মস্কো : করোনা আতঙ্কের মধ্যেই রাশিয়ায় নতুন করে ত্রাশ সৃষ্টি করেছে এক ধরনের রক্তচোষা মাকড়! এগুলিকে আমরা অবশ্য ‘এঁটুলি’ বলেই চিনি। চামড়ার সঙ্গে (অনেকটা আঁচিলের মতো) এঁটে থাকে বলেই বাংলায় এই পোকা বা কীট ‘এঁটুলি’ নামেই বিশেষ পরিচিত। ইংরেজিতে এই পোকাগুলিকে ‘টিক’ (Tick) বলে। শুদ্ধ বাংলায় যাকে বলে মাকড়। এটি মাকড়শার শ্রেণিভুক্ত একটি কীট।
তিন বছর আগে এই এক পোকার কারণে পৃথিবীতে মৃত্যু হয়েছিল দেড় লক্ষ লোকের। সেই পোকার আতঙ্কই ফিরে এসেছে।রাশিয়ার সার্বিয়া অঞ্চলে সাধারণত নানারকম বিষাক্ত পোকা দেখা যায়। কিন্তু এই পোকা অনেক বেশি শক্তিশালী।
আরও পড়ুন: ভারতে অ্যামাজন, নেটফ্লিক্স, গুগলের অনলাইন পণ্যে কেন বাড়তি শুল্ক ? তদন্ত করবে আমেরিকা
বিষাক্ত এমন যে কামড়ালে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যেতে হচ্ছে। আর করোনা সংক্রমণের মধ্যে হঠাৎ করে এই পোকার আতঙ্কে নাজেহাল হয়েছে রুশ প্রশাসন।এখনও পর্যন্ত সাড়ে আট হাজার মানুষ এই পোকাড় কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে দু’হাজার শিশু।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই রক্তচোষা এঁটুলির কামড়ে এনসেফেলাইটিসের মতো এক রকমের অসুখ হয় রাশিয়ায়। এই এঁটুলির কামড়ে ওই অসুখে আক্রান্ত হয়ে ২০১৫ সালে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল সে দেশে। ঠাণ্ডা কমে তাপমাত্রা বাড়লেই রাশিয়ায় এই রক্তচোষা এঁটুলির আধিক্য দেখা যায়।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এই রক্তচোষা পোকার কারণে ভয়ানক আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। যাকেই কামড়াবে এই পোকাটি, তাঁকে অবশ্য চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কারণ, এটি ত্বক ভেদ করে শিরা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এখনও পর্যন্ত দু’জন মানুষকে এই পোকার কামড়ের ফলে এনসেফালাইটিস নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। এছাড়া ইউরালসে ১৭ হাজার মানুষকে এই পোকা কামড়েছে।
করোনা মোকাবিলায় রাশিয়ায় লকডাউন চলছে। এরই মধ্যে রক্তচোষা পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সবাইকে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কারণ, হাসপাতালগুলিতে শিশুদের ওষুধ শেষ হয়ে গিয়েছে। জুলাইয়ের আগে এই ওষুধ আসছে না। এক মহিলাকে পোকা কামড়ামোয় তাঁকে ইঞ্জেকশন দিতে হবে। কিন্তু ইঞ্জেকশন না থাকায় চারদিন পরেও তাঁর চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি। এই মহিলাকে ইঞ্জেকশন দেওয়া সম্ভব হবে কি না, সেটা চিকিৎসকরাও বলতে পারছেন না।
এই ধরনের পোকা আদতে ঘাসের মধ্যে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকে। কোনও একজন মানুষকে পেলেই এক্কেবারে ছেঁকে ধরে বিষাক্ত এই পোকা। বিশেষজ্ঞদের মতামত, অল্প শীতেই এঁটুলিরা ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে গিয়ে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। এই মুহূর্তে রাশিয়ায় সেই ভাবে ঠান্ডাও নেই।
আরও পড়ুন: গেম চেঞ্জার! ওষুধ প্রয়োগ প্রথম শুরু করছে রাশিয়া