে নিজের ব্যবসা গড়ে তোলেন। পাশাপাশি বিশেষ সখ্যতা গড়ে ওঠে প্রশাসনিক স্তরেও। প্রবাসী ভারতীয় হিসেবে ইন্দো-আমেরিকা সম্পর্ক মজবুত করার বিশেষ অবদানের জন্য ২০০১ সালে ভারত সরকার স্বদেশ চট্টোপাধ্যায়কে ‘পদ্মভূষণ’ সম্মাণে সম্মানিত করে। ২০০৮ সালে ইন্দো–মার্কিন পরমাণু চুক্তি সই হয়। সেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার নেপথ্যে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন সোনামুখীর স্বদেশবাবু।

আরও পড়ুন: আরএসএস-বিজেপি যোগ! টিম থেকে সোনাল শাহ এবং অমিত জানিকে ছেঁটে ফেললেন বাইডেন

সোহিনীর মা মঞ্জুশ্রী চ্যাটার্জি পেশায় মনস্তত্ত্ববিদ। ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে নর্থ ক্যারোলাইনাতে প্র‌্যাকটিস করছেন। সোহিনীর ভাই সৌভিকও পেশায় চিকিৎসক। জন হপকিনস–এ আইসিইউ বিভাগের মেডিকেল ডিরেক্টর তিনি।

সোহিনী চট্টোপাধ্যায়ের পরিবার সূত্রে খবর, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক স্তরীয় পড়াশুনা সেরে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব অ্যাডভান্স ইন্টারন্যাশান্যাল স্টাডিজ থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে স্নাতকোত্তর পাঠের পাশাপাশি ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়েও পড়াশুনা করেন। এমনকি কলেজে পাঠরতা অবস্থায় মাদার টেরেসা জীবিত থাকাকালীন কলকাতায় এসে ‘মিশনারীজ অব চ্যারিটি’তে কয়েক মাস দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে গিয়েছেন তিনি।

শেষ কবে সোনামুখীর বাড়িতে এসেছিলেন সোহিনী? এই প্রশ্নের উত্তরে জানা গিয়েছে, বছর আটেক আগে এসেছিলেন এখানে। তবে বাঁকুড়ার মাটিতে এখন আর তাঁর পা না দেওয়া হলেও বছর চারেক আগে কলকাতায় এসে ‘ছোটো পিসি’র বাঁশদ্রোণীর বাড়িতে ছিলেন। ‘ঘরের মেয়ে’ সোহিনীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত পরিবারের লোকেরাও। তাঁর পিসি ও সোনামুখী কলেজের অধ্যাপিকা ছায়া মুখোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ওর মন খুব স্পর্শকাতর। পরিবারের কারোর অসুস্থতার খবর পেলে উদগ্রীব হয়ে ওঠে।’

অন্যদিকে সোহিনী চট্টোপাধ্যায় ‘বেগুন পোড়ার পোকা’ জানিয়েছেন ছোটো পিসি মণিকা চক্রবর্তী। বাড়িতে এলে ওর জন্য বেগুন পোড়া চাই-ই-চাই। রসগোল্লা খুব প্রিয় তাঁর। এমনকি ভাইঝিকে তিনি রবীন্দ্র সঙ্গীত ও শাড়ি পরা শিখিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন।

‘ঘরের মেয়ে’ বিশ্বজয়ী সোহিনী চট্টোপাধ্যায়ের সাফল্যে গর্বিত সোনামুখীর মানুষও। তারা এখন উদগ্রীব কবে ঘরে ফিরবেন ‘ঘরের মেয়ে’। সাদরে অভ্যর্থণা করতে করে ঘরের মেয়েকে ঘরে তুলতে অপেক্ষায় রয়েছেন তারা সকলেই।

আরও পড়ুন: অ্যামাজনের সিইও পদ ছেড়ে দিচ্ছেন জেফ বেজোস, ভাবী শীর্ষ কর্তা অ্যান্ডি জ্যাসি

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest