বিতর্কের মধ্যেই প্রতিষেধক উৎপাদনের কাজে হাত দিল রাশিয়া। দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রককে উদ্ধৃত করে শনিবার সে কথা জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স। চলতি মাসের শেষেই ওই প্রতিষেধকের প্রথম ব্যাচ প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং আরডিআইএফ (রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড)-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছে গামালিয়া সায়েন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিয়োলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি। প্রথম উৎক্ষেপিত কৃত্রিম উপগ্রহের নামেই ভ্যাকসিনের নাম রাখা হয়েছে ‘স্পুটনিক ভি’। সেটির উৎপাদন শুরু করায় নিয়ামক সংস্থার তরফে অনুমোদন মিলেছে বলে জানা গিয়েছে।
১১ অগস্ট, মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘোষণার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে স্পুটনিক ৫। ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজটি তাঁরই এক মেয়েকে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন পুতিন। কিন্তু রাশিয়ার ভ্যাকসিন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন একাধিক দেশের বিজ্ঞানীরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রাশিয়ার ভ্যাকসিনে এখনও পর্যন্ত সবুজ সংকেত দেয়নি। কিন্তু অনেক প্রশ্ন সত্ত্বেও স্পুটনিক ৫-এর উৎপাদন শুরু করে দিল মস্কো।
আরও পড়ুন: অনাবাসী ভারতীয়দের মধ্যে ‘কমলা’ আবেগ, কপালে ভাঁজ ট্রাম্পের, বন্ধুর চিন্তায় মোদী
১২ অগস্ট থেকে তৃতীয় পর্যায়ে করোনা প্রতিষেধকের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে রাশিয়ায়। রাশিয়া, পশ্চিম এশিয়া এবং লাতিন আমেরিকা থেকে ২ হাজারের বেশি মানুষের উপর এই প্রতিষেধক প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছিল সে দেশের সরকার। গামালেয়া ইনস্টিটিউটের দাবি, করোনার বিরুদ্ধে অন্তত ২ বছর কর্যকর থাকবে এই ভ্যাকসিন। অর্থাৎ শরীরে একবার স্পুটনিক ভি প্রয়োগ করলে অন্তত ২ বছর করোনা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু পরীক্ষা শুরু হওয়ার তিন দিনের মাথায় প্রতিষেধক তৈরির কাজ শুরু করা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, করোনার প্রকোপে বিশ্ব জুড়ে যে অতিমারি দেখা দিয়েছে, তাতে ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরি নিয়েও প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। তাতে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার চেয়ে নিজেদের প্রতিপত্তি ও মর্যাদা বৃদ্ধিতেই বেশি আগ্রহ রাশিয়ার। তাই প্রতিষেধক তৈরি নিয়ে তাড়াহুড়ো করছে তারা। পরীক্ষা শুরুর তিন দিনের মাথায় কী ভাবে প্রতিষেধক তৈরিতে অনুমোদন মিলল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
তবে সংবাদ সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে প্রতিষেধকের ৫০ লক্ষ ডোজ তৈরি করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে রাশিয়া।